ওড়িশা: গর্ভে থাকাকালীন শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণ করা বেআইনি। আর সেই কাজ করতে গিয়েই ধরা পড়লেন ১৩ জন। একজন আশাকর্মীই এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত। এই ঘটনার জেরে শুক্রবার ওড়িশা পুলিশ ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে সেটা নির্ধারণ করার একটা চক্র চালাচ্ছিল ওই ১৩ জন। আর কেউ এর সঙ্গে যুক্ত ছিল কি না, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। ওড়িশার বেরহামপুর পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, শুধু লিঙ্গ নির্ধারণই নয়, গর্ভে মেয়ে আছে ধরা পড়লে গর্ভপাতের ব্যবস্থাও করা হত। গত কয়েক বছর ধরে এই কাজ করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ।
যাঁরা ধরা পড়েছে তাঁরা হলেন, দুর্গা প্রসাদ নায়েক, অক্ষয় দলাই, হরি মোহন দলাই, রিনা প্রধান, রবীন্দ্রনাথ সতপথি। তাঁরা সবাই দুর্গা প্যাথোলজি নামে একটি ক্লিনিকে কাজ করতেন। এ ছাড়াও ওই দলে রয়েছেন কালী চরণ বিষয়ী, ভাবনগর ছক, সুশান্ত কুমার নন্দ, পদ্ম চরণ ভুঁইয়া, সুমন্ত কুমার প্রধান, ধবলেশ্বর নায়ক, মাইলাপুরি সুজাতা। এঁরা সবাই কোনও না কোনও ক্লিনিকের সঙ্গে যুক্ত বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশ একটি আল্ট্রাসাউন্ড মেশিনও উদ্ধার করেছে। এ ছাড়াও পাওয়া গিয়েছে আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করার জেল, ১৮ হাজার ২০০ টাকা ও একটি মোবাইল ফোন। বেরহামপুরের পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, ওই পোর্টেবল আল্ট্রাসাউন্ড মেশিন ভারতে অনেক দিন আগেই নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছে। আর সেটাই এই চক্রে ব্যবহার করা হচ্ছিল। ল্য়াবের মালিক থেকে শুরু করে হাসপাতাল, ক্লিনিক সবাই যুক্ত ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
অন্তত ২-৩ বছর ধরে এই কাজ চলছিল বলে জানা গিয়েছে। গ্রাম থেকে মহিলাদের নিয়ে আসতেন অভিযুক্তরা। তারপর চলছিল লিঙ্গ নির্ধারণের কাজ। রিনা প্রধান নামে ওই আশাকর্মী গত বৃহস্পতিবারই নিজের গ্রাম থেকে দুই মহিলাকে নিয়ে এসেছিলেন। তাঁদের গর্ভস্থ সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণ করার পর কমিশন পান রিনা। বাকিরা বিভিন্ন ক্লিনিকে কাজ করছিলেন। ওই দিন তাঁদের হাতেনাতে ধরে পুলিশ। এই জাল আর কতদূর ছড়িয়ে রয়েছে, তার তদন্ত করছে পুলিশ।