কলকাতা: যুব তৃণমূল সভাপতি সায়নী ঘোষকে গ্রেফতার করে পুলিশ ঠিক কাজ করেছে। মন্তব্য করলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ।
সোমবার ইকো পার্কে হাঁটতে যান দিলীপ ঘোষ। নিত্য দিনের মতো হাঁটার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। তৃণমূল নেত্রী সায়নী ঘোষের গ্রেফতারি নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, “ত্রিপুরায় মুখ্যমন্ত্রীর সভায় খেলা হবে বলার সাহস দেখান কী করে সায়নী?” তাঁর ওপরেও একাধিকবার হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন দিলীপ ঘোষ। ছোট মাপের নেতারা ইট, পাটকেল খেলে কেউ কষ্ট পাচ্ছেন কেন, কটাক্ষ বিজেপি নেতার।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদের পর রবিবার বিকেলে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে গাড়ি দিয়ে ধাক্কা মারার চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে। ত্রিপুরা পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করেছে। আপাতত তাঁকে আগরতলা পূর্ব মহিলা থানায় রাখা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
সায়নী ঘোষের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছে ত্রিপুরা পুলিশ। জানা গিয়েছে তৃণমূল যুবর সভানেত্রীর বিরুদ্ধে ১২০ বি, ৫০৬, ১৫৩ এবং ৩০৭ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। আজ রাতে পুলিশ হেফাজতেই রাত কাটাতে হবে তৃণমূলের যুব নেত্রীকে।
গ্রেফতারির পর বিরক্ত সায়নী জানিয়েছেন, “রাজনৈতিক লড়াই জিনিসটা বিজেপির সিলেবাসে কোনদিনও ছিল না এবং ভবিষ্যতেও থাকবে না। ক্ষমতার দম্ভে, প্রশাসন ও গুন্ডাবাহিনীকে ব্যবহার করে, ভয় দেখিয়ে ভারতবর্ষের মানুষকে চুপ করিয়ে রাখা যাবে না। গণতন্ত্রকে এভাবে ভুলুণ্ঠিত হতে তৃণমূলের সৈনিকরা দেবে না।”
সকাল থেকেই ত্রিপুরার রাজনীতির আবহাওয়া বেশ গরম। রবিবার সকাল ১১টা নাগাদ আগরতলার এক বেসরকারি হোটেলে পৌঁছায় ত্রিপুরার মহিলা পুলিশের এক বিশাল বাহিনী। সেখানেই ছিলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh), সাংসদ সুস্মিতা দেব (Sushmita Dev), সায়নী ঘোষ সহ তৃণমূল নেতৃত্ব। হোটেল কর্মচারীদের কাছে খবর পেয়ে একে একে সেখানে এসে হাজির হন তৃণমূল নেতৃত্ব। পুলিশের কাছে তাঁরা জানতে চান হঠাই করে কী কারণে তাদের এই আগমন।
পুলিশ আধিকারিকরা জানান সায়নী ঘোষকে একবার থানায় যেতে হবে, তাঁর সঙ্গে কিছু কথা বলার রয়েছে পুলিশের।
জানা গিয়েছে, সায়নীর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন বিশ্বজিৎ দেবনাথ নামে এক ব্যক্তি। সায়নীর বিরুদ্ধে যে গাড়ি দিয়ে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে, তার সূত্রপাত শনিবার। শনিবার ত্রিপুরার চৌমহনি এলাকায় শাসক দলের একটি সভার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন সায়নী। শোনা যাচ্ছে, সেই সময় ত্রিপুরার শাসক দলের উদ্দেশে নাকি তৃণমূল যুব নেত্রী বলেছিলেন, “ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর সভায় হাতে গুনে ৫০ জন লোক। এর থেকে বেশি আমাদের প্রার্থীদের সভায় দেখা যাচ্ছে।” সূত্রের খবর, এরপরই সেখানে উপস্থিত বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে তাঁর বচসা শুরু হয়। তখন ভিড়ের মধ্যে থেকে জোরে গাড়ি চালিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন সায়নী। ঘটনায় কয়েকজন জখম হয়েছেন বলে দাবি বিজেপির।
উল্লেখ্য, সায়নীর পাশে দাঁড়াতে আজই ত্রিপুরা পৌঁছবেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তবে সেই আঁচ এবার পৌঁছে গেল দিল্লিতে। ত্রিপুরার ঘটনার জেরে রাজধানীতে আজ একগুচ্ছ কর্মসূচি রয়েছে ঘাসফুল শিবিরের। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Amit Shah) সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছে তৃণমূল। পাশাপাশি, রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গেও দেখা করতে পারেন সাংসদরা।
আরও পড়ুন: TMC in Tripura: ত্রিপুরায় তুলকালাম! শাহের দরবারে নালিশ জানাতে পারে তৃণমূল