নয়া দিল্লি: গত বছরের জানুয়ারি মাসে দিল্লি হিংসা(Delhi Violence)-এ জড়িত শাহরুখ পাঠান(Shahrukh Pathan)-কে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করল দিল্লি আদালত (Delhi Court)। গত বছরই উত্তর -পূর্ব দিল্লিতে ছড়িয়ে পড়া হিংসার সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় একটি ছবি, তাতে দেখা গিয়েছিল এক পুলিশকর্মীর দিকে বন্দুক তাক করে রয়েছে এক যুবক। প্রথমে ওই যুবকের খোঁজ না পাওয়া গেলেও পরে জানা যায়, অভিযুক্ত যুবকের নাম শাহরুখ পাঠান। এই শাহরুখকেই আশ্রয় দিয়েছিলেন অভিযুক্ত ব্যক্তি। এই নিয়ে দিল্লি হিংসা মামলায় দুইজনকে দোষী ঘোষণা করা হল।
বেশ কয়েকদিন গায়েব থাকার পর উত্তর প্রদেশ (Uttar Pradesh) থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল শাহরুখ পাঠানকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে যে হিংসার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, সেই সময়ই শাহরুখ পাঠান নামক ওই যুবক দিল্লি পুলিশের হেড কন্সটেবল দীপক দাহিয়ার দিকে বন্দুক তাক করেছিল খুন করার উদ্দেশ্যে। বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই ছবি ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পরই পালিয়ে যান শাহরুখ। ৩ মার্চ উত্তর প্রদেশের শামলি জেলা থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারির পরই শাহরুখ পাঠান নিজের অপরাধ স্বীকার করে নেয়। পুলিশের দাবি, শাহরুখ দিল্লি থেকে উত্তর প্রদেশে পালিয়ে গিয়ে, সেখানে কালিম আহমেদ নামক এক ব্যক্তির বাড়িতেই আশ্রয় নিয়েছিল। দুইজনের ফোনের লোকেশন পরীক্ষা করেও সেই প্রমাণই মিলেছে।
গত ৭ ডিসেম্বর দিল্লি হিংসা মামলার শুনানিতে অতিরিক্ত সেশন আদালতের বিচারপতি অমিতাভ রাওয়াত সাহরুক পাঠান সহ চার যুবককে খুনের চেষ্টা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হিংসা ছড়ানো, হামলা, বেআইনিভাবে জমায়েত, ভারতীয় দণ্ডবিধি ও অস্ত্র আইনের অধীনে সরকারি কর্মচারীকে নিজের দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করেন।
একইসঙ্গে অভিযুক্ত কলিম আহমেদকেও ভারতীয় দণ্ডবিধির ২১৬ ধারায় অভিযুক্ত শাহরুখ পাঠানকে লুকাতে সাহায্য করা ও আশ্রয় দেওয়ার অপরাধে দোষী বলে সাব্যস্ত করা হয়। এই ধারায় সাত বছর অবধি জেল ও জরিমানা হতে পারে। আগামী ১৬ ডিসেম্বর আদালত দুই পক্ষের বক্তব্য শুনে অভিযুক্তদের সাজার মেয়াদ ঘোষণা করবে।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের (Citizenship Amendment Bill) বিরোধিতা করে ২০১৯ সালের শেষভাগ থেকেই দিল্লিতে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল, শাহিনবাগে অবস্থান বিক্ষোভও চলেছিল কয়েক মাস ধরে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আইন সমর্থনকারী ও বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষকে কেন্দ্র করেই গোটা উত্তর-পূর্ব দিল্লি জুড়ে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। ওই ঘটনায় কমপক্ষে ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল এবং ৭০০-রও বেশি মানুষ আহত হয়েছিল।