বছর শেষে করোনার নয়া আতঙ্ক বিশ্বজুড়ে। দেশ তথা বিশ্বে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে ওমিক্রন সংক্রমণ। দেশে এখনও অবধি ২০০ জন ওমিক্রনে আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। অন্যদিকে বিশ্বেও শতাধিক দেশে ওমিক্রন সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। আমেরিকাতে প্রথম মৃত্যু হয়েছে ওমিক্রনে। এই পরিস্থিতিতে দেশবাসীকে বিনা প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বের হওয়া নিয়ে সতর্ক করেছে কেন্দ্র। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফেও সতর্ক করে জানানো হয়েছে যে, ডেল্টার থেকেও দ্রুত সংক্রমণ ছড়ায় ওমিক্রন। করোনা ও ওমিক্রন সংক্রান্ত যাবতীয় আপডেট দেখে নিন একনজরে-
গত ৪ ডিসেম্বর দেশে প্রথম ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল। দুই সপ্তাহের মধ্যেই সেই আক্রান্তের সংখ্যা ২০০ স্পর্শ করল। এ দিন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, দেশে মোট ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ২০০-এ পৌঁছেছে। মহারাষ্ট্র ও দিল্লিতে সর্বাধিক সংখ্যক আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে।
সোমবারই লন্ডনে ঘোষণা করে দেওয়া হয় সেন্ট্রাল ট্রাফালগার স্কোয়ারে যে নববর্ষের অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তা বাতিল করা হচ্ছে। প্রায় সাড়ে ৬ হাজার মানুষের জমায়েত হওয়ার কথা থাকলেও, ওমিক্রনের আতঙ্কে শেষ মুহূর্তে সেই অনুষ্ঠান বাতিল করে দেওয়া হয়।
সোমবারই ইউরোপীয় ইউনিয়নের তরফে নোভোভ্যাক্সকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বীকৃত পঞ্চম টিকা, এর আগে ফাইজ়ার, মডার্না, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, জনসন অ্যান্ড জনসনের করোনা টিকা স্বীকৃতি পেয়েছে। বিশ্বের বাকি অংশের তুলনায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন করোনা টিকাকরণ ও বুস্টার ডোজ় প্রয়োগের ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে রয়েছে।
বছর শেষে দাপট ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের। কঠিন পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডিরেক্টর টেড্রোস আধানম গেব্রেয়াসিস সমস্ত দেশকেই সংক্রমণ রোখার প্রস্তুতি নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন। নববর্ষের অনুষ্ঠানও বাতিল করার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, “এখন উৎসব উদযাপন করে, পরে শোকপ্রকাশ করার থেকে পরে উদযাপন করা শ্রেয়। আপাতত আমাদের এই মহামারি শেষ করার দিকেই নজর দিতে হবে।”
আমেরিকায় হু হু করে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এরমধ্যে ৭৩ শতাংশই আবার ওমিক্রনে আক্রান্ত। লাগামছাড়া সংক্রমণের কারণে ওমিক্রনকে “ডমিনেন্ট ভ্যারিয়েন্ট” হিসাবে ঘোষণা করা হলেও, এখনই লকডাউন করতে রাজি নন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সোমবার হোয়াইট হাউসের তরফে এমনটাই জানানো হয়েছে।
দেশে ক্রমশ বাড়ছে ওমিক্রন সংক্রমণ। ইতিমধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা ১৭০ ছাড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েও সুদিনের আশ্বাস দিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য। সোমবার তিনি বলেন, “করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের সঙ্গে লড়তে প্রস্তুত। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ থেকে শিক্ষা নিয়েই সমস্ত রাজ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ ওষুধ ও অক্সিজেন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ৪৮ হাজারেরও বেশি ভেন্টিলেটর বিভিন্ন রাজ্যে বিতরণ করা হয়েছে।”
গোটা দেশের সার্বিক করোনাগ্রাফে বড়সড় পরির্বতন লক্ষ্য করা গিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৩২৬ জন। গতকাল সেই সংখ্য়াটা ছিল ৬ হাজার ৫৬৩ জন। যা গতকালের তুলনায় আরও একটু কমেছে। একদিনে করোনার বলি হয়েছেন ৪৫৩ জন।এদিকে, দৈনিক সক্রিয় রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩ হাজার ১৭০ জন। মোট ৭৯ হাজার ৯৭ জন সক্রিয় রোগী রয়েছেন। করোনাকে হারিয়ে দেশে একদিনে ৮ হাজার ৪৩ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। মোট সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যা ৩ কোটি ৪১ লাখ ৯৫ হাজার ৬০ জন করোনামুক্ত হয়েছেন।
বিস্তরিত পড়ুন: Corona Virus: মৃত্যু বাড়লেও দেশের দৈনিক করোনা গ্রাফে বড়সড় স্বস্তি! ৫ হাজারে নামল সংক্রমণ
দেশে প্রথম ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল কর্নাটকেই। সোমবার সেই রাজ্য়ে নতুন করে আরও ৫ জন আক্রান্তের খোঁজ মিলল। এই নিয়ে রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্য়া বেড়ে দাড়াল ১৯-এ। এমনটাই জানিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।