যৌন হেনস্থা নিয়ে বিতর্কিত রায়, পুষ্প গনেড়িওয়ালার মেয়াদ কমল এক বছর

tista roychowdhury | Edited By: arunava roy

Feb 13, 2021 | 2:19 PM

ত্বকে সঙ্গে ত্বকের সংস্পর্শ না তৈরি হলে যৌন হেনস্থা নয়, এই মন্তব্য করে বিতর্কের মুখে পড়েন এই বিচারপতি

যৌন হেনস্থা নিয়ে বিতর্কিত রায়, পুষ্প গনেড়িওয়ালার মেয়াদ কমল এক বছর

Follow Us

নয়া দিল্লি: পরপর দু’টি বিতর্কিত রায় দিয়ে আগেই সুপ্রিম কোর্টের কোপে পড়েছিলেন বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি পুষ্প গনেড়িওয়ালা। তাঁকে স্থায়ী বিচারপতির পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত থেকে আগেই সরে এসেছিল সুপ্রিম কোর্ট। এ বার তাঁর অস্থায়ী অতিরিক্ত দু’বছরের পরিবর্তে কেবল এক বছরের জন্য মেয়াদ বাড়ানো হল তাঁর।

গত মাসে ওই বিচারপতির স্থায়ী হওয়ার প্রক্রিয়া আটকে দেওয়া হয়। শিশু যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ আইন বা পকসো আইন নিয়ে পরপর দুটি ‘বিতর্কিত’ রায় দেওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেয় সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম। বম্বে হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি পুষ্প গনেড়িওয়ালাকে স্থায়ী বিচারপতির পদ দেওয়ার জন্য কেন্দ্রকে সুপারিশ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু ১৯ জানুয়ারি একটি মামলায় তাঁর মন্তব্যের পর তাঁর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক সিদ্ধান্ত নেয় শীর্ষ আদালত। তাঁকে আরও ২ বছর অস্থায়ী পদে থাকার কথা বলা হয়েছিল। তবে, সেই মেয়াদ কমিয়ে এ বার এক বছর করা হল। অর্থাৎ আরও এক বছর তাঁকে অস্থায়ী পদে থাকতে হবে।

আরও পড়ুন: মাসের পর পর মাস চিকিৎসা, হাজারো টেস্ট, জানাই গেল না কী হয়েছে ৭১ বছরের বৃদ্ধার

নাগপুর বেঞ্চের বিচারপতি গনেড়িওয়ালা বলেছিলেন, “ত্বক স্পর্শ না করে কোনও নাবালিকার বুকে হাত দেওয়া হলে তা নাকি পকসো আইনে যৌন নিগ্রহ হিসেবে বিবেচিত হবে না। অর্থাৎ ত্বকে-ত্বকে সংস্পর্শ না হলে তা পকসো আইনে বিচারাধীন নয়।” বম্বে হাইকোর্টের এই পর্যবেক্ষণ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। পর্যবেক্ষণের জেরে পকসো আইনের শাস্তি থেকে অব্যাহতি পায় ৩৯ বছর বয়সী অভিযুক্ত। এরপরই সুপ্রিম কোর্ট নাগপুরের পর্যবেক্ষণে স্থগিতাদেশ জারি করে। অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল বলেছিলেন, “হাইকোর্টের এই পর্যবেক্ষণ বিপজ্জনক নজির সৃষ্টি হতে পারে।”

আরও পড়ুন: রণনীতি যেন কাকপক্ষ্মীও না টের পায়, পাঁচতারা হোটেল থেকে বিজেপির ভোট পরিচালনা

শুধুমাত্র ১৯ জানুয়ারিই নয়, ২৮ জানুয়ারি ফের একটি মামলার শুনানিতে বিতর্কিত মন্তব্য করতে শোনা যায় বিচারপতি পুষ্প গনেড়িওয়ালা। এক কিশোরীর যৌন নির্যাতনের মামলায় বিচারপতির মন্তব্য নিয়ে ঘিরে তৈরি হয় বিতর্ক। বিচারপতি পুষ্প গনেড়িওয়ালা বলেছিলেন, “পকসো আইনে যৌন নিগ্রহের সংজ্ঞা হিসেবে বলা হয়েছে যদি যৌন ইচ্ছা নিয়ে শিশুদের গোপনাঙ্গ স্পর্শ করা হয় তবেই তা যৌন নির্যাতনের আওতায় পড়বে।” তাঁর মতে, সংজ্ঞা অনুযায়ী যৌন উদ্দেশ্যে শারীরিক স্পর্শ করলে তবেই তা যৌন নিগ্রহের আওতায় পড়বে। এ ক্ষেত্রে যেহেতু কেবল অভিযোগকারীর হাত ধরা হয়েছে বা প্যান্টের চেন খোলা হয়েছে, কোনও শারীরিক স্পর্শ হয়নি, তা পকসো আইনে যৌন নির্যাতনের অধীনে পড়ে না। তাঁর এই পর্যবেক্ষণের পর চাপ বাড়ে আরও। অবশেষে বিচারপতির বিরুদ্ধে কড়া সিদ্ধান্ত নিতে হয় সুপ্রিম কোর্টকে।

সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের কলেজিয়াম হাইকোর্টের বিচারপতিদের নিয়োগ-সহ অন্যান্য বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে, যার মাথায় রয়েছেন প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে। বিতর্কিত রায়ের পরও ওই বিচারপতিকে বম্বে হাইকোর্টে স্থায়ী পদ দেওয়ার সুপারিশ করে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম। এরপর বিরোধিতা শুরু হয়। গত শুক্রবার তাঁর অস্থায়ী পদের মেয়াদ শেষ হয়েছিল। শনিবার থেকে ফের নতুন করে তাঁর অস্থায়ী হওয়ার মেয়াদ শুরু হল।

Next Article