পুরানো সংসদ ভবনের বিদায় আসন্ন। আজ, মঙ্গবার ফটো সেশন, সেন্ট্রাল হলে যৌথ অধিবেশনের মধ্য দিয়েই পুরানো সংসদ ভবনকে বিদায় জানানো হবে। তারপর শুরু হবে নতুন সংসদ ভবনের যাত্রা। নির্ধারিত সময় মেনে সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদই সরকার ও বিরোধী দলের সকল সাংসদ পুরানো সংসদ ভবনে এসে পৌঁছেছেন।
পুরোনো সংসদ ভবনকে সংবিধান ভবন নাম দেওয়া হল।
লোকসভায় নারীশক্তি বন্ধন অধিনিয়ম বিল পেশ করলেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুনরাম মেঘওয়াল। বিলটির খসড়া তাদের আগে দেওয়া হয়নি বলে দাবি বিরোধীদের। নয়া সংসদ ভবনেও শুরু তীব্র হট্টগোল।
নয়া সংসদ ভবনে নয়া প্রযুক্তি। লোকসভায় আপলোড করা হল নারীশক্তি বন্ধন অধিনিয়ম বিল।
অধীররঞ্জন চৌধুরী সংসদে ভুল তথ্য দিয়েছেন বলে অভিযোগ জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর দাবি, পুরোনো বিলটি জীবিত নেই। রাজীব গান্ধীর সময়ে লোকসভায় বিলটি কখনও পেশ করা হয়নি বলেও দাবি করলেন তিনি।
১৯৮৯-এ রাজীব গান্ধীর সময়ে স্থানীয় নির্বাচনে মহিলা সংরক্ষণ নিশ্চিত করা হয়েছিল। রাজীব গান্ধী, পিভি নরসীমা, মনমোহন সিং – সকলেই এই বিল পাস করাতে চেয়েছিলেন। মনমোহন সিং-এর সময়ে রাজ্যসভায় বিলটি পাস হয়েছিল, তা আজও জীবিত রয়েছে।
নয়া সংসদ ভবনে সংবিধান পাঠ করে অধীর বললেন, সংবিধানের শপথ ভারতবাসী সম্মিলিতভাবে নিয়েছিল। ধর্ম ভেদে আলাদা আলাদা শপথ নেওয়া হয়নি। ভারত এবং ইন্ডিয়ার মধ্যে কোনও ভেদ নেই। এই দুই নামের মধ্যে প্রভেদ করার চেষ্টা না করলেই ভাসল। হিন্দুত্ব এবং হিন্দিত্ব যেন চাপিয়ে দেওয়া না হয়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পর বলতে উঠলেন কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী। প্রথমেই তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামের শহিদদের প্রণাম জানালেন। তিনি আরও দাবি করলেন, নয়া সংসদ ভবনের ভাবনা মোদী সরকারের নয়, ইউপিএ সরকারের সময়ই লোকসভার অধ্যক্ষ মীরা কুমারই প্রথম এই দাবি তুলেছিলেন। কংগ্রেস সাংসদ সুমিত্রা মহাজনও এর দাবি জানিয়েছিলেন।
নারীশক্তি বন্ধন অধিনিয়ম বিলে মহিলাদের জন্য লোকসভা এবং বিধানসভায় ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে। এই বিল আইন হলে নারীশক্তি অনেক এগিয়ে যাবে।
অটলজি বহুবার মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ করানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, প্রয়োজনীয় সংখ্যা না থাকায় বারবার আটকে গিয়েছিলেন। ভগবান সম্ভবত বহু পবিত্র কাজ করার জন্য আমায় বেছে নিয়েছেন। মহিলা-নেত্রিক উন্নয়নের দৃষ্টিভঙ্গী থেকেই আমাদের সরকার আজ এক বড় সংবিধান সংশোধনী আনতে চলেছে। বিলটির নাম হল নারীশক্তি বন্ধন অধিনিয়ম।
প্রত্যেক দেশের সামনে এমন কিছু দিন আসে, যখন গোটা দেশ একসঙ্গে বলে আমরা ইতিহাস রচনা করছি। আমি গভীর বিশ্বাস এবং গর্ব সহকারে বলছি, আজকের দিনের কথা ইতিহাসে লেখা থাকবে। এটা আমাদের সকলের গর্বের দিন।
মহাকাশ থেকে খেলার মাঠ পর্যন্ত ভারতীয় মহিলাদের সাফল্যের সাক্ষী গোটা দেশ। মহিলা-নেত্রিক উন্নয়নই মানবজাতির উন্নয়নের পথ। জি২০ শীর্ষ সম্মেলনেও আমরা এর উপর জোর দিয়েছি। মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য আমাদের সরকার একের পর এক প্রকল্প এনেছে।
