নয়া দিল্লি: ২০২৪ সালের ‘যুদ্ধ’ জিতলে, কে পরবে রাজার সাজ, তাই নিয়েই এখন চলছে লড়াই। সুযোগ পেলেই কংগ্রেসের ‘অকর্মন্যতা’ প্রমাণ করতে উঠে পড়ে লেগেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কংগ্রেসও পাল্টা আক্রমণ করতে পিছিয়ে থাকছে না। লোকসভা নির্বাচনে আগে বিজেপি বিরোধী সব দলগুলিকে, এক ছাতার তলা নিয়ে আসার কথা হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে রাহুল গান্ধী… সবাই সেই কথাই বলছেন। কিন্তু বাস্তব চিত্রটা সম্পূর্ণ আলাদা। বিরোধী ঐক্যের বাঁধন যেন ক্রমেই আলগা হয়ে যাচ্ছে।
সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ তুলেছিলেন, কংগ্রেস নাকি বিজেপি সঙ্গে আপস করেছে। পাল্টা ফোঁস করতে ছাড়েনি কংগ্রেসও। কংগ্রেস নেতা সন্দীপ দিক্ষীতের বক্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যা নিজেই বাজপেয়ী সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেসের আপস করার অভিযোগ, তাঁর মুখে মানায় না।
তৃণমূল সুপ্রিমোকে খোঁচা দিয়ে সন্দীপ দিক্ষীত আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর (মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের সম্পর্ক খুব একটা মধুর নয়। না হলে মোদী সরকারেও দেখা যেত মমতাকে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের কথায়, বিরোধী জোট তৈরি করতে হলে নিঃসন্দেহে তাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছেন মমতা। আবার কংগ্রেসকে বাদ দিয়েও কোনও বিরোধী জোট কতটা সফল হবে তা বলা মুশকিল। দিল্লির আম আদমি পার্টিও বিরোধী জোটের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। অথচ, বাস্তবে দেখা যাচ্ছে এই বিরোধী দলগুলিকে মধ্যে একতা একেবারে কর্পূরের মতো উবে গিয়েছে। সন্দীপ দিক্ষীতের বক্তব্য, “অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একসঙ্গে কাজ করছে। তাঁদের লক্ষ্য কংগ্রেসকে দুর্বল করে দেওয়া। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বাজপেয়ী সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। তাঁর আমাদের শেখানোর দরকার নেই যে কে বিজেপির সঙ্গে আছে আর কে নেই।”
উল্লেখ্য, ১৯৭০ এর দশকে কংগ্রেসের হাত ধরে মমতার রাজনৈতিক যাত্রা শুরু। পরে কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি করেন। ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রে বাজপেয়ী সরকারের আমলে রেল মন্ত্রী ছিলেন মমতা।
সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসকে আক্রমণ শানিয়ে বলেছিলেন, তাদের কোনওভাবেই বিশ্বাস করা যায় না। মমতার বক্তব্য, কংগ্রেস কোনওদিন বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবে না। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বদলে কংগ্রেস এখন তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়ছে বলেও জানিয়েছিলেন মমতা।
উল্লেখ্য কিছুদিন আগেই তৃণমূল নেত্রীকে সরাসরি আক্রমণ শানিয়ে অধীর চৌধুরী বলেন, ‘নিজের পরিচয় দিতে লজ্জা করে না? আপনি দালালি করছেন। আপনি বিজেপির দালাল। আপনি বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন। একবারও ভুল স্বীকার করেছেন?’
তৃণমূলের সঙ্গে আরএসএসের গোপন আঁতাত রয়েছে বলেও দাবি করেন প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি। তাঁর বক্তব্য, ‘মমতার সঙ্গে আরএসএসের সম্পর্ক আছে। নীতিন গড়করি, রাজনাথ সিং, মোহন ভাগবত নিয়ে দিদি কিছু বলেছেন কোনওদিন? মমতার আমলেই আরএসএসের শাখা বেড়েছে। ভবানীপুর আর নাগপুরের ট্রেন চলেছে।’
আরও পড়ুন : Kejriwal at Goa: কর্পূরের মতো উবে যাচ্ছে বিরোধী ঐক্য, গোয়ায় নিজের আখেড় গোছাতে ব্যস্ত কেজরিওয়ালও