২৪ ঘণ্টাই জ্বলছে চিতা, সময় নেই খাওয়ার, শ্মশানেই কাটছে রাত-মর্মস্পর্শী কাহিনি দিল্লির শ্মশানকর্মীদের

ঈপ্সা চ্যাটার্জী |

May 07, 2021 | 10:38 AM

শুধু দিল্লি নয়, লাগোয়া উত্তর প্রদেশ থেকেও আসছে করোনা রোগীদের মৃতদেহ। সারা দিন-রাত ধরেই চলছে সৎকার প্রক্রিয়া।

২৪ ঘণ্টাই জ্বলছে চিতা, সময় নেই খাওয়ার, শ্মশানেই কাটছে রাত-মর্মস্পর্শী কাহিনি দিল্লির শ্মশানকর্মীদের
জ্বলছে চিতা। দূরে দাড়িয়ে পরিজনেরা। ছবি:PTI

Follow Us

নয়া দিল্লি: লাগাতার জ্বলছে চিতা। স্নান-খাওয়া ভুলে শুধু একের পর এক চিতা সাজিয়েই চলেছেন তাঁরা। চাপ এতটাই যে বাড়ির পথ ভুলেছেন, শ্মশানেই কোনওমতে কিছুক্ষণের জন্য ঘুমিয়ে রাত কাটাচ্ছেন। এমনটাই যন্ত্রণাদায়ক উঠে এসেছে চিত্র দিল্লি ও পার্শ্ববর্তী শ্মশানঘাটগুলিতে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্মশান কর্মী বা ডোম জানান, সারাদিনে খাবার সময়টুকুও মিলছে না। ভোর পাঁচটায় উঠে আগের দিনের পোড়ানো দেহের ছাই সংগ্রহ করে শ্মশানঘাট পরিষ্কার করা হয়। ১০টা থেকে সৎকার প্রক্রিয়া শুরু হয়। মূলত দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ তাঁদের খাবারের সময় থাকে, কোনওদিন সুযোগ পেলে সেই সময়ই খাবার খেয়ে একটু ঘুমিয়ে নেন তাঁরা। কারণ ফের রাত অবধি একটানা চিতা সাজানো ও দেহ সৎকারের কাজই করতে হয়।

সারাক্ষণ আগুনের সামনে থাকায় করোনা থেকে সুরক্ষা বলতে মুখে রয়েছে কেবল একটি মাস্ক। কারণ অত্যাধিক গরমে প্ল্যাস্টিকের তৈরি পিপিই কিটগুলি গলে যায়। তাই করোনা থেকে বাঁচতে একমাত্র হাতিয়ার মাস্ক। তাও জ্বলন্ত চিতার ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে আসে সবসময়ই।

১৯ বছরের এক যুবক জানায়, গতবছরও করোনা সংক্রমণের সময় রোগীর চাপে গাজিপুর শ্মশানের পাঁচজন কর্মী কাজ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। তবে নিজে দায়িত্ব থেকে পিছু হটলে সাধারণ মানুষ অসুবিধায় পড়বে, এ কথা ভেবেই নিজে পালাননি বলে জানান ওই যুবক।

করোনায় রোগী মৃত্যু কতটা বেড়েছে, তা বোঝাতে ওই কর্মী জানান, বিগত দুই মাসে তিনি কেবল তিনবার বাড়ি গিয়েছেন। ২৪ ঘণ্টাই তাঁদের শ্মশানে উপস্থিত থাকতে হচ্ছে। শুধু দিল্লি নয়, লাগোয়া উত্তর প্রদেশ থেকেও আসছে করোনা রোগীদের মৃতদেহ। মাসে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় করা এই কর্মীরা এখনও টিকা নিতে যাওয়ার সময় পাননি বলেও জানান।

আরও পড়ুন: করোনার উপর বিষফোঁড়া ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’, প্রাণঘাতী এই সংক্রমণের দেখা মিলল দিল্লির হাসপাতালে

Next Article