লোকসভার অধ্যক্ষ বারবার সাংসদদের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আমি আশা করব, নয়া সংসদ ভবনে সকল সাংসদ, সংসদীয় আচরণের লক্ষণরেখা মেনে চলবেন। সারা দেশ আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকে।
আমাদের শ্রমিক, ইঞ্জিনিয়ারদের ঘাম মিশে আছে এই ভবনের সঙ্গে। কোভিড মহামারির সময়ও তাঁরা কাজ করে গিয়েছেন। আমি বারবার আসতাম সেই সময়। তাদের স্বাস্থ্যের খবর নিতাম। আমি এই শ্রমযোগীদের নমস্কার জানাচ্ছি। তাঁদের সকলের নাম পরিচয় সম্বলিত একটি ডিজিটাল বই রাখা থাকবে এই সংসদ ভবনে।
নয়া সংসদের সবকিছু নতুন। তবে, একটা জিনিস আছে, যেটা নতুন নয়। নতুন এবং পুরনোর মেলবন্ধন ঘটায় এটি। সেটি হল এই পবিত্র সেঙ্গোল। এটি স্বাধীনতার সাক্ষী। প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর হাতের ছোঁয়া পেয়েছিল এটি। এটা আজ আমাদের সকলের প্রেরণা।
বালগঙ্গাধর তিলকের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানালেন, এক গণেশ চতুর্থীর দিন তিনি ভারতকে স্বাধীন করার ডাক দিয়েছিলেন। আজ গণেশ চতুর্থীর দিন আমরা ভারতকে উন্নত দেশ গড়ার শপথ নিচ্ছি।
নয়া সংসদ ভবনে প্রথম অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বললেন, এটা ভারতের অমৃতকালের উষাকাল। ভারত চন্দ্রযান-৩ এর সাফল্য অর্জন করেছে। সফল জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
নয়া সংসদ ভবনে প্রবেশ করলেন প্রধানমন্ত্রী ও অন্যআন্য মন্ত্রীরা।
#WATCH | Prime Minister Narendra Modi, Union Home Minister Amit Shah, Defence Minister Rajnath Singh, Union Ministers Piyush Goyal, Nitin Gadkari and other parliamentarians enter the New Parliament building. pic.twitter.com/kis6atj56K
— ANI (@ANI) September 19, 2023
যৌথ অধিবেশন শেষে পুরানো সংসদ ভবন থেকে নতুন সংসদ ভবনের দিকে রওনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-সহ সরকার ও বিরোধী পক্ষের সকল সাংসদ। অনেকে যাওয়ার পথে পুরানো সংসদ ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে সেলফিও তুললেন।
এক সময় বুদ্ধিজীবী, অর্থনীতিবিদরা আলোচনা করতেন , মোদী ‘আত্মনির্ভরের’ কথা বলছে মানে, বিশ্ব অর্থনীতি পরিকাঠামো ভারত ঠিক হবে তো? কিন্তু ৫ বছরে মধ্যেই ভারতে ‘আত্মনির্ভর’ মডেলের আলোচনা করছে বিশ্ব। কোনও ভারতবাসী চাইবেন না দেশ প্রতিরক্ষায় আত্মনির্ভর হবে না, কৃষিক্ষেত্রে নির্ভর হবে না! ভারতের এই সংকল্প পূরণ করা সবার দায়িত্ব। এখানে কোনও ভেদাভেদ নয়। সকলের হৃদয় চাই, দেশের জন্য চাই।
অমৃতকালের ২৫ বছরে আমাদের বড় ক্যানভাসে ছবি আঁকতেই হবে। ছোট ছোট ঝগড়ার সময় চলে গিয়েছে। আগে আমাদের উচিত আত্মনির্ভর ভারত তৈরি করার। আমাদের থেকে শুরু হবে। প্রত্যেক নাগরিকদের থেকে শুরু হবে।
কিছু লোক নিরাশায় ভুগতে পারেন। কিন্তু ভারত জানে সে বিশ্বের ৩ নম্বর অর্থনীতিতে পৌঁছবেই। ভারতের ব্যাঙ্কিং সেক্টর আজ নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে দুনিয়ায় আলোচনার জায়গা করে নিয়েছে। বিশ্বের কাছে ভারতকে নিয়ে কৌতূহল যেমন রয়েছে, তেমনই স্বীকৃতি দিচ্ছে। এমন এক সময় দাঁড়িয়ে আমরা সত্যি ভাগ্যবান। দেশের ইচ্ছাশক্তি এমন শিখরে দাঁড়িয়ে, হয়তো গত হাজার বছরে এমন জায়গায় পৌঁছয়নি। পরাধীনতার শিকলে এই ইচ্ছাশক্তি বাধা পড়ে ছিল। কিন্তু আজ তার পথে বাধা দেওয়া ক্ষমতা কারওর নেই।
লালকেল্লা থেকে আমি বলেছিলাম, এটাই সময় এবং সঠিক সময়। একের পর এক ঘটনা লক্ষ্য করলে বোঝা যাবে সমগ্র ভারত এই চেতনায় জাগ্রত হয়েছে। নতুন শক্তিতে ভরপুর। এই চেতনা এবং শক্তি দেশবাসীকে নতুন দিশায় নিয়ে যাবে, এ আমার বিশ্বাস। দেশ যে পথে চলছে, লক্ষ্যে আমার পৌঁছবই। আজ ভারত ৫ম অর্থনীতির দেশ। ৩ নম্বর স্থানে পৌঁছনোর চেষ্টা করছে ভারত।
অনুচ্ছেদ ৩৭০ নিয়ে বিতর্ক হয়েছে, উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, আক্রোশ তৈরি হয়েছে। সংসদের ভিতরে এবং বাইরে সে দৃশ্য দেখা গিয়েছে। কিন্তু আমরা সবাই মিলে অনুচ্ছেদ ৩৭০ থেকে মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করেছি। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল। এই ধরনের অভূতপূর্ব কাজে এই সংসদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আজ জন্মু ও কাশ্মীর শান্তির পথে চলার প্রতিশ্রুতি নিয়েছে। উন্নয়নের সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননা জম্মু ও কাশ্মীর।
বহুকাল পর এই সংসদ ভবন থেকেই রূপান্তকামীদের অধিকার রক্ষার্থে বিল পাশ হয়। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে রূপান্তরকামীদের শিক্ষা, চাকরি, জীবন জীবিকা নির্বাহ যাতে সম্মানের সঙ্গে করতে পারে, এই সংসদ ভবন সেই দিশা দেখিয়েছে।
সাত দশক ধরে আমাদের সব সাংসদ দায়িত্ব সহকারে কাজ করে এসেছেন। এখনও পর্যন্ত লোকসভা এবং রাজ্যসভা মিলিয়ে প্রায় ৪ হাজার আইন পাশ হয়েছে। যখন দরকার পড়েছে জয়েন্ট সেশনের মাধ্যমে আইন তৈরি হয়েছে। এই সেশনের মাধ্যমে দেশের জন্য রণনীতি তৈরি হয়েছে। ব্যাঙ্কিং সার্ভিস বিল থেকে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী বিল পাশ হয়েছে। এই সংসদ ভবন থেকেই মুসলিম বোন-মেয়েদের অধিকার রক্ষার্থে তিন তালাক বিরোধী আইন পাশ হয়েছে। সাহবানু মামলার দরুন দিকভ্রষ্ট হয়েছিল। এই সংসদ সেই ভুল সংশোধন করেছে।
গণেশ চতুর্থী উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। এই শুভদিনে উদ্বোধন হতে চলেছে নতুন সংসদ ভবন। পুরনো সংসদ ভবন এবং সেন্ট্রাল হল আমাদের ভাবনার সঙ্গে জড়িয়ে। এই ভবন আমাদের যেমন চিন্তা করতে শেখায়, তেমনই অনুপ্রেরণা দেয়। এই হল একসময় লাইব্রেরি হিসাবে ব্যবহার করা হত। এরপর সংবিধান তৈরির চর্চা এই ভবনে শুরু হয়। ১৯৪৭ সালে ক্ষমতা হস্তান্তরের সাক্ষী এই ভবন। দেশের তেরঙ্গা, জাতীয় সংগীত নথিভুক্ত হয়েছে এই ভবনের মাধ্যমে।
বক্তৃতার শেষে দেশে শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখারই বার্তা দিলেন অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, “ভারত সমজাতীয় দেশ নয়, বৈচিত্র্যপূর্ণ দেশ। আর এখন সম্প্রীতিপূর্ণ সমাজ গড়ে তোলা জরুরি।”
কবিতার মধ্য দিয়েই পুরানো সংসদ ভবনে শেষ ভাষণ সম্পূর্ণ করেন অধীর চৌধুরী। প্রকৃতির থেকে জীবনবাদ শেখা যায় তুলে ধরে কবিতার পংক্তি তুলে ধরেন অধীর। তিনি বলেন, “ধরিত্রী শিখাতে হামনে সবকো বোঝ ওঠানা/ গগন শিখাতে হামনে উপরা উঠতে যানা/ সুরয কি লাল সে শিখা জগৎ আলোকিত করনা/ চন্দ্র কি কিরণও সে শিখা সবকা পীড়িত হরনা।/ পর্বত নে শিখায়ে হামনে দৃঢ় সংকল্প বানানা/ নদী শিখায়া হামনে আগে বাড়তে যানা/ সাগর কি লেহরা নে শিখা দুখ-সুখ সহে যানা /অর তুফান শিখলাতি হে আপৎ মে না ঘাবড়ানা আর আপোষ সে না টকড়ানা।
