নয়া দিল্লি: রাজ্যে ক্রমশ বাড়ছে করোনা সংক্রমণ(COVID-19)। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ওমিক্রন (Omicron) সংক্রমণও। ইতিমধ্যেই নৈশ কার্ফু (Night Curfew) সহ একাধিক নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে রাজধানীতে। এবার হাসপাতালগুলিকেও আসন্ন বিপদ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিল দিল্লি সরকার (Delhi Government)। বর্তমানে রাজ্যের অধিকাংশ রোগীই উপসর্গহীন হলেও, আগামিদিনে সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ ধারণ করলে রোগাদের হাসপাতালে ভর্তি হতে যাতে সমস্যা না দেখা দেয়, তার জন্য বেসরকারি হাসপাতালের ৪০ শতাংশ শয্যা “সংরক্ষিত” (Reserve) রাখার নির্দেশ দিল দিল্লি সরকার।
মঙ্গলবারই দিল্লি সরকার ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের তরফে একাধিক নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, করোনা ও ওমিক্রনের দাপটে রাজ্যে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। যে সমস্ত বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমেই শয্যা সংখ্যা ৫০-র বেশি, সেখানের ৪০ শতাংশ শয্যা করোনা রোগীদের জন্য সংরক্ষিত করে রাখতে হবে। আইসিইউ বেডের ক্ষেত্রেও একই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় সংক্রমণের ভয়াল রূপ দেখেছিল রাজধানী। সেই সময় থেকেই দিল্লিতে নির্দিষ্ট সংখ্যক বেড করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছিল। কিন্তু গত বছরের জুন মাস থেকে সংক্রমণ ধীরে ধীরে হ্রাস পাওয়ায় দিল্লি সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, যে সমস্ত বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে শয্যা সংখ্যা ১০০ বা তার বেশি, তারা করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য সংরক্ষিত অক্সিজেনযুক্ত শয্যা ৩০ শতাংশ কমিয়ে দিতে পারে।
এরপর অক্টোবর মাসে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারের তরফে নয়া নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়, করোনা রোগীদের জন্য সংরক্ষিত শয্যার সংখ্যা কমিয়ে ১০ শতাংশ করে দিতে। কিন্তু বিগত দুই সপ্তাহ ধরে ফের একবার রাজ্যে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতেই সংরক্ষিত বেডের সংখ্যা ফের বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ করে দেওয়া হল।
দৈনিক সংক্রমণ ৫ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছলেও এখনই লকডাউন করতে রাজি নয় দিল্লি সরকার। তবে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে একাধিক পরিবর্তন আনা হল পুরনো কোভিডবিধির নির্দেশিকায়। এদিন সকালেই রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া। এরপরই তিনি জানান, এবার থেকে দিল্লিতে সপ্তাহ শেষে কার্ফু জারি করা হচ্ছে। একইসঙ্গে সমস্ত বেসরকারি অফিসে কর্মীর সংখ্যা ৫০ শতাংশ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাকিদের বাড়ি থেকে কাজের সুবিধা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারি কর্মীদের ক্ষেত্রে যারা অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত, তারা বাদে বাকি সকলকে বাড়ি থেকে কাজের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজ্য়ে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতেই জারি করা হয়েছিল হলুদ সতর্কতা। ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে বাস ও মেট্রো চলাচল করবে বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু এই নির্দেশিকার জেরে বাস ও মেট্রো স্টেশনের বাইরে চূড়ান্ত ভিড় হয়, ভাঙচুরও করা হয় বাসে। সেই কারণেই এদিনের সংশোধিত নির্দেশিকায় জানানো হল ১০০ শতাংশ যাত্রী নিয়েই চলবে বাস ও মেট্রো। তবে যাত্রীদের মাস্ক ছাড়া উঠতে দেওয়া হবে না।
হলুদ সতর্কতা অনুযায়ী, রাজ্যে প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা অবধি নৈশ কার্ফু জারি রয়েছে। বন্ধ রয়েছে সিনেমা হল, জিম, স্পা। জোড়-বিজোড় পদ্ধতিতে দোকান খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।