Serial Killer: ট্যাক্সিতে উঠে চালকের সঙ্গে ভাব জমিয়েই সারত ‘কাজ’, ২৪ বছর পর সামনে এল নৃশংস ঘটনা
Serial Killer: পুলিশ জানিয়েছে, বছর আটচল্লিশের অজয়ের বাড়ি দিল্লিতে। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময়ই স্কুল যাওয়া বন্ধ করে দেন। পরে তিনি চলে যান উত্তর প্রদেশের বরেইলিতে। সেখানে দুই ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব হয়। ধীরে ধীরে অপরাধ জগতে প্রবেশ ঘটে তাঁদের।

নয়াদিল্লি: ২৪ বছর ধরে খুঁজে বেড়াচ্ছিল পুলিশ। অবশেষে দিল্লি পুলিশের জালে ধরা পড়লেন এক সিরিয়াল কিলার। ধৃতের নাম অজয় লাম্বা। আপাতত তাঁর বিরুদ্ধে চারটি খুন ও চুরির মামলা রয়েছে। ট্যাক্সি চালকদের খুন করে গাড়ি চুরি করতেন তিনি। তবে পুলিশের অনুমান, আরও একাধিক অপরাধে জড়িত বছর আটচল্লিশের ধৃত এই ব্যক্তি।
কীভাবে খুন ও চুরি করতেন অজয়?
পুলিশ জানিয়েছে, উত্তরাখণ্ডে যাওয়ার কথা বলে ট্যাক্সি ভাড়া করতেন অজয়। চালকের সঙ্গে ভাব জমাতেন। মাঝপথে সুযোগ বুঝে চালককে কিছু খাইয়ে অচৈতন্য করে ফেলতেন। তারপর খুন করতেন। এরপর দেহ কোথাও ফেলে দিয়ে গাড়ি নিয়ে নেপাল সীমান্তে চলে যেতেন। সেখানে গাড়ি বিক্রি করে দিতেন। পুলিশের অনুমান, এই খুন ও চুরিতে সহযোগিতার জন্য অজয়ের সঙ্গে আর একাধিক ব্যক্তি যুক্ত ছিলেন। ২০০১ সালে দিল্লি, উত্তর প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের একাধিক ট্যাক্সি চালককে টার্গেট করেন অজয়।
দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্র্যাঞ্চের ডেপুটি কমিশনার আদিত্য গৌতম বলেন, “অভিযুক্ত ব্যক্তি একজন নৃশংস খুনি ও চোর। চারজনকে নৃশংসভাবে খুন ও চুরির মামলায় তিনি জড়িত। ২০০১ সালে দিল্লি, উত্তর প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডে একাধিক ট্যাক্সি চালককে তিনি ও তাঁর সঙ্গীরা টার্গেট করেছিলেন। ট্যাক্সি ভাড়া করার পর চালককে খুন করে মৃতদেহ পার্বত্য অঞ্চলের কোনও দুর্গম জায়গায় ফেলে দিতেন।”
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত চার ট্যাক্সি চালকের মধ্যে একজনেরই মৃতদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এর আগে এই গ্যাংয়ের ২ সদস্যকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। কিন্তু, অজয়ের নাগাল কোনওমতেই পাচ্ছিল না। ২৪ বছর পর দিল্লি পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করল।
কে এই অজয় লাম্বা?
পুলিশ জানিয়েছে, বছর আটচল্লিশের অজয়ের বাড়ি দিল্লিতে। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময়ই স্কুল যাওয়া বন্ধ করে দেন। পরে তিনি চলে যান উত্তর প্রদেশের বরেইলিতে। সেখানে দুই ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব হয়। ধীরে ধীরে অপরাধ জগতে প্রবেশ ঘটে তাঁদের। ওই দুই ব্যক্তির নাম ধীরেন্দ্র ও দিলীপ নেগি। পুলিশ জানিয়েছে, খুন ছাড়াও চুরি ও অবৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগ রয়েছে অজয়ের বিরুদ্ধে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৮ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত নেপালে ছিলেন অজয়। পরে পরিবার নিয়ে উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনে চলে আসেন। এক বিবৃতিতে পুলিশ জানিয়েছে, অনেক বছর ধরেই অজয়ের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছিল তারা। ২০২০ সালে ওড়িশা থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গাঁজা পাচারে জড়িয়ে পড়েন অজয়। ২০২১ সালে দিল্লিতে মাদক পাচারের অভিযোগে তাঁকে ধরেওছিল পুলিশ। আবার ২০২৪ সালে ওড়িশায় এক সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় ধরা পড়েছিলেন। কিন্তু, জামিনে ছাড়া পেয়ে যান। পুলিশ বুঝতে পারেনি, ২০০১ সাল থেকে ট্যাক্সি চালকদের খুনের মামলায় যে মূল অভিযুক্তকে তারা খুঁজছে, সে এই দুটি মামলায় জামিন পেয়েছে। অবশেষে ২৪ বছর পর ওই চার ট্যাক্সি চালককে খুনের মামলায় গ্রেফতার করা হল মূল অভিযুক্ত অজয়কে।





