নয়া দিল্লি: ভাড়াটের ঘরে ক্যামেরা! গোপনে রেকর্ড করছিলেন সব। স্নানঘর ও বেডরুমে লুকিয়ে রাখা ক্যামেরা দিয়েই সর্বক্ষণ নজর রাখতেন, জানতেন গোপন সব কিছু। কিন্তু ভাড়াটেরও নজর এড়াল না। বাড়ি মালিকের সন্দেহজনক আচরণই ফাঁস করে দিল তাঁর কুকীর্তি। ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে ৩০ বছরের এক যুবককে।
জানা গিয়েছে, ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য দিল্লির শাকারপুরে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন উত্তর প্রদেশের এক যুবতী। যে ঘরে যুবতী থাকতেন, তার উপরের তলে বাড়ি মালিকের স্ত্রী ও ছেলে থাকতেন। তাদের ভাল ব্যবহার, বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণেই ভরসা করেই যুবতী বাড়ি যাওয়ার সময় চাবি দিয়ে গিয়েছিলেন।
উত্তর প্রদেশ থেকে ফেরার পরই যুবতী হঠাৎ কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করেন। প্রথমে গুরুত্ব না দিলেও, তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনক গতিবিধি হতেই ‘লিঙ্কড ডিভাইস’ চেক করেন। দেখেন যে একটি অজানা ল্যাপটপের সঙ্গে তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ লিঙ্ক দেখাচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গেই তিনি ল্যাপটপ থেকে লগ আউট করে দেন।
এই ঘটনার পরই তাঁর সন্দেহ হয় যে কেউ নজর রাখছে। বাড়ি তন্ন তন্ন করে খোঁজে, তখনই নজরে আসে যে বাথরুমে লাগানো লাইট বাল্বটি একটু ব্যাঁকা দেখাচ্ছে। খুলতেই দেখেন, ভিতরে ক্যামেরা। এক মুহূর্তও নষ্ট না করে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে ফোন করেন যুবতী। পুলিশ এসে ফের তল্লাশি চালায়। এবার যুবতীর বেডরুমের লাইট বাল্ব হোল্ডারের ভিতর থেকেও ক্যামেরা বের হয়।
পুলিশ ওই যুবতীকে প্রশ্ন করে যে তাঁর বাড়িতে কাদের যাতায়াত ছিল। যুবতী জানান যে প্রায়সময়ই তিনি বাড়ি মালিকের ঘরে চাবি দিয়ে যেতেন। এরপরই পুলিশ বাড়ি মালিকের ছেলেকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত স্বীকার করে নেয় যে তিন মাস আগে যুবতী যখন বাড়ি গিয়েছিলেন, সেই সময় তাঁর ঘরে ঢুকে বেডরুম ও বাথরুমে ক্যামেরা লাগিয়ে আসে। ক্যামেরাগুলিতে মেমরি কার্ড ভরা ছিল। যখন মেমরি ফুল হয়ে যেত, তখন বিদ্যুতের কাজের অছিলায় ঘরে গিয়ে সেই রেকর্ডিং নিজের ল্যাপটপে ট্রান্সফার করে, ফাঁকা চিপ লাগিয়ে আসত।
পুলিশ অভিযুক্তের কাছ থেকে দুটি ল্যাপটপ উদ্ধার করেছে, যার মধ্যে যুবতীর একাধিক নগ্ন ভিডিয়ো পাওয়া গিয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার অধীনে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।