নয়া দিল্লি: পুণ্যযাত্রা হজ। ভাগ্য থাকলে, তবেই হজ যাত্রা করা সম্ভব। কিন্তু এ বছর যেন আরও কঠিন হয়েছে হজ যাত্রা। মক্কায় হজ যাত্রা করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৯২২ জন পুণ্যযাত্রী। এর মধ্যে ৬৮ জনই ভারতীয়। কিন্তু প্রতি বছরই তো হজ যাত্রা হয়, তবে এবার কেন হজ যাত্রায় এত সংখ্যক পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছে?
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, মক্কায় এ বছর হজ করতে গিয়েছেন ২০ লক্ষ পুণ্যার্থী। সংবাদসংসস্থা এএফপি সূত্রে খবর, হজ করতে গিয়ে বিগত কয়েকদিনে ৯২২ জন পুণ্যার্থীর মৃত্য়ু হয়েছে। এরমধ্যে সবথেকে বেশি সংখ্যক পুণ্যার্থী মিশরের। এরপরেই রয়েছে জর্ডান, ইন্দোনেশিয়া ও ভারতের পুণ্যার্থী। এত সংখ্যক পুণ্যার্থীর মৃত্যুর প্রাথমিক কারণই হল অতিরিক্ত তাপমাত্রা। মক্কার এই গরম সহ্য করতে পারছেন না পুণ্যার্থীরা। সেখানে তাপমাত্রার পারদ ৫১ ডিগ্রি পার করেছে। এই তীব্র দাবদাহেই টিকতে পারছেন না পুণ্যার্থীরা।
গ্রীষ্মে যেখানে জর্ডনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ ডিগ্রি থাকে। সেদেশের মরু অঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৬ থেকে ২৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকে। অন্যদিকে, মিশরে গ্রীষ্মকালেও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে থাকে। ইন্দোনেশিয়াতেও সারা বছর গড় তাপমাত্রা ২৭ থেকে ২৮ ডিগ্রির মধ্যেই থাকে। গ্রীষ্মকালে ৩৩ থেকে ৩৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকে। ভারতে গ্রীষ্মকালে বর্তমানে তাপমাত্রা ৪২ থেকে ৪৫ ডিগ্রিতে পৌঁছচ্ছে।
সৌদি আরবে এত সংখ্যক ভারতীয় তথা গোটা বিশ্বের পুণ্যার্থীদের মৃত্যুর পিছনে হঠাৎ এই তাপমাত্রার পরিবর্তনকেই দায়ী করা হচ্ছে। মক্কায় পৌঁছনোর দীর্ঘ যাত্রা, তার মধ্যে গরম, তীব্র দাবদাহের কারণেই পুণ্যার্থীরা অসুস্থ হতে পড়ছেন।
এছাড়া, হজে সরকারি পদ্ধতিতে যেতে অনেক টাকা খরচ হয়। এই খরচ এড়াতে বিপুল সংখ্যক যাত্রী রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই মক্কায় গিয়েছেন। রেজিস্ট্রেশন না থাকায়, সৌদি আরব সরকার প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধা পান না এসব যাত্রী। যাত্রীরা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্থানে থাকার সুবিধা পান না।
বিনা রেজিস্ট্রেশনের হজযাত্রীরা মক্কার যে ক্যাম্পে থাকছেন, তার অবস্থারও অবনতি হয়েছে। একাধিক পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অনেকে খাবার, জলটুকুও পাননি। হিটস্ট্রোকে মানুষ মারা গিয়েছেন।