নয়া দিল্লি: শুক্রবার, বিজেপিকে কটাক্ষ করলেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি তথা কংগ্রেসের শীর্ষনেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। রাহুলের অভিযোগ, সরকার জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে আপোশ করছে, কারণ চিন নিয়ে মোদী সরকারের নির্দিষ্ট কোনও নীতি নেই। সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনকে উদ্ধৃত করে রাহুলের দাবি, চিন সীমান্ত নিয়ে বিদেশ মন্ত্রক এবং চিফ অব ডিফেন্স স্টাফের ভিন্ন মতামত এই নীতিহীনতাকেই প্রকট করেছে।
বৃহস্পতিবার, সিডিএস বিপিন রাওয়াত (CDS Bipin Rawat) দাবি করেন ভারতীয় ভূখন্ডে প্রবেশ করে লাল ফৌজ নয়া গ্রাম তৈরি করছেন এই জল্পনা ভিত্তিহীন ও অসত্য। যে গ্রাম গুলি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে সেগুলি আগে থেকেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপারে চিনের দিকেই অবস্থিত ছিল। সম্প্রতি মার্কিন প্রতিরক্ষা সংস্থা পেন্টাগনের প্রকাশিত এক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর যে এলাকা নিয়ে ভারত ও চিনের মধ্যে সমস্যা রয়েছে সেখানেই পূর্বদিকে তিব্বত ও অরণাচল প্রদেশের মধ্যে নতুন একটি বড় গ্রাম তৈরি করছে চিন। এই রিপোর্টে পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের জবাব দিয়েছিল ভারত। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছিল, বেআইনিভাবে ভূখণ্ড দখল চিনের যুক্তি বা কোনও রকম দাবিকেই মান্যতা দেয়নি ভারত।
চিন ইস্যু নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে খোঁচা দেওয়ার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (PM Narendra Modi) ৫৬ ইঞ্চির ছাতি নিয়ে কটাক্ষ করে রাহুল টুইটে লেখেন, “অন্যায়ভাবে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে আপোশ করা হচ্ছে, কারণ চিন নিয়ে সরকারের নির্দিষ্ট কোনও নীতি নেই এবং মাননীয় ৫৬ ইঞ্চি ভয় পেয়েছেন।” রাহুল গান্ধী আরও বলেন সরকার যেখানে একের পর এক মিথ্যা কথা বলছে, সেখানে আমাদের জওয়ানরা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সীমান্তে নিরাপত্তা দিচ্ছে, এটাই আমার চিন্তার সব থেকে বড় কারণ।”
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে, মোদী বলেছিলেন যে উন্নয়নের দিক থেকে উত্তর প্রদেশকে গুজরাটে রূপান্তর করতে ৫৬ ইঞ্চির ছাতি লাগে। চিন নিয়ে এই ইস্যুতে সরকারকে আক্রমণ করে, কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম (P Chidambaram) বলেছিলেন যে এখনই সময় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং (Rajanath Singh) তার মন্ত্রালয়ে একটি রেখা এঁকেছেন, এবং সেই রেখা অনুযায়ী সিডিএসকে চলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আগেই বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছিল ভারতীয় ভূখণ্ডে চিনের প্রবেশ নিয়ে তারা কোনও ধরনের যুক্তিই মানতে রাজি নয়। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী চিদাম্বরম আরও বলেন ভারতের এই নীতিহীনতা নিয়ে চিনের কমিউনিস্ট পার্টি (Communist Party China) কংগ্রেসের ২০ তম প্লেনামে রীতিমতো হাসাহাসি হয়েছে। গতমাসে ভারত ও চিনের মধ্যে লাদাখে বিতর্কিত ভূখণ্ড নিয়ে ১৩ তম বার আলোচনা হলেও দীর্ঘ ১৮ মাস ধরে দুদেশের মধ্যে চলে আসা উত্তেজনার কোনও সমাধান হয়নি।