গুয়াহাটি: সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টে ২০০২ সালে গোধরায় ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনার অপরাধীদের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করল গুজরাট সরকার। অপরাধের তীব্রতা বিবেচনা করে এই মামলাকে বিরলের মধ্যে বিরলতম মামলা বলে উল্লেখ করেছে এবং বলেছে, এই ক্ষেত্রে কোনও ছাড় দেওয়া যায় না। এদিন ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ গোধরা কাণ্ডের সাত অপরাধীর জামিনের আবেদন শোনেন। গুজরাট রাজ্যের পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি বলেন, “এই সাত অভিযুক্ত দ্বারা সংঘটিত অপরাধটি গুরুতর প্রকৃতির এবং কোন প্রকারের ছাড় দেওয়া যাবে না। বিরল ক্ষেত্রে বিরল।”
তুষার মেহতা জানান, গুজরাট সরকার যে বন্দিদের অকাল মুক্তির নীতি নিয়েছে, সেই নীতির অধীনে এই সাত অপরাধীর অকাল মুক্তি বিবেচনা করাও যাবে না। কারণ, তাদের বিরুদ্ধে টাডা বিধানে মামলা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই মামলায় যারা জামিনের আবেদন করেছেন, তুষার মেহতা এদিন তাদের প্রত্যেকের ভূমিকা আদালতে তুলে ধরেন। কেউ ট্রেনে ঢিল মেরেছিল, কেউ জ্বালানি তেল সংগ্রহ করেছিল। প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই এই রকম বিভিন্ন অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে। তিনি জানান, এই অপরাধীদের জন্য়ই সবরমতী এক্সপ্রেসের এস-৬ কোচে মোট ৫৯ জন কর সেবককে জীবন্ত অবস্থায় পুড়ে মরতে হয়েছিল।
এরপর, সুপ্রিম কোর্ট সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে অপরাধ, সাজা এবং প্রতিটি আসামির বয়স উল্লেখ করে একটি সমন্বিত চার্ট তৈরি করার নির্দেশ দেয়। সেই চার্ট তৈরির পর, তিন সপ্তাহ পরে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বলে জানিয়েছে আদালত। শীর্ষ আদালত আরও জানান, এই একই মামলায় অন্য দুই অভিযুক্তকে জামিন দেওয়া হয়েছে। তারা ১৭ বছরেরও বেশি সময় জেলে কাটানোর কারণে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
২০০২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি গোধরায়, সবরমতি এক্সপ্রেসের এস-৬ কোচে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ওই কোচে অযোধ্যা থেকে আসা করসেবকরা ছিলেন। সেই অগ্নিকাণ্ডে ৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ২০১১ সালে এক নিম্ন আদালত ৩১ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। ১১ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, বাকি ২০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। এই মামলায় অভিযুক্ত আরও ৬৩ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছিল। ২০১৭ সালে, গুজরাট হাইকোর্ট ১১ জনের মৃত্যুদণ্ডকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে রূপান্তরিত করেছিল। বাকি ২০ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা বহাল রেখেছিল। সাজা কমানোর সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেছে গুজরাট রাজ্য সরকার।