নয়া দিল্লি: ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে এমন কোনও বিধান নেই, যার দ্বারা ধর্মীয় নামের রাজনৈতিক দলগুলির নিবন্ধন নিষিদ্ধ করা যেতে পারে। শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্টে এক জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে, হলফনামা পেশ করে এমনটাই জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। হলফনামায় বলা হয়েছে, “এমন কোন বিধান নেই যা ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ২৯-এর ক ধারার অধীনে ধর্মীয় অর্থের নাম থাকা সংগঠনগুলিকে রাজনৈতিক দল হিসাবে নিবন্ধিত করতে বাধা দেয়।”
এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি রিট পিটিশনে দায়ের করা হয়েছিল। সেখানে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা, হিন্দু একতা আন্দোলন পার্টি, ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগ, অল ইন্ডিয়া মজলিস-ইলতেহাদুল মুসলিমিন, অখিল ভারতীয় মুসলিম লিগ (ধর্মনিরপেক্ষ), মুসলিম মজলিস উত্তরপ্রদেশ, অল ইন্ডিয়া ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক অ্যান্ড ব্যাকওয়ার্ড পিপলস পার্টি, ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট, সেহজধারী শিখ পার্টি, ইসলাম পার্টি হিন্দ ইত্যাদি দলের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। নামে বা প্রতীকে ধর্মীয় ধারণা বহনকারী এই দলগুলি যাতে রাজনৈতিক দল হিসেবে নাম নিবন্ধিত করতে না পারে, সেই বিষয়ে আদালতের নির্দেশ চাওয়া হয়।
এদিন আদালতে নির্বাচন কমিশন বলেছে, এই দলগুলি কয়েক দশক ধরে রয়েছে। তাই এদের নাম এখন ঐতিহ্যশালী নামে পরিণত হয়েছে। এই রাজনৈতিক দলগুলির নাম বদলানো যায় কি না, তা আদালতের বিচার-বুদ্ধির উপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে, নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ২০০৫ সালে, জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ২৯-এর ক ধারার অধীনে ধর্মীয় নামের রাজনৈতিক দলগুলির নাম নিবন্ধিত না করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তারপর থেকে নির্বাচন কমিশনে এই ধরনের নামের কোনও রাজনৈতিক দলের নাম নিবন্ধিত হয়নি। আরও বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের ১৯ মে নির্বাচন কমিশন একটি আদেশ জারি করে জানিয়েছিল, রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধিত হতে চাওয়া সংগঠনগুলির নামে ধর্মীয় ধারণা থাকা উচিত নয়।
নির্বাচন কমিশন হলফনামায় আরও জানিয়েছে, ধর্মীয় অর্থের প্রতীক যে রাজনৈতিক দলগুলিকে বরাদ্দ করা হয়েছে, সেগুলি বাতিল করা সম্ভব নয়। কারণ রাজনৈতিক দলগুলির নিজেদের পছন্দের প্রতীক পাওয়াটা তাদের নির্বাচনী পারফরম্যান্সের উপর নির্ভর করে। এটা ১৯৬৮ সালের নির্বাচনের প্রতীক (সংরক্ষণ এবং বরাদ্দ) আদেশের ৬-এর ক, ৬-এর খ এবং ৬-এর গ অনুচ্ছেদের অধীনে নির্দিষ্টভাবে বলা আছে।