নয়া দিল্লি: জেরার দ্বিতীয় দিনে ৬ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হল কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীকে। ন্যাশনাল হেরাল্ড পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত তহবিল তছরুপের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দ্বিতীয় দিনের জন্য জেরা করা হল সনিয়াকে। বুধবার তাঁকে ফের ইডি দফতরে হাজিরা দিতে হবে। গত বৃহস্পতিবার এই মামলায় প্রথমবার এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেটের সদর দফতরে হাজিরা দিয়েছিলেন সনিয়া। সেদিন মাত্র ২ ঘন্টা জেরা করেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল কংগ্রেস সভানেত্রীকে। এদিন জরার সময় বাড়ল। এদিনও, নয়াদিল্লির রাজপথে সনিয়া গান্ধীর এই জেরার বিরোধিতা করে প্রতিবাদ জানান কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা। পুলিশ এবং কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। তাঁদের নেতাদের যারপরনাই হেনস্থা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে কংগ্রেস।
এদিন নয়াদিল্লির রাজপথে, সনিয়া গান্ধীর এই জিজ্ঞাসাবাদের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে রাহুল গান্ধী-সহ অন্তত ৫০ জন কংগ্রেস সাংসদ আটক হন দিল্লি পুলিশের হাতে। বিকেলে তাঁদের সকলকেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এদিন সংসদের গান্ধীমূর্তির পাদদেশ থেকে বিজয় চকের উদ্দেশে মিছিল করার কর্মসূচি নিয়েছিল কংগ্রেস। তবে, মাঝপথেই তাঁদের আটকায় দিল্লি পুলিশ। রাস্তাতেই বসে পড়েন রাহুল গান্ধী-সহ অন্যান্য কংগ্রেস নেতারা। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে অচলাবস্থা চলার পর কংগ্রেস নেতাদের আটক করা হয়। রাহুল গান্ধী বলেন, “কংগ্রেসের সব সাংসদরাই এখানে আছেন। তারা মুদ্রাস্ফীতি এবং বেকারত্ব নিয়ে আওয়াজ তুলছিলেন। তারা (দিল্লি পুলিশ) আমাদের এখানে বসতে দিচ্ছে না। সংসদের ভিতরে আলোচনার অনুমতি নেই, আর এখানে তারা আমাদের গ্রেফতার করছে। এটাই ভারতের বাস্তব ছবি। সত্যিই দেশ পরিণত হয়েছে পুলিশ রাষ্ট্রে। মোদীজি তার রাজা।”
এদিকে, কংগ্রেস নেতাদের আটক করার সময় কংগ্রেস নেতা বিভি শ্রীনিবাসকে চুলের মুঠি ধরে টেনে নিয়ে যায় পুলিশ। এমনই অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার একটি ভিডিয়ো, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ভিডিয়োটি নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, যে পুলিশ কর্মীকে কংগ্রেস নেতার চুল ধরে টানতে দেখা যাচ্ছে, তাঁকে শনাক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে রঞ্জিত রঞ্জন, কেসি বেনুগোপাল, মানিকম ঠাকুর, ইমরান প্রতাপগড়ি, কে সুরেশ, দিগ্বিজয় সিং, দীপেন্দর হুডা, মল্লিকার্জুন খর্গে-সহ আরও বেশ কয়েকজন কংগ্রেস নেতাকে আটক করা হয়েছিল। পরে অবশ্য তাদের সকলকেই ছেড়ে দেওয়া হয়।
তবে শুধু নয়াদিল্লিতেই নয়, চণ্ডীগঢ়, মুম্বই, লখনউ, পটনা-সহ দেশের বিভিন্ন এলাকাতেই কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা সনিয়া গান্ধীর জিজ্ঞাসাবাদের প্রতিবাদ জানান। ইন্দোরে স্থানীয় কংগ্রেস কর্মীরা ইডি কার্যালয়, কালো রঙে রাঙিয়ে দিতে গিয়েছিলেন। তাদের বেধড়ক লাঠিপেটা করা হয়। নাগপুরে একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন কংগ্রেস কর্মীরা।