নয়া দিল্লি: অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন ক্রিকেটার ঋষভ পন্থ (Rishabh Pant)। শুক্রবার ভোরে উত্তরাখণ্ড (Uttarakhand) থেকে দিল্লি ফেরার পথে ভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হন ভারতীয় ক্রিকেট দলের উজ্জ্বল তারকা। রুরকির কাছে রাস্তার ডিভাইডারে ধাক্কা মেরে উল্টে যায় তাঁর গাড়ি (Car Accident)। এরপরে আগুনও ধরে যায় সেই গাড়িতে। ভাগ্যক্রমে দুর্ঘটনার সময়ে রাস্তায় বেশ কযেকজন উপস্থিত ছিলেন, আগুন লাগার ঠিক আগের মুহূর্তে গাড়ি থেকে তাঁরা বের করে আনেন ঋষভকে। এদেরই মধ্যে একজন হলেন সুশীল মান। কোনও তারকা বা ভারতীয় দলের ক্রিকেটার হিসাবে নয়, মানবতার দায়িত্ব পালন করেই তিনি ঋষভকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করেন।
পেশায় বাসচালক সুশীল মান। হরিয়ানা রোডওয়েজের বাস চালান তিনি। ঠিক কী ঘটেছিল, তার বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি জানান, বাকি দিনের মতো শুক্রবারও ভোরবেলায় স্ট্যান্ড থেকে বাস নিয়ে বের হয়েছিলেন। রুরকির রাস্তা ধরে যখন এগোচ্ছিলেন, সেই সময় উল্টোদিকের লেন থেকে একটি মার্সিডিজ এসইউভি গাড়িকে দ্রুতগতিতে এগিয়ে আসতে দেখেন। আচমকাই গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডারে ধাক্কা মারে। সঙ্গে সঙ্গে উল্টে যায় গাড়িটি। একের পর এক পাল্টি খেতে থাকে গাড়িটি।
চোখের সামনে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা দেখে সঙ্গে সঙ্গে বাস থামান সুশীল। বাস থেকে নেমে ছুটে যান দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটির দিকে। চালকের আসনে বসে থাকা যুবককে কোনওমতে টেনে হিচড়ে বের করেন। সেই সময়ও তিনি জানতেন না যে যাকে উদ্ধার করছেন, তিনি ভারতীয় ক্রিকেটার ঋষভ পন্থ।
দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সুশীল বলেন, “গাড়িটি উল্টে যেতেই আমি রাস্তার একধারে বাস দাড় করাই এবং ডিভাইডারের দিকে ছুটে যাই। যেভাবে গাড়িটা উল্টে পাক খাচ্ছিল, আমি ভেবেছিলাম গাড়িটি উল্টে বাসের নীচে ঢুকে যাবে। গাড়ির চালক (ঋষভ পন্থ) জানালা থেকে অর্ধেক বেরিয়ে ছিল। যখন টেনে বের করার চেষ্টা করছিলাম, তখন ও আমায় জানায় যে ও ক্রিকেটার। আমি ক্রিকেট দেখি না, তাই জানতাম না কে ঋষভ পন্থ। কিন্তু আমার বাসে থাকা অন্যান্যরা ওকে চিনতে পারে।”
জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার পরে ঋষভ পন্থ সুশীলকে তাঁর মাকে ফোন করার কথা বলেন। পন্থের ফোন থেকে তাঁর মাকে ফোন করা হলেও, তাঁর ফোন সুইচ অফ ছিল। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি থেকে টাকার ব্যাগও উদ্ধার করেন সুশীল। তাঁর এই সাহসিকতা ও মানবিক কাজের জন্য হরিয়ানা রোডওয়েজের তরফে সুশীলের প্রশংসা করা হয়েছে এবং সম্মাননা জানানো হয়েছে।