‘সঠিক মানুষ এ বার সঠিক দলে এলেন’, দীনেশকে পদ্ম পতাকা দিয়ে মন্তব্য নাড্ডার
গত ১২ ফেব্রুয়ারি নাটকীয়ভাবে রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেন তৃণমূল নেতা দীনেশ ত্রিবেদী।
নয়া দিল্লি: বিজেপিতে যোগ দিলেন দীনেশ ত্রিবেদী। শনিবার দিল্লির বিজেপি সদর কার্যালয়ে গিয়ে যোগ দেন তিনি। তাঁর হাতে পদ্ম পতাকা তুলে দিয়ে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা বলেন, “এতদিনে সঠিক মানুষ সঠিক দলে এলেন।” পাল্টা তিনিও যে কতটা আপ্লুত, তা নিজের বক্তব্যের প্রতি ছত্রে তুলে ধরেন দীনেশ। শুরুতেই বলেন, “এই সময়ের অপেক্ষায় ছিলাম আমি। আগে পরিবারের সেবা করা হতো। এখন জনতার সেবা করতেই বিজেপিতে যোগ।”
বিজেপিতে যোগ দিয়েই তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভের সুর শোনা যায় দীনেশ ত্রিবেদীর গলায়। পুরনো দলে যে তাঁর কতটা ‘দমবন্ধকর’ পরিস্থিতি ছিল তা বোঝাতে দীনেশ বলেন, “আমার কাছে দেশ আগে। পরিবার মানে মানুষের পরিবার। মানুষের জন্য আমি সবসময় রয়েছি। কিন্তু একটা সময় আমার কাছে নাগাড়ে ফোন আসত, ‘আপনাদের লোক এসে টাকা চাইছে, মারধর করছে।’ এত হিংসা, এত দুর্নীতি। অথচ ওরা সংস্কৃতির কথা বলে। এগুলি আপনাদের শোভা পায় না।” এরপরই বিধানসভা ভোটে বিজেপির জয় নিয়ে প্রত্যয়ী দীনেশ বলেন, “বাংলার মানুষ খুশি এ বার আসল পরিবর্তন হবে।”
আরও পড়ুন: গোসাবায় বোমা বিস্ফোরণ, ভস্মীভূত বাড়ি, জখম ৬ বিজেপি কর্মী
গত ১২ ফেব্রুয়ারি নাটকীয়ভাবে রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেন প্রাক্তন তৃণমূল নেতা দীনেশ ত্রিবেদী। সে দিন রাজ্যসভায় বক্তব্য রাখতে উঠেই পদত্যাগের ঘোষণা করেন তিনি। অধিবেশন চলাকালীন বক্তব্য রাখতে গিয়েই তিনি বলেন, “আমি বেশি সময় নেব না। দুই মিনিটের মধ্যেই আমার বক্তব্য শেষ করব। আমি অন্তরাত্মার ডাক অনুসরণ করে এগোচ্ছি। আমার মতে কাজ না করার থেকে পদত্যাগ করাই শ্রেয়। এখানে থেকে কোনও কাজ করা যাচ্ছে না, দম বন্ধ হয়ে আসছে।” তাই তিনি সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।
২০০২ থেকে ২০০৮ সাল অবধি রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ ছিলেন দীনেশ ত্রিবেদী। এরপর ২০০৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে বারাকপুর থেকে প্রার্থী হন এবং জয়ী হন। সেই বছরই কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হন দীনেশ। ২০১১ সালে দায়িত্ব পান রেলমন্ত্রীর। কিন্তু রেলের ভাড়া বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে ওই বছরই রেলমন্ত্রীর দায়িত্ব ছাড়তে হয় তাঁকে। গত লোকসভা নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর তৃণমূল তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠায়। কিন্তু কোনওভাবেই তৃণমূলে তিনি থাকতে পারছিলেন না বলেই দাবি বর্ষীয়ান এই নেতার। এরপরই ‘ভারতের জনতার পার্টি’তে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
সূত্রের খবর, রবিবার নরেন্দ্র মোদীর ব্রিগেডে উপস্থিত থাকতে পারেন তিনি। জল্পনা রয়েছে, একুশের বিধানসভায় তাঁর বিজেপি প্রার্থী হওয়া নিয়েও। শোনা যাচ্ছে, ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের মুখ করেই তাঁকে রাজনীতির নয়া ইনিংসে নামাতে চায় গেরুয়া শিবির।