আগরতলা : ত্রিপুরার রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নয়া মোড়। উত্তর-পূর্বের এই ভারতীয় জনতা পার্টি শাসিত রাজ্য় নতুন মুখ্যমন্ত্রী পেতে চলেছে। ত্রিপুরার নতুন মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন মানিক সাহা। আজ শনিবার ইস্তফা দেন ত্রিপুরার বিজেপি মুখ্য়মন্ত্রী বিপ্লব দেব। এরপরই তড়িঘড়ি বৈঠকে বসেন বিজেপি বিধায়করা। ত্রিপুরার নয়া মুখ্যমন্ত্রীর তালিকায় ছিলেন বর্তমান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক ও জিষ্ণু দেববর্মাও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মুখ্য়মন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়া হল বিজেপির রাজ্য় সভাপতি ও রাজ্য়সভার সাংসদ মানিক সাহাকে। সূত্রের খবর, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে তাঁর ভাবমূর্তি খুব ভাল। সেই ভাবমূর্তির কারণেই মুখ্য়মন্ত্রী হওয়ার ঘোড়দৌড়ে বাকি দু’জনকে পিছনে ফেলে গদি পেলেন তিনিই। তবে জিষ্ণু দেববর্মা নিজেই মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব খারিজ করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
কে এই মানিক সাহা?
৬৯ বছর বয়সী মানিক সাহা একজন ডেন্টাল সার্জারির অধ্যাপক। কাগজে-কলমে ত্রিপুরার ছেলে এই মানিক সাহা। কংগ্রেসের হাত ধরে শুরু হয়েছিল রাজনৈতিক জীবন। তবে কংগ্রেসের হাত ধরে তাঁর রাজনৈতিক যাত্রা বেশিদিন চলেনি। তিনি কংগ্রেস ছেড়ে দেন। হাত ছেড়ে পদ্মে অভিষেক হয় তাঁর। ২০১৬ সালে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। বিপ্লব দেবের হাত ধরেই তিনি বিজেপিতে আসেন। এরপর সেই বিপ্লব দেবের গদিতেই বসতে চলেছেন মানিক সাহা। গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েই খুব তাড়াতাড়ি রাজ্য-কেন্দ্রীয় সব নেতৃত্বের মন জয় করেছিলেন তিনি। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা মন কেড়েছিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্বদের। তাই অল্প সময়েই পান দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। ২০২০ সালে তাঁকে রাজ্য সভাপতি করা হয়। তিনি এ বছর রাজ্য সভার সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি ত্রিপুরা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিও।
মানিক সাহাকে কেন ত্রিপুরার মুখ্য়মন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়া হল?
উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে তৃণমূল পা রাখার পর থেকেই বিপ্লব দেব চালিত প্রশাসনের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। বিপ্লব দেবের প্রশাসনিক অসফলতা ও সরকারের কঙ্কালসাড় ছবি প্রকাশ্যে আসতেই বিজেপিকে অস্বস্তিতে ফেলেছিল। তাই নির্বাচনের আগে রাজ্যে বিজেপির মুখ বদলের প্রয়োজন পড়েছিল। ত্রিপুরায় তৃণমূলের পদার্পণে কিছুটা ভয় পেয়েছিল বিজেপি প্রশাসন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ বদল করে নিজেদের ভাবমূর্তি পালিশ করতে চাইছে বিজেপি। সেই উদ্দেশ্যে মানিক সাহাকেই নির্বাচন করার পিছনে রয়েছে কিছু নির্দিষ্ট কারণ।