নয়া দিল্লি: দেশের ৭২তম স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়েছে ২০২০ সালের ১৫ অগস্ট। আর ক’টা দিন পরেই ৭৩তম স্বাধীনতা দিবস পালিত হবে দেশে। ভারত ৭০ বছরের বেশি স্বাধীন হলেও এখনও স্বাধীন ভারতে কোনও মহিলার ফাঁসি হয়নি। সেই না হওয়াই এ বার হতে চলেছে উত্তর প্রদেশে। সে জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে মথুরা জেলা কারাগার। ৩৮ বছরের শবনম আলিই (Shabnam Ali) স্বাধীন ভারতের প্রথম মহিলা, যার গলায় ফাঁসির দড়ি পরাবেন পবন জল্লাদ।
২০০৮ সালে শবনমের বয়স যখন ২৫, তখন গলা কেটে নিজের বাবা, মা-সহ পরিবারের ৭ সদস্যকে খুন করেছিল শবনম। কারণ হিসেবে উঠে এসেছিল সালিমের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক। সালিম ও শবনম মিলে ১৩ বছর আগে ১৫ এপ্রিল দুধের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে পরিবারের সদস্যদের গলা কেটে খুন করেছিল।
সেই নারকীয় হত্যার সামাজিক প্রভাব এতটাই বেশি ছিল যে, রাতারাতি নিজেদের মেয়ের নাম বদলে দেন শবনম নামের সন্তানের বাবা-মায়েরা। ঠাণ্ডা মাথায় সালিম ও শবনম মিলে তাঁর বাবা, মা, দুই ভাই, ভাইপো ও ১০ মাসের ভাইঝিকে খুন করেছিল। সেই খুনের দায়েই এলাহাবাদ হাই কোর্ট ফাঁসির সাজা শোনায় শবনমকে। সেই রায় পরবর্তীকালে বহাল রেখেছিল সুপ্রিম কোর্টও। এরপর শবনম রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইলেও তা খারিজ করে দেন দেশের সাংবিধানিক প্রধান। তাই প্রথম মহিলা হিসেবে ফাঁসির দিকে এগোচ্ছে শবনম।
শবনমের ডবল এমএ, আর সালিম ষষ্ঠ শ্রেণির পর পড়াশোনা করেনি। দু’জনের প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিতে চায়নি পরিবার। একে অপরকে বিয়ে করার জন্যই আমরোহা জেলায় নিজের সম্পূর্ণ পরিবারকে শেষ করতে পিছপা হয়নি শবনম।
শবনমের ফাঁসির সাজায় খুশি তার কাকু ও কাকিমা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শবনমের কাকু জানিয়েছেন, আদালতের রায়ে তিনি খুশি। যখন এই নারকীয় হত্যাকাণ্ড হয়েছিল, তখন তাঁরা বাড়িতে ছিলেন না। রাত ২টো নাগাদ শবনমের বাড়িতে গিয়ে তাঁরা দেখেন চারদিকে রক্ত। আর নলি কাটা মৃতদেহ। ফাঁসির পর শবনমের মৃতদেহ পর্যন্ত ফেরত নেবেন না বলে জানিয়েছেন তার কাকু-কাকিমা।
আরও একটি বেনজির ঘটনায় ফাঁসির দড়ি পরাবেন জল্লাদ পবন। নির্ভয়াকাণ্ডে গত বছর ৪ অভিযুক্তকে ফাঁসির দড়ি পরিয়েছিলেন পবন জল্লাদ। এ বারও সালিম ও শবনমকে ফাঁসিকাঠে ঝোলাবেন তিনি। পবন জানিয়েছেন, মথুরা জেল কর্তৃপক্ষ তাঁকে ফাঁসির জায়গা দেখে আসতে বলেছেন। এখনও ফাঁসির দিন স্থির হয়নি। তবে পবন জানিয়েছেন, তিনি এই ফাঁসির জন্যও সম্পূর্ণ প্রস্তুত।