লখনউ: সবাই জানত আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি। কিন্তু ভরা সংসার থাকতেও কেন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সোনালি, তা ঠাওর করে উঠতে পারছিলেন না পাড়া-প্রতিবেশীরা। মেয়ের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছিলেন বাবা-মা। বছর কয়েক বিয়ে। চার বছরের সন্তানও রয়েছে। কিন্তু তারপরেও যে কেন এমন সিদ্ধান্ত নিল সে, ধরতে পারছিলেন না কেউই।
পথ দেখাল সোনালির-কন্যা। মা যে আত্মঘাতী হয়নি, তা বুঝিয়ে দিল সে। ঘটনা উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসির। সোমবার, বছর ২৭-এর সোনালি বুধোলিয়ার বাড়ির লোককে ফোন করে তাঁর স্বামী জানান যে স্ত্রী গলায় দড়ি আত্মহত্যা করেছে। যথারীতি ভাবেই জামাইয়ের মুখে এমন কথা শুনে পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যায় সোনালির বাবা-মায়ের। বুঝতেই পারেন না যে কীভাবে এমনটা ঘটে গেল।
আত্মহত্যার ঘটনা হওয়ায় স্বাভাবিক দায়ের হয় পুলিশি অভিযোগ। কেন আত্মঘাতী হলেন মহিলা, তা তদন্ত করে দেখতে গিয়ে সোনালির চার বছরের মেয়ের হাত ধরে ঘটনায় বড় মোড় পেয়ে যায় পুলিশ।
মায়ের মুখাগ্নির আগেই পুলিশের কাছে ‘আসল সত্যিটা’ বলে দেয় সেই খুদে। পুলিশকে সে জানায়, ‘মা মরেনি, মা’কে মেরে ফেলা হয়েছে। বাবা মা’কে মেরে ফেলেছে। তারপর ঝুলিয়ে দিয়েছে।’ শুধু মুখে বলেই ক্ষান্ত হয়নি সে। সেই দিনের নিজের চোখে দেখা ঘটনা খাতায় আঁকিবুকি কেটে তৈরি করে রেখেছিল চার বছরের দর্শিতা। পুলিশ আসতেই তা গিয়ে তাদের হাতে তুলে দেয় সে।
এরপরই তদন্ত নামে পুলিশ। জানা যায়, বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে মুখ বুজে স্বামীর অত্যাচার সহ্য করছিলেন সোনালি। ২০১৯ সালে তাদের বিয়ে হয়। সেই সময়ই পণ হিসাবে সোনালির বাবার কাছ থেকে ২০ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন অভিযুক্ত। কিন্তু তাতেও ক্ষিদে মেটেনি তার। নানা সময়েই নানা দাবি-দাওয়া করে যেত সে। এমনকি শ্বশুরের টাকায় গাড়িও কিনতে চেয়েছিলেন অভিযুক্ত। কিন্তু না মেলায়, এরপর থেকে নিরবে নিভৃতে ঘরে কোণে টেনে চলত স্ত্রীয়ের উপর অত্যাচার।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিস্থিতি আরও জটিল হয়, সোনালির মেয়ে হলে। অভিযুক্ত আশা করেছিলেন তাদের ছেলে হবে। কিন্তু মেয়ে হওয়ায় হাসপাতালেই নাকি স্ত্রী-কে ছেড়ে চলে যান তিনি। সেই মুহূর্তে সোনালির বাবা হাসপাতালে এসে টাকা মিটিয়ে মেয়ে বাড়ি নিয়ে যায়। বিয়ের পর থেকে নানাভাবে চলত, যা শেষমেশ এসে থামল খুনে।