ইম্ফল: চিত্রাঙ্গদার রাজ্যে এখন ভারী বুটের শব্দ ধ্বনিত হচ্ছে। অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি মণিপুরে (Manipur Violence)। উত্তর পূর্বের এই রাজ্যে কুকি ও মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে অশান্তিকে কেন্দ্র করে হিংসা ছড়িয়ে পড়েছে গোটা রাজ্যেই। ৩৫৫ ধারা জারি করে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিজেদের হাতে নিয়েছে কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে মণিপুর ছেড়ে আশপাশের রাজ্যে আশ্রয় নিচ্ছেন বহু স্থানীয় বাসিন্দারা। অগ্নিগর্ভ মণিপুর থেকে বাড়ি ফেরার হিড়িক পড়ে গিয়েছে সেখানে বসবাসকারী ভিন রাজ্যের বাসিন্দাদের মধ্যেও। বিভিন্ন রাজ্য সরকার উদ্যোগ নিয়ে মণিপুর থেকে বাসিন্দাদের ফিরিয়ে আনছে। এই পরিস্থিতিতে ইম্ফল থেকে বিভিন্ন রুটের বিমানের টিকিটের দাম উঠল আকাশছোঁয়া। ইম্ফল-কলকাতা বিমানের একমুখী যাত্রার ভাড়াই সাত থেকে আটগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইম্ফল থেকে অন্যান্য শহরের বিমানের বেড়েছে বহুগুণ
মণিপুরের ইম্ফল থেকে কলকাতার বিমানের টিকিটের ভাড়া ৮ থেকে ১০ শতাংশ বেড়েছে। এমনি সময় ইম্ফল থেকে কলকাতার একমুখী বিমানের টিকিটের ভাড়া থাকে ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা। সেই দাম এখন বেড়ে হয়েছে ২৫ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা। একইসঙ্গে ইম্ফল থেকে গুয়াহাটির বিমানের ভাড়া বেড়ে হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। বিমানের ভাড়া বৃদ্ধির কারণে ব্যাপক সমস্যায় পড়েছেন যাত্রীরা।
এদিকে ভাড়া বৃদ্ধি ছাড়াও আরও এক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন মণিপুরে আটকে থাকা কলকাতার বাসিন্দারা। ইম্ফল-কলকাতার মধ্যে বিমান পরিষেবা প্রদানকারী উড়ান সংস্থা জানিয়েছে, তাদের বিমানের আর কোনও টিকিট নেই। বিমানবন্দরের বাইরেই লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন হাজার হাজার যাত্রী। আগামী কয়েকদিনও পরিস্থিতি এরকমই থাকবে বলে জানানো হয়েছে। তবে এত চাহিদা দেখে ইম্ফল-কলকাতা রুটে বেশি সংখ্যক বিমান চালানোর পরিকল্পনা করেছে কর্তৃপক্ষ। এদিকে এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার তরফে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ৪ ও ৬ মে-র মধ্যে ইম্ফল বিমানবন্দর থেকে মোট ১০৮ টি বিমান চালানো হয়েছে। শনিবার ইম্ফল থেকে কলকাতা পর্যন্ত ইন্ডিগো দুটি বিশেষ বিমান চালিয়েছে। আর রবিবার একটি অতিরিক্ত এটিআর বিমান চালানো হয়েছে। প্রতিটি বিমানই একেবারে ঠাসা ছিল।
১১ টি জেলায় আংশিকভাবে কার্ফু প্রত্যাহার করা হয়েছে
মণিপুরে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে পরিস্থিতি। সোমবার ১১ টি জেলায় আংশিকভাবে কার্ফু প্রত্যাহার করা হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্য প্রশাসন হিংসা বিজড়িত মণিপুর থেকে নিজেদের রাজ্যবাসীদের ফিরিয়ে আনতে তৎপর হয়েছে। এদিকে তৎপর হয়েছে বাংলার প্রশাসন। নবান্নে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এই কন্ট্রোলরুমের নম্বর ০৩৩ ২২১৪৩৫২৬ / ২২৫৩৫১৮৫। এখনও পর্যন্ত ১৮৫ জন নবান্নের কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করেছেন বলে জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।