শ্রীনগর: জম্মু ও কাশ্মীরে ভোট ঘোষণার পরই ফের হামলা চালাল জঙ্গিরা। সোমবার উধমপুর জেলায় জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ, সিআরপিএফ এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের বিশেষ অপারেশন গ্রুপের এক যৌথ টহলদার বাহিনীর উপর এই হামলা হয়। এই হামলায় কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের এক ইন্সপেক্টর শহিদ হয়েছেন। পিটিআই-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, বসন্তগড়ের দুর্গম দুরু এলাকায় বিকাল সাড়ে ৩টে নাগাদ এই হামলা হয়। টহলদার দলটিকে লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি চালায় জঙ্গিরা। স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ এবং সিআরপিএফ জওয়ানরা পাল্টা গুলি চালায়। কিন্তু, জঙ্গিদের গুলিতে গুরুতর আহত হয়েছিলেন সিআরপিএফ-এর ১৮৭তম ব্যাটালিয়নের ইন্সপেক্টর, কুলদীপ সিং। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে, কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়।
এদিকে, যৌথ টহলদার বাহিনীর কড়া প্রতিরোধের মুখে পড়ে সন্ত্রাসবাদীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। নিরাপত্তা বাহিনীর কর্তারা জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে আরও বাহিনী পাঠানো হয়েছে। জঙ্গিদের খুঁজে বের করে নির্মূল করতে অনুসন্ধান অভিযানও শুরু করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাসে জম্মু ও কাশ্মীরে ফের জঙ্গি হানা বেড়েছে। বিশেষ করে জম্মু উপত্যকার জেলাগুলিকে নিশানা করেছে জঙ্গিরা। গত কয়েক মাসে এই জেলাগুলিতে জঙ্গি হামলার মোকাবিলা করতে গিয়ে প্রাণ গিয়েছে বেশ কয়েকজন সেনা সদস্যর। তবে, এদিনের হামলার সময় এই হামলাকে আগের ঘটনাগুলির থেকে আলাদা করে দিয়েছে বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
আসলে, গত শুক্রবারই জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভা নির্বাচনের সূচি ঘোষণা করা হয়েছে। ২০১৪ সালে শেষবার উপত্যকায় বিধানসভা ভোট হয়েছিল। ২০১৯-এ জম্মু ও কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। তারপর, জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভা আসনগুলির সীমানা পুনর্বিন্যাস হয়েছে। সীমানা পুনর্বিন্যাসের পর মোট ৯০টি বিধানসভা কেন্দ্র তৈরি হয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরে। এবার হবে ভোট। ১৮ ও ২৫ সেপ্টেম্বর এবং ১ অক্টোবর – তিন ধাপে ভোটগ্রহণ করা হবে। গণনা হবে ৪ অক্টোবর। ভোট ঘোষণার পরই এই হামলা নিরাপত্তা কর্তাদের কপালে ভাঁজ ফেলতে বাধ্য। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক অবশ্য বলেছে, নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশনকে চূড়ান্ত নিরাপত্তা দেওয়া হবে।
বর্তমানে, জম্মু ও কাশ্মীরে প্রায় ৭০ ব্যাটালিয়ন (একেকটি ব্যাটেলিয়নে থাকে ১০০০ সেনা) কেন্দ্রীয় আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া সীমান্তে নজরদারির জন্য রয়েছে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের বেশ কয়েকটি ব্যাটেলিয়ন। অমরনাথ যাত্রায় নিরাপত্তা প্রদানের জন্য অতিরিক্ত প্রায় ৫০০ কোম্পানি (একেক কোম্পানিতে থাকে ১০০ সেনা সদস্য) আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যকে উপত্যকায় পাঠানো হয়েছে। নির্বাচন পরিতচালনার জন্য তাদের সেখানে রেখে দেওয়া হতে পারে।