চেন্নাই ও হায়দরাবাদ: মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর), দুপুর ১টা নাগাদ অন্ধ্র প্রদেশের নেলোর এবং কাভালির মধ্যে স্থলভাগে আছড়ে পড়ল ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম। পরবর্তী ৩ ঘণ্টা ধরে চলে ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া। সেই সময় ঝড়ের গতি ছিল ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ দিল্লির মৌসম ভবন থেকে জানানো হয়, ল্যান্ড ফল প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়েছে। এরপর এই অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড় আরও উত্তরের দকে এগিয়ে যাবে এবং পরবর্তী কয়েক ঘণ্টায় ব্যাপকভাবে শক্তি হারিয়ে সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে অতি বৃষ্টির জেরে, তামিল নাড়ুতে অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে অন্ধ্র প্রদেশ থেকে এখনও কোনও হতাহতের খবর আসেনি।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের ল্যান্ডফল হওয়ার আগে থেকেই চেন্নাই ও তার আশপাশের বেশ কয়েকটি জেলা জুড়ে প্রবল ঝোড়ে বাতাস এবং বৃষ্টির দাপট দেখা যাচ্ছিল। এর জেরে চেন্নাই ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলির বিস্তীর্ণ অংশ জলের তলায় চলে গিয়েছে। এনএলসি ইন্ডিয়া লিমিটেডের পক্ষ থেকে জল নামাতে ১৬টি বড় মাপের পাম্প পাঠানো হয়েছে চেন্নাইয়ে। এই শক্তিশালী মোটরচালিত পাম্পগুলি সাধারণত, খনিতে জমা জল দ্রুত বের করার জন্য ব্যবহার করা হয়। বন্যা কবলিত এলাকাগুলি মানুষদের উদ্ধার করতে চেন্নাইয়ের রাস্তায় তাদের নৌকা নামিয়েছে ভারতীয় নৌসেনা। কোনও কোনও এলাকায় নৌবাহিনীর কর্মীদের খাবারের প্যাকেট, পানীয় জল বিতরণ করতেও দেখা গিয়েছে।
নৌসেনার পাশাপাশি উদ্ধারও ত্রাণের কাজে হাত লাগিয়েছে বায়ুসেন ও সেনাও। তামুল নাড়ুর আদিয়ার এলাকায় এবং চেন্নাই হারবারের কাছাকাছি এলাকায় আকাশপথে গিয়ে ত্রাণ সামগ্রী ফেলেছে। দুটি হেলিকপ্টার মাধ্যমে ৫০০ প্যাকেট খাদ্য সামগ্রী এবং রেশন পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের জন্য আরও অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছে বায়ুসেনা। তামিলনাড়ুর সাইদাপেটে আটকে পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধার করছে ভারতীয় সেনা। উদ্ধার ও ত্রাণ অভিযানে নেমেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও। দুই রাজ্য মিলিয়ে তাদের মোট ২৭টি দল কাজ করছে। এদিকে চেন্নাই ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতে এই বিপর্যয়ের মোকাবিলার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে ৫০০০ কোটি টাকার সহায়তা চেয়েছে তামিলনাড়ু সরকার।