দেশকে উন্নত করতে হলে সর্বাগ্রে মানব কল্যাণে জোর দিতে হবে বলে এদিন যৌথ অধিবেশনে বক্তৃতায় জানান লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীর চৌধুরী। তিনি জানান, অর্থনীতির উন্নয়নের পাশাপাশি সকলের জন্য শিক্ষা, চিকিৎসা পরিষেবার মতো প্রধান বিষয়গুলি নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া আয়ের সাম্যতা, পরিকাঠামোর উন্নয়ন, বিনিয়োগে আকর্ষণ বাড়ানো, মানবকল্যাণ, উদ্ভাবনী প্রযুক্তির উন্নয়নের মাধ্যমে ভারত উন্নত দেশে পরিণত হবে। সামগ্রিক উন্নয়ন হলে ও স্থিতিস্থাপকতা এলেই আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারত উন্নত দেশ হিসাবে পরিগণিত হবে।
ভারতকে উন্নত দেশ হওয়ার পথে আয় বৈষম্য প্রধান সমস্যা বলে জানান অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, ভারতের ১০ শতাংশ জনগণের হাতে দেশের সম্পত্তি রয়েছে। বাকিদের মধ্যে অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করে। বেকারত্বের অতিরিক্ত হার, আয়ের বৈষম্যই উন্নত ভারত তৈরিতে বাধা হচ্ছে।
ভারত কতটা উন্নত হয়েছে তা নিয়ে এদিন প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, “আমার ধারণা নেই যে, কীভাবে কোনও আন্তর্জাতিক তকমা ছাড়া কোনও দেশ উন্নীত দেশ হিসাবে পরিগণিত হয়? হিউম্যান ডেভলপমেন্ট ইনডেক্স অনুযায়ী, অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় ভারত অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। বর্তমানে ১৮৯টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ১৩১ নম্বরে।”
সংসদ ভবনের সেন্ট্রাল হলে যৌথ অধিবেশনে বিবৃতি দিতে গিয়ে আবেগঘন হয়ে পড়েন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী। “এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে আমি উন্নীত এবং উচ্ছ্বসিত বোধ করছি যে, গ্যালাক্সির মাঝে নক্ষত্র আলোকিত হয়, তেমনই ঐতিহাসিক পর্ব এবং মুহূর্তগুলি প্রত্যক্ষ করছি। এই সম্মানিত হাউস, যাকে গণপরিষদ বলা হত, এখানে ভারতের সংবিধান প্রণীত হয়েছিল। বাবাসাহেব আম্বেদকর ৩৯৫টি ধারা ও উপধারা সহ সংবিধান রচনা করেন। ঔপনিবেশিক শাসনকাল থেকে স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় পর্যন্ত আমরা সকলে এই সংসদ ভবনের ইতিহাস জানি। এটা কেবল স্থাপত্য নয়, এটা ইতিহাসের সাক্ষী।”
পুরানো সংসদ ভবনের শেষ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর বক্তৃতায় ইতিহাস তুলে ধরে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকেও স্মরণ জানিয়েছেন। এদিন যৌথ অধিবেশনে সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে। একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের যৌথভাবে দেশ, সংবিধান ও গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হবে।’
পুরানো সংসদ ভবনের শেষ যৌথ অধিবেশনে বক্তব্য দিতে গিয়ে আবেগঘন হয়ে পড়লেন কংগ্রেস সাংসদ তথা লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী। ঔপনিবেশিকতার সময় থেকে স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় পর্যন্ত এই সংসদ ভবনের ইতিহাস স্মরণ করেন তিনি। চন্দ্রযান-সহ ইসরোর সাফল্যের জন্য সরকারকে ধন্যবাদও জানান অধীর চৌধুরী। তারপর ভারতকে উন্নত দেশ করে তোলার যে সময়সীমা সরাকার নির্দিষ্ট করে দিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অধীর। তাঁর প্রশ্ন, “২০৪৭-এর আগে কেন ভারত উন্নত রাষ্ট্র হবে না?”
