নয়া দিল্লি: প্রতিবেশী দেশ চিনের সঙ্গে কোনওদিনই খুব একটা ভাল সম্পর্ক ছিল না ভারতের। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে সেই সম্পর্কের অবনতি হয়েছে আরও। এবার ভারত-চিন সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুললেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে তিনি বলেন, “বিগত আড়াই বছর অত্যন্ত কঠিন সময় ছিল ভারতের জন্য। চিনের সঙ্গে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে”। পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্য়কায় সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ” ৪০ বছর আগে সীমান্তে প্রথমবার রক্ত ঝরেছিল। এরপর ফের রক্ত ঝরেছে গালওয়ানে। তারপরও বেজিংয়ের সঙ্গে যোগাযোগের পথ খোলা রাখা হয়েছে, কারণ প্রতিবেশীদের একে অপরের সঙ্গে মিলেমিশেই থাকতে হয়।”
ভারত-অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্ক ও কোয়াড সদস্য হিসাবে নিজেদের দেশগুলির সুরক্ষা প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবেই চিনের প্রসঙ্গ তুলে আনেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, “চিনের সঙ্গে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা বিগত আড়াই বছরে অত্যন্ত কঠিন ছিল। ৪০ বছর পর আবার দুই দেশের সীমান্তে রক্ত ঝরেছে এবং আমাদের ২০ জন জওয়ানকে খোয়াতে হয়েছে। কিন্তু তারপরও আমার, আমাদের দেশের তরফে ক্রমাগত যোগাযোগ জারি রাখা হয়। এমনকি, ওই সংঘর্ষের (গালওয়ান সংঘর্ষ) পরদিনই আমি চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-কে ফোন করি এবং চিনের তরফে আর যেন কোনও সামরিক গতিবিধি বা সেনা এগোনোর মতো কাজ না করা হয়, তার অনুরোধ জানাই।”
বিদেশমন্ত্রী আরও বলেন, “কূটনীতির সবটাই হল যোগাযোগ ব্যবস্থা। এটা শুধু চিনের সঙ্গে সম্পর্ক নয়, অন্যান্য দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতেও এই নীতিই মেনে চলা হয়। যদি কূটনৈতিকরা নিজেদের মধ্যে কথা না বলেন, তাহলে কী কূটনীতির কাজ করবেন তারা? দিনের শেষে সকল দেশকেই একে অপরের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে হবে।”
Delighted to interact with the Indian community in Sydney.
Shared my assessment of the rapid growth in the India-Australia relationship since 2014.
Underlined the new areas of focus in our partnership, including education, technology, resources and mobility. pic.twitter.com/BIipzrYVWE
— Dr. S. Jaishankar (@DrSJaishankar) October 11, 2022
উল্লেখ্য, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা নিয়েই বিগত প্রায় আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারত ও চিনের মধ্যে বিরোধ চলছে। পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা ঘিরেই দুই দেশের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। ২০২০ সালের মে মাসে দুই দেশের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। জুন মাসে গালওয়ান উপত্যকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয় দুই দেশের মধ্যে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর ২০ জন জওয়ান শহিদ হন ওই সংঘর্ষে। চিনের তরফে প্রথমে অস্বীকার করা হলেও, পরে একাধিক জওয়ানের মৃত্যুর খবর শিকার করে নেওয়া হয়।
এরপরে ১৬ দফায় সেনাস্তরীয় ও কূটনৈতিক স্তরের বৈঠকের পর সেনা প্রত্য়াহার শুরু হয়। প্য়াংগংয়ের পর গত সেপ্টেম্বর মাসে গোগরা-হট স্প্রিং এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হয়।