নয়া দিল্লি: সুপ্রিম কোর্টে উদ্ধব ঠাকরে গোষ্ঠীর দায়ের করা পিটিশনের বিরোধিতা করলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে। তিনি বলেছেন, মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল এবং স্পিকারের করা পদক্ষেপগুলি পুনঃমূল্যায়নের জন্য বিচার করা অনুচিত। তাঁর দাবি উদ্ধব গোষ্ঠীর যুক্তি আদালত মেনে নেওয়া মানে বিধানসভায় সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর স্বৈরাচার কায়েম হওয়া। সেই ক্ষেত্রে গণতন্ত্রবিরোধী ও সংখ্যালঘু সরকার অবৈধভাবে পদে বহাল থাকবে এবং এমন একজন মুখ্যমন্ত্রী হবেন, যিনি নিজের দলের বিধায়কদেরই আস্থা হারিয়েছেন।
আদালতে উদ্ধব ঠাকরের নিয়োগ করা শিবসেনার সাধারণ সম্পাদক সুভাষ দেশাই এবং চিফ সুনীল প্রভুর একটি পিটিশন দায়ের করেছিলেন। উদ্ধব ঠাকরে সরকারকে আস্থা ভোটে অংশ নেওয়ার জন্য রাজ্যপালের নির্দেশ, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে একনাথ শিন্ডেকে শপথ পাঠ করানোর সিদ্ধান্ত, স্পিকার পদে রাহুল নারবেকরের নির্বাচন, উদ্ধব গোষ্ঠীর বিধায়কদের বিরুদ্ধে নবনির্বাচিত স্পিকারের অযোগ্যতার প্রক্রিয়া শুরু করাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন তাঁরা। এদিন, এর বিরুদ্ধে একটি হলফনামা দাখিল করেছেন শিন্ডে।
পাল্টা হলফনামায় শিন্ডে আরও বলেছেন, আবেদনকারীরা মহারাষ্ট্র সরকারকে গত ২৭ জুনের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছেন। কিন্তু, ২৯ জুন উদ্ধব ঠাকরের পদত্যাগ করেছেন। তাই এখন আর সেই আবেদনের কোনও ভিত্তি নেই। পাশাপাশি সংবিধানের ২১২ নম্বর অনুচ্ছেদের উল্লেখ করে, শিন্ডে গোষ্ঠী যুক্তি দিয়েছে, বিধানসভার ভিতরের কার্যধারাকে আদালতের সামনে প্রশ্নবিদ্ধ করা যায় না। এছাড়া, সরকার গঠনের আমন্ত্রণ সংক্রান্ত রাজ্যপালের সিদ্ধান্তও বিচার বিভাগের পর্যালোচনার অধীন হতে পারে না।
তারা আরও বলেছে, সংখ্যাগরিষ্ঠতার মাধ্যমে গণতান্ত্রিকভাবে গৃহীত আন্তঃদলীয় সিদ্ধান্তেও আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে না। হলফনামায় বলা হয়েছে, গণতন্ত্রে যেকোনও কর্মের বৈধতা/অবৈধতা পরীক্ষা করার ভিত্তি হল ‘সংখ্যা’। ১৫ জনের কোনও গোষ্ঠী, ৩৯ জনের কোনও গোষ্ঠীকে বিদ্রোহী বা অপরাধী বলতে পারে না। বরং তার বিপরীতটাই সত্যি। অর্থাৎ, উদ্ধব গোষ্ঠীই বিরোধী।
অযোগ্যতার বিষয়টি আদালতে মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত “আসল শিবসেনা” কোন গোষ্ঠী, সেই বিষয়ে ভারতের নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয় বলে দাবি করেছে উদ্ধব গোষ্ঠী। এই দাবিরও বিরোধিতা করেছেন শিন্ডে। এই বিষয়ে, হলফনামায় শিন্ডে গোষ্ঠী বলেছে, ১০৬৮ সালের নির্বাচনী প্রতীক (সংরক্ষণ ও বরাদ্দ) আদেশের অধীনে এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার একচেটিয়া এক্তিয়ার রয়েছে। ভারতের প্রধান বিচারপতি এনভি রমনা, বিচারপতি কৃষ্ণ মুরারি এবং বিচারপতি হিমা কোহলির সমন্বয়ে গঠিত একটি বেঞ্চ, আগামী ৩ অগস্ট এই মামলাটি শুনবে।