নয়া দিল্লি: আমাদের চারপাশে এমন অনেক ঘটনাই ঘটে যার নির্দিষ্ট কোনও কারণ বা ব্যাখ্যা হয় না। অনেক মানুষের মধ্যেই এমন কিছু থাকে যাঁর কারণ খুঁজে বের করা মুশকিল। যৌনতা পছন্দ করেন, আমাদের আশেপাশেই হয়ত এমন অনেকে আছেন। কিন্তু বিবাহিত হওয়ার পরেও একের পর এক সঙ্গিনীর সঙ্গে যৌনতায় উন্মত্ত হওয়ার বাসনা হয়তো খুব কম মানুষেরই থাকে। এমনই এক বদভ্যাসের চড়া মাশুল দিলেন দিল্লির এক ব্যক্তি। রাজধানীর ২৮ বছর বয়সী এক মহিলাকে তাঁর স্বামীকে হত্যা করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্ত মহিলার নাম ছন্দা কলা বলেই জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিলার স্বামীর দু’জন স্ত্রী ছিল। ভাড়াটে খুনি জুম্মানকে ‘সুপারি’ দিয়েই নিজের স্বামীকে হত্যা করিয়েছে ছন্দা, এমনটাই জানা গিয়েছে। অভিযুক্ত ভাড়াটে খুনি তিস হাজারে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছে।
দিল্লি পুলিশের ডিসি সাউথ সমীর শর্মা জানিয়েছেন, ১৮ মে দিল্লির হলি কনভেন্ট স্কুল এলাকা থেকে তাদের কাছে একটি ফোন এসেছিল। সেই ফোনেই ঘটনার কথা জানানো হয়। খবর পাওয়া সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখতে পায়, ওই ব্যক্তি রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানায় পড়ে রয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে নিহত ব্যক্তির নাম বীর বাহাদুর বর্মা। পুলিশের তরফে ওই ব্যক্তিকে হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেছিল চিকিৎসকরা। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ছন্দার সঙ্গে তাঁর স্বামীর নিয়মিত ঝগড়া হত। পুলিশি জেরার মুখে ছন্দার বক্তব্যে অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছিল। প্রথমে সে ডাকাতির কথা বলতে থাকে, এবং পুলিশকে জানায় লুটের উদ্দেশ্যেই তাঁর স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে।
তদন্তকারী আধিকারিকরা ছন্দার বক্তব্যে সন্তুষ্ট না হওয়া, ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়েছিল। সিসিটিভি ফুটেজে ভাড়াটে খুনি জুম্মানকে ওই এলাকায় সন্দেহজনকভাবে দেখতে পাওয়া গিয়েছিল। ছন্দার ফোনের কল রেকর্ডিং খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে যে ছন্দার সঙ্গে জুম্মানের যোগাযোগ ছিল। প্রমাণ সহ ছন্দাকে জেরা করতে স্বামাীর ‘সুপারি’ দেওয়ার কথা স্বীকার করে সে। ছন্দা পুলিশ আধিকারিকদের জানিয়েছে, ১৩-১৪ বছর আগে সে একটি জামাকাপড়ের দোকানে কাজ করত, সেখানে বীর বাহাদুর অসংখ্য বার তাঁর শ্লীলতাহানি করেছিলেন, কিন্তু আর্থিক দূরাবস্থার কারণে সে কোনওদিন প্রতিবাদ করতে পারেনি। বীর বাহাদুর বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে বিয়ে করতে বাধ্য হয় ছন্দা। বিয়ের পর সে জানতে পারে, আরও কয়েকজন মহিলার সঙ্গে তাঁর স্বামীর শারীরিক সম্পর্ক রয়েছে। তখনই সে তাঁকে খুন করা সিদ্ধান্ত নেয়। পুলিশ জানিয়েছে ছন্দা জুম্মানকে স্বামীকে খুনের জন্য দেড় লক্ষ টাকা দিয়েছিল। এই ঘটনা ভারতীয় দণ্ড বিধির ৩০২ ধারায় খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ।