নয়া দিল্লি: সোমবার (৩০ মে) বিকালে, দিল্লির আপ সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনকে অর্থ পাচারের দায়ে গ্রেফতার করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। কলকাতার এক সংস্থার সঙ্গে হাওয়ালা লেনদেনে যুক্ত থাকার দায়ে এই মামলায় দায়ের করা হয়েছিল। প্রসঙ্গত, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পাশাপাশি, সত্যেন্দ্র জৈন দিল্লি সরকারের স্বরাষ্ট্র, বিদ্যুৎ এবং পিডবলুডি দফতরের দায়িত্বে আছেন। প্রসঙ্গত, গত এপ্রিলে আয়-ব্যয়ের গড়মিল থাকার কারণে সত্যেন্দ্র জৈনের পারিবার এবং মালিকানাধীন ও নিয়ন্ত্রিত সংস্থাগুলির ৪.৮১ কোটি টাকার সম্পত্তি অস্থায়ীভাবে অ্যাটাচ করেছিল ইডি। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিবাল দাবি করেছিলেন পঞ্জাব নির্বাচনের আগেই সত্যেন্দ্র জৈনকে গ্রেফতার করতে পারে ইডি।
ইডির তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ২০১৫-২০১৬ সালে সত্যেন্দ্র জৈন সরকারী কর্মচারী হিসাবে কাজ করার সময়, তাঁর মালিকানাধীন এবং নিয়ন্ত্রিত সংস্থাগুলিতে হাওয়ালা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ভুয়ো সংস্থাগুলি থেকে ৪.৮১ কোটি টাকা পর্যন্ত ঢুকেছিল। ইডি সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, কলকাতায় হাওয়ালা অপারেটরদের কাছে জৈনের মালিকানাধীন এবং নিয়ন্ত্রিত সংস্থাগুলি থেকে নগদ অর্থ পাঠানো হত। এর বিপরীতেই সত্যেন্দ্র জৈনের সংস্থাগুলিতে ওই অর্থ জমা পড়েছিল। সেই অর্থ ব্যবহার করে দিল্লি এবং আশপাশের এলাকায় জমি কেনা হয়েছিল এবং কৃষি জমি কেনার জন্য নেওয়া ঋণ পরিশোধ করা হয়েছিল।
২০১৭ সালের অগাস্টে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদের মামলায় সিবিআই সত্যেন্দ্র জৈনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার পরই এই তদন্ত শুরু করেছিল ইডি। সিবিআই দাবি করেছিল, ভুয়ো সংস্থাগুলির নাম ব্যবহার করে দিল্লি ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় ৫ বছরে ২০০ বিঘা কৃষি জমি কিনেছিলেন সত্যেন্দ্র জৈন। কোটি কোটি টাকার কালো টাকার লেনদেন করা হয়েছিল। সিবিআই আরও বলেছিল, এই ভুয়ো সংস্থাগুলির নিয়ন্ত্রণ পুরোটাই ছিল সত্যেন্দ্র জৈনের হাতেই। কোনও সংস্থায় তিনি ডিরেক্টর হিসাবে ছিলেন। আবার কোনও সংস্থার এক-তৃতীয়াংশ শেয়ারের মালিক ছিলেন তিনি। আয়কর বিভাগ থেকেও এই লেনদেনগুলির বিষয়ে তদন্ত করা হয়েছিল। আয়কর বিভাগ থেকে কিছু বেনামি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তারা দাবি করেছিল, বেনামি সম্পত্তিগুলির সঙ্গে যোগ রয়েছে সত্যেন্দ্র জৈনের।
সত্যেন্দ্র জৈনের গ্রেফতারির প্রতিক্রিয়ায় দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া বলেছেন, ‘৮ বছর ধরে সত্যেন্দ্র জৈনের বিরুদ্ধে একটি ভুয়ো মামলা চলছে। এখনও পর্যন্ত বহুবার তাঁকে ফোন করেছে ইডি। এর মধ্যে, বহু বছর ধরে ইডি ফোন করা বন্ধ করে দেয় কারণ তারা কিছুই পায়নি। সত্যেন্দ্র জৈন হিমাচল প্রদেশের ইলেকশন ইনচার্জ হওয়ায় এখন তারা আবার শুরু করেছে। বিজেপি হিমাচলে খারাপভাবে হারতে চলেছে। সেই কারণেই আজ সত্যেন্দ্র জৈনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাতে তিনি হিমাচলে যেতে না পারেন। মামলাটি সম্পূর্ণ ভুয়ো হওয়ায় কয়েকদিনের মধ্যেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে।’