মুম্বই: মহারাষ্ট্রে রাজনৈতিক নাটকের তৃতীয় মরসুম চলছে। প্রথম মরসুমে দেখা গিয়েছিল শিবসেনার দু-টুকরো হওয়া। দ্বিতীয় মরসুমে দেখা গিয়েছিল অজিত পওয়ারের বিদ্রোহ। তৃতীয় মরসুমে রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছে মহারাষ্ট্র কংগ্রেসে। সোমবার, এই নাটকের এক বড় পর্ব ঘটে গেল। কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতা অশোক চভন। বর্তমানে তিনি সাংসদ পদে রয়েছেন। কংগ্রেস ছাড়লেও, সাংসদ পদে ইস্তফা দেবেন কিনা, সেই বিষয়টি স্পষ্ট নয়। সামনেই লোকসভা নির্বাচন, তারপর মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচন। তার মাত্র কয়েক মাস আগে, এই ঘটনা কংগ্রেস তথা মহা বিকাশ আগারি জোটের পক্ষে নিঃসন্দেহে বড় ধাক্কা।
এদিন প্রথমে বিধানসভার স্পিকার রাহুল নারওয়েকরের সঙ্গে দেখা করেন অশোক চভন। তারপর, মহারাষ্ট্র প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নানা পাটোলেকে চিঠি দিয়ে তাঁর দলত্যাগের কথা জানান। গত কয়েকদিনে প্রথমে মিলিন্দ দেওরা, তারপর বাবা সিদ্দিকি কংগ্রেস ত্যাগ করেছেন। মিলিন্দ যোগ দিয়েছেন একনাথ শিন্ডের শিবসেনায়। আর বাবা সিদ্দিকি গিয়েছেন অজিত পওয়ারের এনসিপি-তে। শোনা যাচ্ছে অশোক চভন শিগগিরই তিনি বিজেপিতে যোগ দেবেন।
এই বিষয়ে মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফড়নভিস বলেছেন, “বিরোধী দলের বেশ কয়েকজন নেতা বিজেপিতে যোগ দিতে চান। অনেক কংগ্রেস নেতাই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। দলের মধ্যে তাঁদের দমবন্ধ লাগছে। আগামিদিনে কী হয় দেখুন।” অশোক চভনের পিছনে পিছনে সুভাষ ধোতে, জিতেশ অন্তরপুরকর এবং অমর রাজুরকর নামে আরও তিন কংগ্রেস বিধায়কও বিজেপিতে যোগ দিতে পরেন বলে শোনা যাচ্ছে।
নান্দেদ জেলার বাসিন্দা অশোক চভন মারাঠাওয়াড়া অঞ্চলের অত্যন্ত প্রভাবশালী নেতা। তাঁর বাবা, প্রয়াত শঙ্কররাও চভনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। ২০০৮-এ মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন অশোক। ২০১০ সালে এক আবাসন কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠায় মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। ২০১৪ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত তিনি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিও ছিলেন। নির্বাচনের মুখে এই মাপের একজন নেতার প্রস্থান রাজ্যে কংগ্রেসকে অনেকটাই পিছনে ঠেলে দিল। মহারাষ্ট্রে একের পর এক কংগ্রেস নেতাদের দলত্যাগের কারণ কী? রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ বলছে, লোকসভা নির্বাচনে শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে) এবং এনসিপি (শরদ পওয়ার)-এর সঙ্গে আসন ভাগাভাগির সিদ্ধান্তে, অনেক কংগ্রেস নেতাই অসন্তুষ্ট।