মিউনিক: যত সময় গড়াচ্ছে, ততই ঘোরাল হয়ে উঠছে রাশিয়া-ইউক্রেন (Russia-Ukraine Conflict) পরিস্থিতি। যেকোনও মুহূর্তেই দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ বাধতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই দুই দেশ যাবতীয় সামরিক প্রস্তুতি নিয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেনের বিরোধ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর(S Jaishankar)। শনিবার তিনি বলেন, “ইউক্রেন নিয়ে যে বিরোধ তৈরি হয়েছে, তা সমাধানের জন্য কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা করতে হবে। কীভাবে দুই দেশের মধ্যে দূরত্ব মেটানো যায়, তা খুঁজে দেখতে হবে।”
গত মাস থেকেই ইউক্রেন সীমান্তে সেনা বাড়িয়েছে রাশিয়া। যেকোনও মুহূর্তেই হামলা চালাতে পারে রাশিয়া, এই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আমেরিকাও। অন্যদিকে, মস্কোর তরফে জানানো হয়েছে, তারা হামলা চালাতে চায় না। রুটিন মাফিক সামরিক মহড়াই চালাচ্ছেন তারা। যদিও এই দাবি মানতে নারাজ আমেরিকা, ব্রিটেনের মতো শক্তিশালী পশ্চিমী দেশগুলি।
শনিবার মিউনিক নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সেখানেই তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে জানান, ঠাণ্ডাযুদ্ধের সময়ে যে পরিস্থিতি ছিল, তার তুলনায় বর্তমানের পরিস্থিতি অনেকটাই আলাদা। তিনি বলেন, “বর্তমানের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা। তাই এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্যও আলাদা দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োজন….দিনের শেষে কূটনৈতিক আলোচনার মধ্যেই সমস্যার সমাধান লুকিয়ে রয়েছে। কীভাবে দুই দেশের মধ্যে বিরোধ মেটানো যায়, তার দিকেই নজর দেওয়া প্রয়োজন।”
এদিনও ভারতের তরফে তাদের পূর্ব অবস্থানই বজায় রাখা হয় এবং আলোচনার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে সমাধানসূত্র খোঁজার পরামর্শ দেওয়া হয়। সমস্ত দেশের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে কীভাবে দ্রুত সেনা প্রত্যাহার করে পূর্বের অবস্থানে ফেরা যায়, তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে সরাসরি রাশিয়ার সমালোচনা বা ইউক্রেনের পক্ষ নেওয়া সম্পর্কে কিছুই বলেনি ভারত।
রাশিয়া-ইউক্রেনের টানাপোড়েন নিয়ে যখন আন্তর্জাতিক মহল সরগরম, সেই মুহূর্তেও শক্তি প্রদর্শন করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গতকালই রাশিয়ার তরফে বিশাল সামরিক মহড়া চালানো হয়। আধুনিক হাইপারসনিক, ক্রুজ এবং পারমাণবিক ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফলভাবে পরীক্ষা করেছে। এই মহড়ায় উপস্থিত ছিলেন খোদ পুতিনও। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পারমাণবিক হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। পরিকল্পিত সামরিক মহড়া চালিয়ে সেই বার্তাই দিতে চাইছে রাশিয়া।
আমেরিকার তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যদি যুদ্ধ বাধে, তার জন্য দায়ী থাকবে রাশিয়াই। যুদ্ধ হলে আমেরিকা ইউক্রেনেরই পক্ষ নেবে এবং তাদের যাবতীয় সামরিক সহায়তা করবে। এদিকে, মস্কোর তরফে বলা হয়েছে যে ইউক্রেনের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে ওয়াশিংটন ও ন্য়াটো যেন নাক না গলায়, এর জন্য আইনি চুক্তির কথাও বলেছে তারা। কিন্তু আমেরিকা ও ন্যাটো বাহিনী-উভয়ই উভয়ই এই প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: Russia-Ukraine Conflict : রাশিয়াপন্থী বিদ্রোহীদের হানায় মৃত সেনা, যুদ্ধের আগেই রক্ত ঝরল ইউক্রেনে