দীর্ঘদিনের সাংসদ হিসাবে যৌথ অধিবেশনের শুরুতেই বক্তব্য রাখেন মেনকা গান্ধী। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর জমানাতেও তিনি সংসদের সদস্য ছিলেন। পুরানো ইতিহাস তুলে ধরে মেনকা গান্ধী বলেন, বিজেপির সাংসদ হিসাবে তিনি গর্বিত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ প্রকল্পে দেশজুড়ে মহিলাদের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে বলে পরিসংখ্যান তুলে ধরেন তিনি।
সংসদের সেন্ট্রাল হলে যৌথ অধিবেশন শুরু হল। উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকর, স্পিকার ওম বিড়লার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজই পেশ হতে পারে মহিলা সংরক্ষণ বিল। অধিবেশনের শুরুতেই বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী। তারপর দীর্ঘদিনের সাংসদ হিসাবে বক্তব্য সংসদের যৌথ অধিবেশনের শুরুতে বক্তব্য রাখলেন মেনকা গান্ধী।
সংসদ ভবনের সেন্ট্রাল হলে প্রবেশ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেন্ট্রাল হলে পৌঁছেই করজোড়ে শাসক, বিরোধী-সহ সকল সাংসদের কাছে গিয়ে অভিবাদন জানান তিনি। সাংসদরাও পাল্টা করজোড়ে প্রধানমন্ত্রীকে অভিবাদন জানান। কয়েকজনকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে করমর্দন করতেও দেখা যায়।
পুরানো সংসদ ভবনের সেন্ট্রাল হলে বসছে যৌথ অধিবেশন। এটাই এই সংসদ ভবনের শেষ অধিবেশন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকর, স্পিকার ওম বিড়াল-সহ শাসক ও বিরোধী দলের সব সাংসদরা এই যৌথ অধিবেশনে উপস্থিত।
পুরানো সংসদ ভবনকে বিদায়লগ্নে প্রধানমন্ত্রী, উপ-রাষ্ট্রপতি, স্পিকার-সহ শাসক ও বিরোধী দলের সকল সাংসদদের গ্রুপ ফটোসেশনের সময়ই ছন্দপতন। ফটোসেশন চলার সময় হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারালেন বিজেপি সাংসদ নরহরি আমিন।
বেলা পৌনে ১০টা নাগাদ পুরানো সংসদ ভবনে প্রবেশ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তারপর স্পিকার ওম বিড়লা, উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকর, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং-সহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, শাসক ও বিরোধী দলের সাংসদদের সঙ্গে বসে ছবি তুললেন প্রধানন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। স্থান সংকট হওয়ায় নীচে বসতেও পিছুপা হননি সাংসদরা।
#WATCH | Delhi: Prime Minister Narendra Modi, Rajya Sabha Chairman and Vice President Jagdeep Dhankhar, Lok Sabha Speaker Om Birla and other Parliamentarians gather for the joint photo session ahead of today’s Parliament Session. pic.twitter.com/burhE7OGX1
— ANI (@ANI) September 19, 2023