বেঙ্গালুরু: কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপিএফ জওয়ানদের উপর আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটেছিল ২০১৯ সালে। সেই হামলায় প্রায় ৪০ জন সেনা জওয়ানের মৃত্যু হয়। এই হামলা ‘সেলিব্রেট’ করার অপরাধে ২২ বছরের এক যুবককে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল আদালত। ওই যুবক ইঞ্জিনিয়ারিং পাঠক্রমের ছাত্র। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাঁকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে আদালত। বেঙ্গালুরুর একটি বিশেষ আদালত এই নির্দেশ দিয়েছে। দোষী সাব্যস্ত যুবকের নাম ফৈজ রশিদ। এই অপরাধের সময় তার বয়স ছিল ১৯ বছর। বিচার চলাকালীন গত সাড়ে তিন বছর ধরে হেফাজতে ছিল সে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩এ এবং ২০১ ধারায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে বিশেষ আদালত।
জানা গিয়েছে, পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলার পর সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একাধিক মন্তব্য করেছিল রশিদ। সেই সব মন্তব্য সেনা জওয়ানদের উপর হামলাকে গৌরবান্বিত করেছিল। এবং ভারতীয় সেনাকে হেয় করার মন্তব্যও করেছিল ওই যুবক। ধর্মের বিষয়ে উস্কানিও সেই সব পোস্টে ছিল বলে জানা গিয়েছে।
রশিদের বিরুদ্ধে আদালতে পুলিশ জানায়, “তার করা মন্তব্য এবং পোস্ট ভারতের সার্বভৌমত্বকে আঘাত করছে। তার লেখা পড়ে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, পুলওয়ামায় সেনা জওয়ানদের উপর জঙ্গিদের আত্মঘাতী হামলায় সে খুব উল্লসিত।” রশিদের আইনজীবী আদলতকে জানায়, যেহেতু তার বয়স ২১ বছরের কম, তাই প্রোবেশন পিরিয়র্ডে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হোক। অজ্ঞাতে সে এই ভুল করে ফেলেছে। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত। এবং কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়।
এই সাজা ঘোষণার সময় বিচারক জানান, “অভিযুক্ত অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন একাধিকবার। ফেসবুকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের পোস্টে গিয়ে সে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেছেন। সর্বোপরি ওই যুবক কোনও অশিক্ষিত বা সাধারণ ব্যক্তি নন। তিনি এক জন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র। ইচ্ছাকৃতভাবেই এ সব মন্তব্য ফেসবুকে করেছেন তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। এ ধরনের ঘৃণ্য হামলার পাশে দাঁড়ানো অপরাধ। জওয়ানদের মৃত্যুতে নিজের উল্লাস জনসমক্ষে ব্যক্ত করেছেন।”
২০১৯ সালে সিআরপিএফ জওয়ানদের কনভয়ে হামলা চালায় পাকিস্তানে জঙ্গি সংগঠন জৈশ-ই-মহম্মদের জঙ্গিরা। সেই হামলায় ৪০ জন জওয়ানের মৃত্যু হয়েছিল। এই ঘটনা ঘিরে দেশ জুড়ে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়।