Aditya Thackeray: সত্যিই কি ঠাকুর্দার জন্যই ছাড় পেলেন আদিত্য? না কি ঠাকরেদের টিকি ছুঁতেও ভয় পাচ্ছে শিন্ডে শিবির?

ঠাকুর্দা বাল ঠাকরেই হলেন ঢাল। উদ্ধব শিবিরের বিধায়কদের বিরুদ্ধে শিন্ডে শিবির 'অযোগ্যতার' নোটিস দিলেও বাদ পড়ল উদ্ধব-পুত্রের নাম। ঠাকুর্দার সম্মানেই আদিত্য ঠাকরের নাম দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে শিন্ডে শিবির।

Aditya Thackeray: সত্যিই কি ঠাকুর্দার জন্যই ছাড় পেলেন আদিত্য? না কি ঠাকরেদের টিকি ছুঁতেও ভয় পাচ্ছে শিন্ডে শিবির?
ঠাকুর্দার জন্য বিপদ কাটল আদিত্যর
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 05, 2022 | 11:37 AM

মুম্বই: মহারাষ্ট্রে, সরকার বদলে গেলেও, উদ্ধব ঠাকরে বনাম একনাথ শিন্ডের গোষ্ঠীর রাজনৈতিক যুদ্ধ এখনও চলছেই। আস্থা ভোটে বিরাট জয় পেয়েছে শিন্ডে শিবির। তার আগের দিন স্পিকার নির্বাচনেও জিতেছিলেন তাঁদের প্রার্থী রাহুল নারবেকর। তবে, আদিত্য ঠাকরে-সহ উদ্ধব শিবিরের মোট ১৭ জন বিধায়ক তাঁর বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিলেন। সোমবার আস্থাভোটে জেতার পর এঁদের মধ্যে ১৬জনকে ‘অযোগ্য’ ঘোষণা করার প্রক্রিয়া শুরু করল শিন্ডে শিবির। শিন্ডের গোষ্ঠীর চিফ হুইপ ভরত গোগাবালে সোমবার (৪ জুলাই) এই বিষয়ে একটি নোটিস জারি করেছেন। বাদ পড়েছে শুধুমাত্র প্রাক্তন মন্ত্রী তথা উদ্ধব ঠাকরের ছেলে আদিত্য ঠাকরের নাম। প্রশ্ন উঠছে তবে কি সরাসরি ঠাকরে পরিবারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে ভয় পাচ্ছে শিন্ডে শিবির?

শিন্ডেদের দাবি, আদিত্যর ক্ষেত্রে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁর ঠাকুর্দার নামটাই। ভরত গোগাবালে বলেছেন, ‘আদিত্য ঠাকরে ছাড়া আমরা আমাদের হুইপ অমান্যকারী সকল ব্যক্তিকে অযোগ্য ঘোষণা করার নোটিস দিয়েছি। বালাসাহেব ঠাকরের প্রতি শ্রদ্ধার কারণেই আদিত্য ঠাকরের নাম দিইনি।’ তবে এই যুক্তিতে বিশেষ সারবত্তা নেই বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। শিন্ডে শিবির শুরু থেকে বলছে, তাঁরাই বাল ঠাকরের আদর্শের প্রকৃত ধারক ও বাহক। উদ্ধব শিবির বালাসাহেবের রাস্তা থেকে সরে গিয়েছেন। তবে, তারপরও সরাসরি উদ্ধব বা আদিত্য ঠাকরের বিরুদ্ধে সংঘাতের রাস্তায় যায়নি বিদ্রোহীরা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মহারাষ্ট্রে রাজনীতিতে শুধুমাত্র ঠাকরে নামটারই একটা বিশেষ প্রভাব রয়েছে। ঠাকরে পরিবারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করলে, জনমানসে তার কী ধরনের প্রভাব পড়বে, সেই সম্পর্কে নিশ্চিত নয় ঠাকরে শিবির। সেই কারণেই সম্ভবত, বারংবার নিজেদেরকে প্রকৃত শিবসৈনিক দাবি করেও, ঠাকরেদের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনও পদক্ষেপ করতে ভয় পাচ্ছেন শিন্ডেরা।

মহারাষ্ট্র বিধানসভায় শিবসেনার মোট ৫৫ জন বিধায়ক রয়েছে। এর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি বিধায়ক এখন একনাথ শিন্ডের সঙ্গে রয়েছেন। এমনকি, সোমবার আস্থা ভোটের সময়ও ঠাকরে শিবির থেকে একজন বিধায়ক বিদ্রোহীদের জাহাজে উঠেছেন। ফলে শিন্ডে শিবিরের শক্তি গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ বিধায়কে। আর আদিত্য ঠাকরেকে নিয়ে মাত্র ১৫ জন বিধায়ক এখনও পড়ে রয়েছেন ঠাকরে শিবিরে। এই সমর্থনের ভিত্তিতে শিন্ডে গোষ্ঠী দাবি করছে, তারাই আসল শিবসেনা। রবিবার গোগাবালেকে শিবসেনার চিফ হুইপ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন নয়া স্পিকার রাহুল নারবেকর।

রবিবার, গোগাবালেকে শিবসেনার চিফ হুইপ হিসেবে স্বীকৃতি দেন নয়া স্পিকার রাহুল নারবেকর। সোমবার, ২৮৮ সদস্যের বিধানসভায় (বর্তমানে শক্তি ২৮৭) ১৬৪ জন বিধায়কই একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন সরকারের আস্থার প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। মাত্র ৯৯ জন বিধায়ক বিপক্ষে ভোট দেন। সব মিলিয়ে মোট ২৬৩ জন বিধায়ক মতদান করেন। কংগ্রেস এবং এনসিপির ২০ জন বিধায়ক ভোটদানের সময় অনুপস্থিত ছিলেন। এরপর সোমবার সন্ধ্যাতেই গোগাবালে বিধানসভার স্পিকার নারবেকরের কাছে হুইপ অমান্যকারী বিধায়কদের অযোগ্য ঘোষণা করার জন্য আবেদন করেন। প্রসঙ্গত, এর আগেই ঠাকরে শিবিরও বিদ্রোহী ১৬ জন বিধায়কের বিরুদ্ধে অযোগ্যতার নোটিস জারি করেছিল। বিষয়টি এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। নয়া স্পিকার গোগাবালেকে চিফ হুইপের স্বীকৃতি দিয়েছেন, সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে তারা আবার নতুন একটি পিটিশনও দায়ের করেছে। ১১ জুলাই তার শুনানি হবে।

সূত্রের খবর, সরকার গঠনের পর এখন দলের নিয়ন্ত্রণও করায়ত্ব করতে মুখিয়ে আছেন একনাথ শিন্ডে। আর সেই কারণেই দুই শিবিরে ব্যবধান ক্রমেই বাড়ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনুমান, আগামী কয়েকদিনে কয়েকজন সেনা সাংসদও একনাথ শিবিরে যোগ দিতে পারেন। শিন্ডের সঙ্গে হাত মেলাতে পারেন দলের জেলা স্তরের নেতারাও। সেই ক্ষেত্রে বাবার প্রতিষ্ঠিত দলই হাতছাড়া হতে পারে উদ্ধব ঠাকরের।