নয়া দিল্লি: পঞ্চায়েত স্তরে আর্থিক দুর্নীতি ঠেকাতে বড় সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় সরকার। দেশের সব পঞ্চায়েতে বাধ্যতামূলক হতে চলেছে ডিজিটাল লেনদেন। এই মর্মে দেশের সব রাজ্যের মুখ্য সচিবদের চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রক। চলতি বছরের ১৫ই অগস্টের পর থেকে, উন্নয়নমূলক কাজ হোক বা রাজস্ব সংগ্রহ – পঞ্চায়েত স্তরের কোনও কাজে নগদ লেনদেন করা যাবে না। সার্ভিস প্রোভাইডারদের সঙ্গে দেশের প্রত্যেকটি পঞ্চায়েতকে বৈঠক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার (৩০ জুন), এই বৈঠক করতে হবে। ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে এই ব্যবস্থা চূড়ান্ত করতে হবে। ইউপিআই লেনদেনে সক্ষম হওয়ার পর, প্রত্যেক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বা সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সাংসদ বা বিধায়কদের উপস্থিতিতে, সেই পঞ্চায়েতগুলিকে ডিজিটাল লেনদেনে সক্ষম বলে ঘোষণা করা উচিত বলে জানিয়েছে পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রক।
পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রকের সচিব, সুনীল কুমার জানিয়েছেন, প্রায় ৯৮ শতাংশ পঞ্চায়েতে ইতিমধ্যেই ইউপিআই লেনদেন শুরু হয়েছে। সংবাদ সংস্তআ পিটিআই-কে তিনি বলেছেন, “পাবলিক ফিনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এর মাধ্যমে প্রায় ১.৫ লক্ষ কোটি টাকার অর্থপ্রদান করা হয়েছে। পঞ্চায়েতগুলিতে অর্থপ্রদান এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতেই করা হচ্ছে। চেক এবং নগদে অর্থপ্রদান প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছে। এখন প্রায় সব পঞ্চায়েতেই ডিজিটাল পেমেন্ট শুরু হয়ে গিয়েছে। আমরা ইতিমধ্যেই প্রায় ৯৮ শতাংশ পঞ্চায়েত কভার করে ফেলেছি।”
পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রকের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, GPay, PhonePay, PayTm, BHIM, Mobikwik, WhatsApp Pay, Amazon Pay এবং Bharat Pe-এর মতো ডিজিটাল পেমেন্ট পরিষেবা প্রদানকারীদের সঙ্গে ৩০ জুন বৈঠক করতে হবে পঞ্চায়েতগুলিকে। এই UPI প্ল্যাটফর্মগুলির কোন কোন ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে, তার বিশদ বিবরণ-সহ একটি তালিকাও দেওয়া হয়েছে মন্ত্রকের পক্ষ থেকে। পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রক আরও বলেছে, ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে পঞ্চায়েতগুলিকে উপযুক্ত পরিষেবা প্রদানকারী বেছে নিতে হবে। পঞ্চায়েতগুলিকে এমন পরিষেবা প্রদানকারী বেছে নিতে বলা হয়েছে, যা ওই পঞ্চায়েতের অধীনের পুরো এলাকায় পরিষেবা দিতে পারে। রিয়েল টাইমে লেনদেন পর্যবেক্ষণের জন্য একটি ড্যাশবোর্ডও তৈরি করতে বলা হয়েছে। পঞ্চায়েত দফতরের আধিকারিকদের এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য জেলা ও ব্লক স্তরে প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হবে।
পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী কপিল মোরেশ্বর পাতিলের দাবি, ডিজিটাল লেনদেন দুর্নীতি দমনে সাহায্য করবে। তিনি বলেছেন, “বেশিরভাগ পঞ্চায়েত এখন ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবহার করছে। এটি দুর্নীতি রোধে সাহায্য করবে। পরিকল্পনা থেকে অর্থপ্রদান, সবকিছুই আজকাল ডিজিটালভাবে করা হচ্ছে।” সরকারি তথ্য অনুসারে, শুধুমাত্র BHIM অ্যাপের মাধ্যমে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৮০৬.৩ কোটি লেনদেন করা হয়েছিল। মোট ১২.৯৮ লক্ষ কোটি টাকার লেনদেন করা হয়েছে। ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে গ্রাম ও শহরাঞ্চলের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। ভারতের মোট ডিজিটাল লেনদেনে শহর ও গ্রামের প্রায় ৫০-৫০ অবদান রয়েছে।