সরকারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে ৫৮টিআবেদনের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে
নয়া দিল্লি: ২০১৬ সালের নোট বাতিলের তিনটি প্রধান উদ্দেশ্য ছিল – ভুয়ো টাকা, কালো টাকা এবং সন্ত্রাসবাদে অর্থ জোগান প্রতিহত করা। গত শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টে এই তিন সমস্যাকে মহাভারতের জরাসন্ধের সঙ্গে তুলনা করেছেন অ্যাটর্নি-জেনারেল আর বেঙ্কটরমানি। কেন্দ্রের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে একগুচ্ছ আবেদনের ভিত্তিতে হওয়া মামলার শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চে। সেখানেই বেঙ্কটরমানি জানান, জরাসন্ধকে টুকরো টুকরো না করা হলে, সে সর্বদা জীবিত থাকে। সেই রকমই, ভুয়ো টাকা, কালো টাকা এবং সন্ত্রাসবাদে অর্থ জোগানের মতো তিনটি মন্দ বিষয়কে টুকরো টুকরো করা আবশ্যিক ছিল।
অ্যাটর্নি-জেনারেল জানান, মন্দের মোকাবিলা এবং তা করতে গিয়ে সাধারণ মানুষের সামনে যে অসুবিধাগুলি তৈরি হবে, এই দুই দিকের মধ্যে ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করেছিল সরকার। আদালতকে তিনি আরও জানান, সাধারণ মানুষের কষ্ট ছিল ক্ষণিকের। ভুয়ো টাকা, কালো টাকা এবং সন্ত্রাসবাদে অর্থ জোগানের মতো সমস্যাগুলি রাষ্ট্রের সামনে যে চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছিল, তা ছিল অনেক বড়। তাসত্ত্বেও তাঁর মতে সরকার দুই বিষয়ের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে অনেকাংশে সফল হয়েছে।
ভারতে ২০১৬ সালের আগে আরও দু’বার নোট বাতিল হয়েছিল – ১৯৪৬ এবং ১৯৭৮ সালে। সেই দুই সময়ের কথা উল্লেখ করে বেঙ্কটরমানি জানান, ৮ নভেম্বরের বিজ্ঞপ্তিটি পরবর্তীকালে সংসদে আইনি বৈধতা পেয়েছে। অর্থাৎ, বিষয়টি নিয়ে সংসদে কার্যকর আলোচনা হয়েছে। কাজেই এই ক্ষেত্রে সরকার তার প্রদত্ত ক্ষমতার অতিরিক্ত ব্যবহার করেনি। কিন্তু আবেদনকারীদের পক্ষের আইনজীবী পি চিদম্বরম পাল্টা যুক্তি দেন, আগের দুইবারের নোটবাতিলের সঙ্গে এবং ২০১৬ সালের নোট বাতিলের পার্থক্যটা বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সেটা বুঝলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে যে, কেন সরকার এক্তিয়ার বহির্ভূত কাজ করেছে। অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, আদালত সংসদীয় পদ্ধতি ও অনুশীলন এবং সংসদের ক্ষমতার প্রয়োগের বিষয়ে কোনও পরামর্শ দিতে পারে না।