নয়া দিল্লি: এক নাবালিকাকে যদি পরিস্থিতির চাপে সন্তানের জন্ম দিতে হয়, তাহলে এক অবাঞ্ছিত সমস্যা তৈরি হতে পারে। এ কথা বলেই ১৪ বছরের নাবালিকাকে গর্ভপাতের অনুমতি দিল দিল্লি হাইকোর্ট (Delhi High Court)। ভারতীয় আইন অনুযায়ী ২৪ সপ্তাহের পর গর্ভপাত করার অনুমতি দেওয়া হয় না। এ ক্ষেত্রে ২৫ সপ্তাহ হয়ে যাওয়ার পরও নাবালিকার শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে গর্ভপাতের অনুমতি দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি স্বর্ণকান্ত শর্মা। যৌন হেনস্থার (Physical Assault) শিকার হওয়ার পরই ওই নাবালিকা গর্ভবতী হয়ে পড়ে। বিচারপতি উল্লেখ করেন, যেহেতু সন্তানের জন্ম দেওয়ার সঙ্গে মহিলাদের শরীরের সম্পর্ক আছে, তাই প্রত্যেক মহিলারই সে ব্যাপারে নিজস্ব মতামত থাকা উচিত। এই মামলায় ওই নাবালিকা আদালতে বিচারপতিকে বলেছিল যে সে স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা করতে চায়।
২২ পাতার রায়ে বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন, ওই নাবালিকাকে রাজ্য সরকারি স্কুলে ভর্তি করার ব্যবস্থা করতে হবে। টাকার অভাবে ওই নাবালিকার আদালতে যেতে দেরি হয়ে গিয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। হাইকোর্টের রায়ে আরও বলা হয়েছে, পরবর্তীতে ধর্ষণের মামলার ক্ষেত্রে নির্যাতিতার শারীরিক পরীক্ষার সময় তাঁর প্রেগন্যান্সি টেস্ট (গর্ভাবস্থার পরীক্ষা)-ও করতে হবে। যদি নির্যাতিতা প্রাপ্তবয়স্ক হয় ও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে, তাহলে তদন্তকারী অফিসারের একদিনের মধ্যে মেডিক্যাল বোর্ডের সামনে নিয়ে যাওয়া ব্যবস্থা করতে হবে নির্যাতিতাকে। আর নির্যাতিতা অপ্রাপ্তবয়স্ক হতে যথাযথ রিপোর্ট আদালতের সামনে পেশ করতে হবে, যাতে আদালত গর্ভপাতের নির্দেশ দিলে তা করতে দেরি না হয়।
বাবা-মা যখন কাজে বেরিয়ে গিয়েছিলেন, সেই সময়েই নির্যাতনের শিকার হয় ওই নাবালিকা। ভয়েই বাবা-মাকে ৪ মাস ধরে কিছু বলতে পারেনি সে। কিন্তু মেয়ের শারীরিক পরিবর্তন চোখ এড়ায়নি মায়ের। চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতেই সবটা ধরা পড়ে যায়।
গত ২৪ জানুয়ারি মামলাটি আদালতে ওঠে। সেদিনই মেডিক্যাল বোর্ড গঠন হয় আদালতের নির্দেশে। চিকিৎসকেরা জানান, গর্ভপাতে কোনও অসুবিধা হবে না। এক্ষেত্রে গর্ভপাতের বিষয়টাকে মানবাধিকার বলেও উল্লেখ করেন বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘যৌন হেনস্থায় শুধু নাবালিকার শ্লীলতাহানিই হয়নি, তার শরীরে ও মনে আঘাত করা হয়েছে। সে নিজেই একজন নাবালিকা। শিশু সন্তান তার কাছে বোঝার মতো হতে পারে।’