উত্তরকাশী: বারবার এসেছে বাধা, একাধিকবার নেমেছে ধস। কিন্তু, তারপরেও দমেনি উদ্ধারকারী দল। শেষে প্রায় ৪০০ ঘণ্টা পর এল সাফল্য। র্যাটহোল মাইনিংয়ে আসে সাফল্য। ১৭ দিন পর অবশেষে আলোয় ফিরলেন উত্তরকাশীর অন্ধকার সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ৪১ জন শ্রমিক। এদিন সকাল থেকে শুরু হয়েছিল পাইপ পাতার কাজ। দুপুরে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী তিনি টুইট করে জানান পাইপ পাতার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। তখন নতুন করে আশার আলো দেখা গেলেও খানিক পড়েই তা ঢাকা পড়ে বিষাদের মেঘে। সূত্রের খবর, টার্গেট ছিল ৫৭ মিটার পর্যন্ত পাইপ পাতা হবে। এই কাজ শেষ হতেই এনডিআরএফের এক জওয়ান এই পাইপের মধ্যে শুয়ে ভিতরে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ঠিক তখনই অপ্রত্যাশিতভাবে আবার মাটি পাথর ধসে পড়ে। আরও কিছু অংশ নতুন করে আটকে যায়।
তবে তাতেও দমে যাননি উদ্ধারকারীরা। নতুন করে শুরু হয় ওয়েল্ডিংয়ের কাজ। আরও তিন মিটার পাইপ নতুন করে লাগানো হয়। এই পাইপের মধ্যেই স্ট্রেচারে শুইয়ে বাইরে বের করে আনা হয় আটকে থাকা শ্রমিকদের। সূত্রের খবর, স্ট্রেচারের দুই প্রান্তে বাধা রয়েছে দড়ি। সেই দড়ি টেনেই তাঁদের ধীরে ধীরে বাইরে বের করা হয়। একজন শ্রমিককে বের করতে তিন থেকে ৫ মিনিট পর্যন্ত সময় লেগেছে। তবে এই কাজও খুব একটা যে সহজ এমনটা নয়।
সূত্রের খবর, আলাদা পাইপজুড়েই চলছিল কাজ। সেখানে যে কোনও মুহূর্তে আটকে যেতে পারত স্ট্রেচারে লাগানো চাকা। তাই কোনও বাধা যাতে না আসে সে বিষয়ে তৎপর থাকতে হয়েছে উদ্ধারকারী দলের সদস্যদের। গত সাতদিন ধরে একের পর এক বাধা এসেছে। প্রথমে আমেরিকান অগার মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছিল। অর্থাৎ যন্ত্রের সাহায্যে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করা হচ্ছিল। কিন্তু, সেই অগার মেশিন পাইপের ভিতরে সম্পূর্ণ আটকে যায়। ধসের মধ্যে মেশিনের ব্লেড আটকে যায়। অগার মেশিনের ইঞ্জিনেও ব্লাস্ট হয়। এদিকে অগার মেশিনকে ভিতর থেকে বের করাও ছিল রীতিমতো চ্যালেঞ্জের কাজ। সেই কাজ কিন্তু গ্যাস কাটার মেশিন দিয়েও করা সম্ভব হয়নি।
শেষে পিএমও থেকে ফোন করা হয় দেশের এক বেসরকারি সংস্থাকে। পুণে থেকে একটি সংস্থার লোকজন আসে। তাঁরা লেজার কাটিং শুরু করে বাকি কাজ শেষ করেন। এই কাজও ছিল রীতিমতো চাপের। পাইপের ভিতর কার্যত শুয়ে শুয়ে চলে কাজ। এদিকে সেখানে আবার তীব্র অক্সিজেনের ঘাটতি। অবশেষে দীর্ঘ সময় চেষ্টার পর শেষ হয় মাটি খোঁড়ার কাজ।