মুম্বই: কংগ্রেসের (Congress) অন্তর্দ্বন্দ্ব যেন মিটতেই চায় না। একদিকে যেখানে একের পর এক শীর্ষ নেতারা দল ছাড়ছেন, সেখানেই সরব হচ্ছেন কংগ্রেসের ছোট-বড় নেতারাও। এবার দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন কংগ্রেস নেতা তথা মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চাভন(Prithviraj Chavan)। বৃহস্পতিবারই তিনি দাবি করেন যে, দলের শীর্ষ নেতা রাহুল গান্ধী(Rahul Gandhi)-র সঙ্গে বিগত চার বছরে তাঁর দেখা হয়নি।
বিক্ষুব্ধ নেতাদের মধ্যে অন্যতম মুখ মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। এর আগেও তিনি একাধিকবার দলের অন্দরে সংস্কারের দাবি করেছিলেন। এবার তিনি দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধেই মুখ খুললেন। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, “সম্প্রতি উদয়পুরে যে চিন্তন শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল, তাতে কোনও চিন্তন ছিল না।”
দলের শীর্ষনেতাদের সঙ্গে সাক্ষাতের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যখনই দিল্লিতে যাই, আমি মাঝেমধ্যেই ডঃ মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে দেখা করি। কিন্তু ওনার স্বাস্থ্য় আর আগের মতো নেই। তারপরও উনি বরাবর স্বাগত জানিয়েছেন এবং কথা বলতে রাজি থাকেন। সনিয়া গান্ধীর সঙ্গেও সময় নিয়ে আমি দেখা করেছি, কিন্তু রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে আমার সাক্ষাৎ হয়নি। মনে হয় বিগত চার বছরে একবারও দেখা হয়নি ওনার সঙ্গে। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে সর্বদা যোগাযোগ করার বা তাদের সঙ্গে কথা বলার তেমন সুযোগ পাওয়া যায় না। এই নিয়ে আগেও অভিযোগ উঠেছে।”
সম্প্রতিই উদয়পুরের চিন্তন শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল কংগ্রেসের তরফে। কংগ্রেসের জি-২৩ নেতারা বিগত কয়েক বছর ধরেই দলের অন্দরে যে সংস্কারের দাবি তুলে আসছেন, তা নিয়েই আলোচনা করা হয়েছিল এই বৈঠকে, এমনটাই দাবি কংগ্রেসের। তবে বৃহস্পতিবার দলের সেই চিন্তন শিবিরকেই কটাক্ষ করে পৃথ্বীরাজ চাভন বলেন, “দলের অন্দরে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য কংগ্রেসের সভাপতি চিন্তন শিবিরের আয়োজন করেছিলেন। কিন্তু অত্য়ন্ত বিশ্বস্ত একজন স্থির করেন যে চিন্তন বা দলের পর্যালোচনা করার প্রয়োজন নেই। তাই উদয়পুরের বৈঠক নব সংকল্প শিবিরই ছিল। দলের মনে হয়েছে ময়নাতদন্তের কোনও প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র ভবিষ্যতের দিকেই নজর দেওয়া জরুরি।”
তিনি বলেন, “দলের অন্দরে সত্যনিষ্ঠভাবে নজরদারির প্রয়োজন। কাউকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য নয়, যাতে ভুলগুলির পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্য এই পর্যালোচনার প্রয়োজন। অসম ও কেরলের বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর দলের পারফর্ম্যান্স খতিয়ে দেখার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু সেই কমিটির রিপোর্ট আলমারিবন্দি হয়েই রয়ে গিয়েছে।”
সম্প্রতিই প্রবীণ নেতা কপিল সিবলের কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দেওয়ার প্রসঙ্গেও তিনি জানান যে, কপিল সিবলের মনে হয়েছিল শীর্ষ নেতৃত্বরা যথাযথ ও সত্যনিষ্ঠ পরামর্শ পাচ্ছেন না। শীর্ষ নেতৃত্বের পছন্দের কথা মাথায় রেখেই পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমরা যদি ২০২৪ সালে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে হারাতে চাই, তবে ১২টি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে দারুণ ফল করতেই হবে। সমমনস্ক দলগুলিকেও একজোট করতেই হবে।”