নয়া দিল্লি: সংসদে কেন্দ্রকে চাপে ফেলতে বিরোধীদের মোক্ষম চাল। আজ, বুধবারই সংসদের লোকসভায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব (No Confidence Motion) আনতে পারে বিরোধী শিবির (Opposition Alliance)। ইন্ডিয়া জোটের ২৬টি দল মিলিতভাবে এই অনাস্থা প্রস্তাব আনতে পারে। মণিপুর (Manipur) ইস্যুতে যাতে কেন্দ্রকে অস্বস্তিতে ফেলা যায় এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi) বিবৃতি দেন, তার জন্যই বিরোধী জোটের এই চাল।
মঙ্গলবারই জল্পনা শোনা গিয়েছিল যে লোকসভায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার পরিকল্পনা করছে ২৬ টি বিরোধী দল। লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনা যায় কি না, তা নিয়ে চূড়ান্ত স্তরে আলোচনা চলছে বিরোধীদের মধ্যে। সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহে দু’দিন দিল্লির বাইরে থাকার কথা প্রধানমন্ত্রী মোদীর। ফলে তাড়াহুড়ো করে বুধবারই অনাস্থা প্রস্তাব হবে কি না তা নিয়ে বিরোধীদের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। কিন্তু প্রশ্নটা হচ্ছে, লোকসভায় বিরোধীদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। তাহলেও কেন বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ করতে উদ্যোগী বিরোধী জোট?
বিরোধী সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সংসদে এনে দাঁড় করানোর জন্যই অনাস্থা প্রস্তাবের কৌশল নিচ্ছে বিরোধীরা। মণিপুর ইস্যুতে অধিবেশন শুরুর দিন সংসদের বাইরে মহিলাদের নিগ্রহের ঘটনার নিন্দা করলেও, সংসদের ভিতরে কোনও বক্তব্য রাখেননি প্রধানমন্ত্রী। বিরোধীদের দাবি, সংসদে মণিপুর ইস্যু নিয়ে আলোচনা করুক সরকার। প্রধানমন্ত্রী বিবৃতি দিক। সেই দাবিতেই অধিবেশন শুরুর দিন থেকে সংসদের দুই কক্ষ বারংবার অশান্ত হচ্ছে। এবার পরিকল্পনা অনাস্থা প্রস্তাব আনার।
সংসদীয় রীতি অনুযায়ী, ৫০ জন সাংসদ একসঙ্গে অনাস্থা প্রস্তাব আনলে, তা মানতে বাধ্য লোকসভা স্পিকার। কিন্তু অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে কবে, কখন, কতক্ষণ আলোচনা হবে তা ঠিক করার সম্পূর্ণ অধিকার লোকসভার স্পিকারের। যেহেতু মণিপুর ইস্যুতে বিরোধীদের প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দেওয়ার দাবিকে কোনভাবেই গুরুত্ব দিচ্ছে না সরকার, তাই ঘুরপথে আলোচনার পরিসর তৈরি করতে চাইছে বিরোধীরা। অনাস্থা প্রস্তাবের উপর আলোচনা সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মণিপুর ইস্যুতে সরকারকে আক্রমণ করাই বিরোধীদের গেম প্ল্যান।
তবে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হবে কি হবে না, তা নিয়ে বিরোধী শিবির এখনও ঐক্যমতে পৌঁছতে পারেনি। কংগ্রেসের অভ্যন্তরে একাংশ নেতৃত্বের মত, অনাস্থা প্রস্তাবে জেতার ক্ষমতা নেই বিরোধী জোটের। আস্থা ভোট হলে অকারণে মুখ পুড়বে বিরোধী শিবিরের।
এদিকে, অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিরোধীদের উদ্দেশে একাধিক ইস্যুকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করবেন প্রধানমন্ত্রী-সহ বিজেপি সাংসদরা। এই মুহূর্তে বিজেপির একমাত্র লক্ষ্য নতুন ইন্ডিয়া জোটে ভাঙ্গন ধরানো। ফলত সেই বিভাজনের রাজনীতি করার সুযোগ করে দেওয়া কি ঠিক হবে? এই প্রশ্নও রয়েছে বিরোধী জোটের একাংশের মনে।