নয়া দিল্লি: ১৯৬৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘নায়ক’ সিনেমার স্বত্বের ‘প্রথম মালিক’ সত্যজিৎ রায়ই। একইসঙ্গে এই সিনেমার চিত্রনাট্যকে উপন্যাস আকারে প্রকাশের অধিকারও একান্তভাবে প্রয়াত চিত্র পরিচালকের হাতেই রয়েছে। সম্প্রতি এক মামলায় এক কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এর আগে দিল্লি হাইকোর্টের একক বেঞ্চও এই একই নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু একক বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিল সিনেমার প্রযোজনা সংস্থা। তবে ডিভিশন বেঞ্চেও ধোপে টিকল না প্রযোজনা সংস্থার আর্জি। একক বেঞ্চের নির্দেশকেই বহাল রাখল বিচারপতি যশবন্ত ভার্মা ও বিচারপতি তুষার রাও গেদেলার ডিভিশন বেঞ্চ। ফলে ‘নায়ক’ সিনেমার চিত্রনাট্যের স্বত্বাধিকার থাকল অস্কারজয়ী সত্যজিৎ রায়ের পরিবারের হাতেই।
উল্লেখ্য, সত্যজিৎ রায়ের নায়ক সিনেমার চিত্রনাট্যের উপর ভিত্তি করে সম্প্রতি একটি উপন্যাস লেখা হয়েছে। সেই বই প্রকাশিত হয়েছে। উপন্যাসটি লিখেছেন ভাস্কর চট্টোপাধ্যায়। আর প্রকাশনা সংস্থা হল হার্পার কলিন্স। আর এই উপন্যাস প্রকাশ ঘিরেই আদালতের দ্বারস্থ হয় নায়ক সিনেমার প্রযোজনা সংস্থা। তাদের দাবি, ১৯৬৬ সালে প্রকাশিত নায়ক সিনেমা চিত্রনাট্যকার সত্যজিৎ রায় হলেও সিনেমাটির কপিরাইট রয়েছে প্রযোজনা সংস্থার হাতেই। অন্যদিকে উপন্যাসটির প্রকাশনা সংস্থার তরফে আবার আদালতে বলা হয়েছিল, উপন্যাসটির জন্য সত্যজিৎ রায়ের পুত্র সন্দীপ রায় এবং রে সোসাইটির থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। এই সংক্রান্ত নথিও দিল্লি হাইকোর্টে জমা দিয়েছিল উপন্যাসের প্রকাশনা সংস্থা।
দিল্লি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এদিন জানিয়েছে, ‘মামলায় আবেদনকারী পক্ষ (সিনেমার প্রযোজক সংস্থা) একবারের জন্যও কোথাও বলেনি যে সিনেমাটির চিত্রনাট্য প্রয়াত সত্যজিৎ রায় ছাড়া অন্য কেউ লিখেছেন। সেক্ষেত্রে স্বত্বাধিকার আইনের ১৭ নম্বর ধারায় অনুযায়ী চিত্রনাট্যের কপিরাইট থাকে একমাত্র যিনি সেটি লিখেছেন তাঁর হাতেই। এক্ষেত্রে তা প্রয়াত সত্যজিৎ রায়ের।’ এর আগে একক বেঞ্চে আর ডি বনসলের প্রযোজনা সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছিল, আর ডি বনসল সত্যজিৎ রায়কে দায়িত্ব দিয়েছিলেন সিনেমাটির চিত্রনাট্য লেখার ও চলচ্চিত্র নির্মাণের। সেক্ষেত্রে স্বত্বাধিকার বনসলদের বলে দাবি করা হয়েছিল মামলায়। সিনেমার কপিরাইট সবসময় বনসলদের হাতেই ছিল, তাও জানানো হয় আদালতে।