নয়া দিল্লি: প্রথম থেকেই পাল্লা ভারী ছিল বিজেপি শাসিত এনডিএ জোটের। দিল্লি অধ্যাদেশ বিল (Delhi Ordinance Bill) পাশ করাতে কোনও সমস্যা হবে না, তা জানাই ছিল। তাও শেষ চেষ্টা করেছিল বিরোধীরা। রাজ্যসভায় দিল্লি অধ্যাদেশ বিল পাশ রুখতে তাই সমস্ত সাংসদদের পাশে চেয়েছিল বিরোধী জোট ইন্ডিয়া (INDIA)। সেই কারণেই কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টির তরফে হুইপ জারি করাও হয়েছিল। সেই হুইপ মেনেই সোমবার সংসদে হাজির হয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা কংগ্রেস সাংসদ মনমোহন সিং (Manmohan Singh)। হুইলচেয়ারে বসেই তিনি অধিবেশনে অংশ নেন। অসুস্থ শরীর নিয়েও প্রবীণ নেতাকে সংসদে টেনে আনা নিয়েও এবার শুরু হল তরজা।
দিল্লি অধ্যাদেশ বিল নিয়ে আলোচনার পর সোমবার তা পাশ করানো হয় রাজ্য়সভায়। ভোটাভুটিতে বিলের সমর্থনে ১৩১টি ভোট পড়ে, বিলের বিরোধিতা করে ভোট দেন ১০২ জন সাংসদ। গতকালের অধিবেশনে যাতে রাজ্যসভার সমস্ত সাংসদ উপস্থিত থাকেন, তার জন্য হুইপ জারি করেছিল কংগ্রেস। দলের নির্দেশ মেনেই শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও অধিবেশনে অংশ নেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। একদিকে যেখানে বিরোধী দলনেতারা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী আসায় ধন্যবাদ জানিয়েছেন, সেখানেই বিজেপির তরফে কংগ্রেসের তীব্র নিন্দা করা হয়েছে এই শরীর নিয়েও মনমোহন সিংকে সংসদে টেনে নিয়ে আসার জন্য।
৯০ বছর বয়সী প্রবীণ কংগ্রেস নেতাকে ধন্যবাদ জানিয়ে আম আদমি পার্টি সাংসদ রাঘব চাড্ডা এক্স (টুইটারের নতুন নাম) – এ লেখেন, “আজ রাজ্যসভায় ডঃ মনমোহন সিং অখণ্ডতার স্তম্ভ হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ করে এই কালা অধ্য়াদেশের বিরোধিতা করার জন্য তিনি এসেছিলেন। গণতন্ত্র ও সংবিধানের প্রতি ওঁর অটুট প্রতিশ্রুতি আমাদের কাছে অনুপ্রেরণা। মূল্যবান এই সমর্থনের জন্য অন্তর থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”
এদিকে, বিজেপির তরফে মনমোহন সিংকে সংসদে আনা নিয়ে কংগ্রেসের তীব্র সমালোচনা করা হয়। বিজেপির তরফে লেখা হয়, “কংগ্রেসের এই পাগলামি গোটা দেশ মনে রাখবে। এই শারীরিক অবস্থা নিয়েও কংগ্রেস প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে রাত অবধি সংসদে বসিয়ে রাখল শুধুমাত্র নিজেদের অশুভ আতাঁতকে অটুট রাখার জন্য! অত্যন্ত লজ্জাজনক ঘটনা।”
বিজেপির এই আক্রমণের পাল্টা জবাব দেয় কংগ্রেসও। কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়া ও ডিজিটাল প্ল্য়াটফর্মের চেয়ারপার্সন সুপ্রিয়া শ্রীনাতে বলেন, “এটাই ডক্টর সাহেবের গণতন্ত্রের প্রতি নিবেদন যে তিনি এখনও দেশের সংবিধানের প্রতি আস্থা রেখেছেন। বিজেপি যতই প্রবীণ নেতাদের মানসিক কোমায় পাঠিয়ে দিক না কেন, ওঁরা আমাদের অনুপ্রেরণা, সাহস হয়ে থাকবেন। আপনাদের প্রভুকে কিছু শিখতে বলুন। পালিয়ে বেড়াবেন না।”
প্রসঙ্গত, শুধু মনমোহন সিং-ই নন, অসুস্থ শরীর নিয়ে গতকাল সংসদে আসেন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার নেতা শিবু সোরেনও।