নয়া দিল্লি: ছয় বছরের এক শিশুকে অপহরণ, যৌন নির্যাতন এবং হত্যায় দোষী সাব্যস্ত এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল্লির রোহিনীর এক আদালত। গত সপ্তাহেই রবিন্দর কুমার নামে ওই ব্যক্তির সাজা ঘোষণার কথা ছিল। কিন্তু আদালত দোষীর আয় ও সম্পদের প্রতিবেদন না পাওয়ায় তা স্থগিত করা হয়েছিল। দিল্লি পুলিশ তার মৃত্যুদণ্ড চেয়েছিল, তবে বৃহস্পতিবার (২৫ মে) আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল। তবে, সবথেকে বড় কথা মাত্র একটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেও তার বিরুদ্ধে ৩০টির মতো শিশুর সঙ্গে একই অপরাধ করার অভিযোগ রয়েছে। ২০০৮ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ওই শিশুদের সে যৌন নির্যাতন করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ। ২০১৫ সালে দিল্লি শহরতলীর বেগমপুর থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
রবিন্দরের অপরাধের জায়গা দিল্লি হলেও, সে আদতে উত্তর প্রদেশের কাসগঞ্জের বাসিন্দা। ২০০৮ সালে ১৮ বছর বয়সে সে দিল্লিতে এসেছিল। পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, সে পর্নোগ্রাফি এবং মাদকে আসক্ত ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, একটি ঝুপড়িতে থাকত সে। দিনভর কাজ করত, আর হলেই মাদকের নেশায় বুঁদ হয়ে যেত। মাদক সেবনের পরই তার মাথায় শিশুদের ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের ঝোঁক চাপত। সে শিশুদের সন্ধান করতে বের হত। পুলিশের দাবি, শিশুদের খোঁজে কখনও কখনও সে ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত হেঁটে যেত। আবাসনের নির্মাণস্থল এবং বস্তি এলাকাগুলিতে যেত সে। এই এলাকাগুলিতে দরিদ্র পরিবারের শিশুরা ঘোরাঘুরি করত। ওই শিশুদেরই নিশানা করত সে। ১০ টাকার নোট বা চকলেট দেখিয়ে তাদের প্রলুব্ধ করে, শিশুদের সে কোনও নির্জন জায়গায় নিয়ে যেত। সেখানে গিয়ে তাদের যৌন নির্যাতন করার পর হত্যা করত সে।
হত্যার পর, দেহগুলি সে কী করত, তা এখনও পুলিশের অজানা। তবে তারা জানিয়েছে, এক ক্ষেত্রে হত্যার পর শিশুর দেহটি সে সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দিয়েছিল। ৭ বছর ধরে একের পর এক শিশু তার শিকার হলেও, কেউ ঘুনাক্ষরেও টের পায়নি। অবশেষে তাকে ২০১৫ সালে রোহিণীর একটি বাসস্ট্যান্ড থেকে তাকে গ্রেফতার করেছিল দিল্লি পুলিশ। ওই এলাকা থেকে নিখোঁজ এক শিশুর সন্ধানে সিসিটিভি ফুটেজ স্ক্যান করতে গিয়ে রবিন্দরের খোঁজ পেয়েছিল পুলিশ। তবে শুধু দিল্লি নয়, ২০০৮ সালে কেরলের এক ৬ বছর বয়সী শিশুকন্যাকেও সে অপহরণ করেছিল। তারপর তাকে ধর্ষণ করে খুন করে বলে অভিযোগ দিল্লি পুলিশের। সেই মামলায় পার পেয়ে যাওয়ার পরই সে দিল্লি রাজধানী এলাকায় চলে এসেছিল। রাজধানীই হয়ে উঠেছিল তার অপরাধের আঁতুড়ঘর।