নয়া দিল্লি: চাঞ্চল্যকর শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যাকাণ্ডের বিভীষিকার মধ্যেই মঙ্গলবার নয়া দিল্লি থেকেই উঠে এসেছে আরও এক শিউরে ওঠার মতো হত্যাকাণ্ড। ৪৫ বছরের অঞ্জন দাসকে হত্যা করে, তাঁর দেহ খণ্ড-বিখণ্ড করার অভিযোগ উঠেছে তাঁর স্ত্রী পুনম এবং সৎ ছেলে দীপকের বিরুদ্ধে। গত জুন মাসে, রামলীলা ময়দানে তাঁর দেহের ১০টি টুকরো উদ্ধার করেছিল পুলিশ। একটি ব্যাগে ঠাসা ছিল দেহাংশগুলি। আর এরপর এক বিরাট মাপের তল্লাশি অভিযুন চালিয়েছিল পুলিশ, এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের দাবি আরও দেহাংশের সন্ধানে, ওই এলাকার প্রায় ৫০০টিরও বেশি বাড়িতে ঢুকে ঢুকে ফ্রিজ পরীক্ষা করত পুলিশ।
রামলীলা ময়দানের যে স্থান থেকে অঞ্জন দাসের দেহাংশ ভরা ব্যাগগুলি পাওয়া গিয়েছিল, সেই স্থানের পাশেই অবস্থিত কল্যাণপুরীর ব্লক-২০। এই আবাসিক এলাকাতেই প্রাথমিক তল্লাশি চালিয়েছিল পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ৫ জুলাই ওই দেহাংশগুলি পাওয়ার পর থেকেই এই ব্লকের বিভিন্ন আবাসিকের বাড়িতে হানা দিয়েছে পুলিশ। তবে, বাড়ির অন্য কোনও জায়গা নয়, তাদের নজর ছিল ফ্রিজ অর্থাৎ রেফ্রিজারেটরে।
সিকন্দর সিং নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা জানিয়েছেন, “পুলিশ আমার বাড়িতেও হানা দিয়েছিল। আমার ফ্রিজে খাবারদাবার দেখার পর, ওরা আমায় জিজ্ঞেস করেছিল আমার আর কোনও ফ্রিজ আছে কি না। তারা আরও জিজ্ঞেস করেছিল এলাকার কোনও বাড়ি থেকে আমি কোনও খারাপ গন্ধ পেয়েছি কি না। আমি বলেছিলাম, না। ওরা বাড়ির আর কোথাও তল্লাশি করেনি।” তিনি আরও জানিয়েছেন, শুধুমাত্র ২০ নম্বর ব্লকেই ৫০০টিরও বেশি বাড়িতে ফ্রিজে তল্লাশি চালানো হয়। ওই এলাকায় ওই রকম অনেকগুলি ব্লক রয়েছে। এর থেকেই পুলিশের তল্লাশি অভিযানের বিশালতা অনুভব করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন সিকন্দর।
শুধু তিনিই নন, ওই এলাকার আরও অনেকেই তাদের বাড়ির ফ্রিজে তল্লাশির কথা জানিয়েছেন। পারভীন নামে আরেক স্থানীয় বাসিন্দা জানিয়েছেন, তাঁর বাড়িতেও তল্লাশি চালিয়েছিল পুলিশ। পথচারীদের অনেককেই দাঁড় করিয়ে ওই এলাকায় আসার কারণ জানতে চাইত পুলিশ। তবে এলাকার বাসিন্দারা প্রত্যেকেই পুলিশি তদন্তে যথা সম্ভব সহায়তা করেছিল।
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, গত ৩০ মে পাণ্ডবনগরের বাড়িতে হত্যা করা হয়েছিল অঞ্জন দাসকে। তারপর তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে পূর্ব দিল্লির বিভিন্ন এলাকায় দেহাংশগুলি ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ৫ জুন তারিখ থেকে পরের কয়েকদিনে, উরু, করোটি, হাতের অংশ উদ্ধার করেছিল পাণ্ডবনগর থানার পুলিশ। এই বিষয়ে ভারতীয় দণ্ডবিধির আওতায় হত্যা, প্রমাণ লোপাট, মিথ্যা তথ্য প্রদানের অভিযোগে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। চলতি মাসের শুরুতেই শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যা মামলার বিভিন্ন দিক উঠে এসেছিল। তারপর, পুলিশ অঞ্জন দাসের দেহাংশগুলি শ্রদ্ধার কি না, তা খতিয়ে দেখেছিল।