নয়া দিল্লি : থমকে গিয়েছে রাজধানীর স্বাস্থ্য পরিষেবা। রোগী পরিষেবা দিতে গিয়ে নাকাল দিল্লির সরকারি হাসপাতালগুলি। সফদারজং হাসপাতাল, রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতাল থেকে শুরু করে জিবি পান্ত একের পর এক হাসপাতালে ছড়িয়ে পড়েছে চিকিৎসকদের বিক্ষোভের (Doctors Protest in Delhi) আঁচ। বিক্ষোভ ছড়িয়েছে দিল্লির এইমসেও (Delhi AIIMS)। নিজেদের দাবি আদায়ের জন্য রাজপথের দখল নিয়েছেন চিকিৎসকরা।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের শেষে নিট পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উদ্ভুত করোনা পরিস্থিতির কারণে, ডিসেম্বরে সেই পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে নিট পরীক্ষা নেওয়া হয়। কিন্তু তার কাউন্সেলিং এখনও হয়নি। এই পরিস্থিতিতে ৪২ হাজার নতুন চিকিৎসকের দ্রুত কাউন্সেলিংয়ের দাবিতে রাজধানীর রাজপথের দখল নিয়েছেন দিল্লির একাধিক সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
আন্দোলনরত চিকিৎসকদের বক্তব্য, নিটের কাউন্সেলিং না হওয়ার কারণে সমস্যায় পড়ছেন হাসপাতালগুলির রেসিডেন্ট চিকিৎসকরা। চিকিৎসক কম থাকায়, তাঁদের এখন ৪৮ ঘণ্টা ধরে কাজ করতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন চিকিৎসকদের কাউন্সেলিং পর্ব একবার মিটে গেলে তাঁদের ডিউটি স্বাভাবিক হবে। সেই কারণেই এবার নিজেদের দাবি আদায়ের জন্য পথে নেমেছেন রেসিডেন্ট চিকিৎসকরা।
আজ বিকেলে দক্ষিণ দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে আবাসিক চিকিৎসকরা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত মিছিল করার কথা ছিল। কিন্তু পুলিশকর্মী তাদের আটকে দেন মিছিল শুরুর আগেই। বিক্ষুব্ধ চিকিৎসকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। সোমবার রাতেও পুলিশকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ জড়িয়ে পড়েছিলেন আবাসিক চিকিৎসকরা। দিল্লির সরোজিনি থানার বাইরে ঘেরাও করেছিলেন চিকিৎসকরা। এবার মঙ্গলবার ফের একবার পুলিশি বাধা। চিকিৎসকদের উপর পুলিশি ‘জুলুমের’ প্রতিবাদে এবার আন্দোলনে সামিল হয়েছেন দিল্লি এইমসের চিকিৎসকরাও।
উল্লেখ্য, নিট পরীক্ষার আওতায় মেডিকেল কলেজগুলিতে বিলম্বিত ভর্তির বিষয়টি বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। সেই কারণে, ভর্তির জন্য কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া আটকে রয়েছে।
আন্দোলনরত আবাসিক চিকিৎসকদের বক্তব্য, নিট পরীক্ষার পরে নতুন চিকিৎসকদের কাউন্সেলিংয়ে দেরি কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। দ্রুত সমস্যার সমাধান করা না হলে রাজধানীর চিকিৎসা পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন চিকিৎসকরা। এদিকে প্রতিবাদী চিকিৎসকরা যাতে হাসপাতাল চত্বর থেকে বেরোতে না পারেন, তার জন্য পুলিশ দিল্লি এইমস সংলগ্ন সফদরজং হাসপাতালের সমস্ত গেট বন্ধ করে দিয়েছে।
রাজধানীতে ওমিক্রন পরিস্থিতি যথেষ্টই উদ্বেগজনক। এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসকদের বিক্ষোভের জেরে ওমিক্রন আক্রান্তদের চিকিৎসা হয়, এমন একটি হাসপাতাল সহ দিল্লির বড় হাসপাতালগুলির চিকিৎসা পরিষেবার উপর ভীষণভাবে প্রভাব পড়ছে। দিল্লির লেডি হার্ডিঞ্জ মেডিকেল কলেজ, লোক নায়ক জয় প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতাল, ডাঃ রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতাল, ডাঃ বাবা সাহেব আম্বেদকর হাসপাতাল এবং গোবিন্দ বল্লভ পন্ত ইনস্টিটিউটের স্বাস্থ্য পরিষেবা চালু রাখতে নাকাল হতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।