জয়পুর: গত সেপ্টেম্বর মাসের পর, রাজস্থান কংগ্রেসে ফের ঘনিয়ে উঠল সঙ্কট। বুধবার (১৬ নভেম্বর), রাজ্যের ইন-চার্জ পদ থেকে ইস্তফা দিলেন অজয় মাকেন। ঠিক কী কারণে তা পরিষ্কার করে জানাননি এই কংগ্রেস নেতা। তবে সূত্রের খবর, গত সেপ্টেম্বর মাসের ঘটনাক্রমই তাঁর পদ ছাড়ার মূল কারণ। যেভাবে, তাঁর তত্ত্বাবধানে থাকাকালীন, রাজস্থানে প্রকাশ্যে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন দলীয় বিধায়করা, তারপর রাজ্যের ইন-চার্জের পদে নতুন কোনও ব্যক্তিকে নিয়োগ করা উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৮ নভেম্বরই দলীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গেকে একটি ১ পৃষ্ঠার ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছিলেন অজয় মাকেন। সেই চিঠিতে তিনি বলেছেন, “যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একজন নতুন ইনচার্জ নিয়োগ করতে হবে। কারণ, আগামী মাসের শুরুতেই রাজস্থানে আসছে ভারত জোড়ো যাত্রা এবং ৪ ডিসেম্বর একটি উপনির্বাচন আছে।” তিনি আরও জানান, গত তিন প্রজন্ম ধরে কংগ্রেসের মতাদর্শে বিশ্বাসী তিনি। সর্বদা রাহুল গান্ধীর অনুগামী হয়ে থাকবেন বলেও জানিয়েছেন।
কী ঘটেছিল সেপ্টেম্বরে? সেই সময় কংগ্রেসের সভাপতি পদ প্রার্থী বাছাই চলছিল। শশী থারুরের বিরুদ্ধে অশোক গেহলটকে প্রার্থী হবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু, কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব স্পষ্ট করে দিয়েছিল দলীয় পদপ্রার্থী হতে গেলে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হবে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর বদলি বাছাই করার জন্য এক বৈঠক ডেকেছিলেন অজয় মাকেন। সেই বৈঠকে যোগ না দিয়ে, ৯০ জন কংগ্রেস বিধায়ক ইস্তফাপত্র হাতে স্পিকারের কাছে গিয়েছিলেন। সাফ জানিয়েছিলেন, অশোক গেহলট ছাড়া আর কাউকে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মেনে নেবেন না। শেষ মুহূর্তে দলীয় সভাপতি নির্বাচনে না লড়ে মুখ্যমন্ত্রী পদেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন গেহলট। ধামাচাপা পড়েছিল ‘বিদ্রোহ’।
সূত্রের খবর, এই ঘটনার পর বিদ্রোহী ৯০ জন বিধায়কের বিরুদ্ধে দলের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশা করেছিলেন অজয় মাকেন। বিশেষ করে অশোক গেহলটের বিকল্প বাছাইয়ের সভার পাল্টা সভা আয়োজন করা তিন বিধায়ক মহেশ জোশী, ধর্মেন্দ্র রাঠোর এবং শান্তি ধারিওয়ালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছিলেন তিনি। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত বিদ্রোহীদের কারোর বিরুদ্ধেই কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। এমনকী, যে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছিলেন অজয় মাকেন, তারও কোনও মূল্য দেওয়া হয়নি। সেই নোটিশের প্রেক্ষিতে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
পাশপাশি, রাজস্থানের বিধায়কদের সঙ্গে সংঘাতও অজয় ম্যাকেনের সরে যাওয়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। গত সেপ্টেম্বর মাসে, বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়করা তাঁর বিরুদ্ধে অশোক গেহলটকে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে, সচিন পাইলটকে সেই আসনে বসানোর চক্রান্ত করার অভিযোগ করেছিলেন। সূত্রের খবর, এই সব অস্বস্তিকর ঘটনার পরই, রাজস্থানের দায়িত্বে আর থাকতে চাননি অজয় মাকেন।