নয়া দিল্লি: ২০১৬ সালের নোট বাতিল ছিল একটি সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত। জাল নোট, সন্ত্রাসবাদে অর্থ জোগান, কালো টাকা এবং কর ফাঁকির মোকাবিলার একটি বৃহত্তর কৌশলের অংশ ছিল সেই সিদ্ধান্ত। বুধবার (১৬ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্টে একটি হলফনামা দিয়ে জানালো কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্র আরও জানিয়েছে, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে বিশদে আলোচনার পরই পুরোনো ৫০০ টাকা এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সেই সিদ্ধান্তের প্রয়োগের আগেই এই বিষয়ে সমস্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল।
নোট বাতিলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। তারই জবাবে এই হলফনামা জমা দিয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় সরকার বলেছে, কালো নোট, সন্ত্রাসবাদে অর্থের জোগান, কালো টাকা এবং কর ফাঁকির মতো সমস্যাগুলির মোকাবিলা করার পাশাপাশি, নোট বাতিল ছিল একটি ধারাবাহিক পরিবর্তনশীল আর্থিক নীতিগত পদক্ষেপগুলির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। হলফনামায় আরও বলা হয়েছে, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কেন্দ্রীয় পরিচালন পর্ষদের বিশেষ সুপারিশ মেনেই নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আরবিআই-এর পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্তের বাস্তবায়নের জন্য একটি খসড়া পরিকল্পনার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল।
কেন্দ্র আদালতে আরও জানিয়েছে, নোট বাতিলের কারণে জনগণের দুর্ভোগ কমানোর জন্যও ব্যাপক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। বাস, ট্রেন এবং বিমানের টিকিট বুকিং, হাসপাতালে ভর্তি, এলপিজি সিলিন্ডার কেনার মতো কয়েকটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে লেনদেনের জন্য বাতিল নোটগুলি ব্যবহারের ছাড় দেওয়া হয়েছিল। কেন্দ্র আরও দাবি করেছে, নোট বাতিলের ফলে ব্যবসা করার খরচ কমেছে, আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ সহজতর হয়েছে এবং অনানুষ্ঠানিক ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের বিকৃতি দূর হয়েছে।
২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর পুরোনো ৫০০ টাকা এবং ১০০০ নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে ৫৮টি আবেদন জমা পড়েছিল। এই সকল আবেদনের শুনানি করছে বিচারপতি এস আব্দুল নাজির, বিআর গাভাই, এএস বোপান্না, ভি রামাসুব্রহ্মণ্যম এবং বি.ভি. নাগারত্নের সাংবিধানিক বেঞ্চ। গত ৯ নভেম্বরই সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা দেওয়ার কথা ছিল কেন্দ্রের। কিন্তু, ওই দিন অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটরমানি জানিয়েছিলেন কেন্দ্র হলফনামাটি প্রস্তুত করে উঠতে পারেনি। তিনি এক সপ্তাহ সময় চেয়েছিলেন। বিচারপতি নাগারত্ন বলেছিলেন, সাধারনত সাংবিধানিক বেঞ্চ এভাবে শুনানি মুলতুবি রাখে না। এটা শীর্ষ আদালতের জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর। পরবর্তী শুনানি হওয়ার কথা ২৪ নভেম্বর।