কর্নাটক : শিক্ষাঙ্গনে হিজাব (Hijab) পরে প্রবেশের অনুমতি মেলেনি। বাধা দেওয়া হয় কলেজ পড়ুয়াদের। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে যে মামলা, শুক্রবার ছিল সেই মামলার শুনানির ষষ্ঠ দিন। গত কয়েকদিন ধরে মামলাকারী ও কর্নাটক (Karnataka) সরকারের সওয়াল জবাব চলছে আদালতে। জাতীয় রাজনীতির ময়দান পর্যন্ত পৌঁছেছে সেই বিতর্ক। হিজাব পরা কতটা জরুরি? হিজাব পরতে বাধা দিলে কি সংবিধান লঙ্ঘন করা হয়? এমন সব প্রশ্ন সামনে আসতে শুরু করেছে। আর শুক্রবার আদালতে কর্নাটক সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হল, হিজাব পরা ইসলামের জরুরি কোনও রীতি নয়। এ দিন এমনটাই বলেছেন কর্নাটকের অ্যাডভোকেট জেনারেল প্রভুলিঙ্গ নাভাদগি।
ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলা শুরু হয়। সাংবিধানিক প্রশ্ন থাকায় বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠানো হয় সেই মামলা। কর্নাটক হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি ঋতু রাজ অবস্তি, বিচারপতি কৃষ্ণা এস দীক্ষিত ও বিচারপতি জেএম গাজির বেঞ্চে চলছে সেই শুনানি।
এ দিন আদালতে অ্যাডভোকেট জেনারেল প্রভুলিঙ্গ নাভাদগি জানান, সরকারের অবস্থান হল, হিজাব পরা ইসলাম ধর্মে জরুরি নয়। পাশাপাশি কর্নাটক সরকারের দাবি, হিজাব পরতে বাধা দিলে সংবিধানের ১৯ তম অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করা হয় না। ১৯ তম অনুচ্ছেদ মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে।
এ ছাড়া, বিতর্কে সূত্রপাত হওয়ার পর কর্নাটক সরকার একটি নির্দেশিকায় জানিয়েছিল, শিক্ষা ক্ষেত্রে হিজাব বা গেরুয়া উত্তরীয় পরা যাবে না। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন পড়ুয়া। এ দিন সেই বিষয়েও জবাব দেন অ্যাডভোকেট জেনারেল। তাঁর দাবি, ধর্মীয় পোশাক পরা সংবিধানের ২৫ তম অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করছে। তাঁর দাবি, আইন মেনই ওই নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছিল, এতে কোনও সমস্যা নেই।
এর আগে মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী দেবদত্ত কামাথ উদাহরণ হিসেবে রুদ্রাক্ষের কথা বলেছিলেন। তিনি উল্লেখ করেছিলেন, একসময় তিনি রুদ্রাক্ষ পরতেন, কিন্তু সেটা ধর্মের কারণে নয়, বিশ্বাসের জন্য। এ দিন সেই প্রসঙ্গ তুলে অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, রুদ্রাক্ষ পরাটা কোনও বিশ্বাস নয়, বিশ্বাসের প্রকাশ।
কোরানে হিজাবের কথা বলা আছে কি না, সেই বিষয়টাও আগেই শুনানিতে সামনে এসেছে। তৃতীয় দিনের শুনানিতে মামলাকারীর পক্ষের আদালতে আইনজীবী হেগড়ে সংবিধানের ২৫ নম্বর অনুচ্ছেদের কথা উল্লেখ করেছিলেন, যেখানে প্রত্যেক ধর্ম পালনের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া আইনজীবী কামাথ ইসলাম ধর্মগ্রন্থ কোরানের উল্লেখ করে বলেছিলেন, ‘কোরান অনুসারে একজন মহিলার কর্তব্য হিজাব পরা।’
আসলে বিতর্কের শুরু হয় মাস খানেক আগে। কর্নাটকের উদুপির একটি কলেজে হিজাব পরায় ছয় পড়ুয়াকে ক্লাসে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এরপর সেই জেলার পরপর চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একই ভাবে হিজাব পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ দাবি করে, হিজাব ছাড়া কলেজে আসতে হবে। এরপরই শুরু হয় বিতর্ক।
আরও পড়ুন : Ahmedabad Serial Blast Case: আহমেদাবাদ ধারাবাহিক বিস্ফোরণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত ৪৯ জন, ফাঁসির সাজা ৩৮ জনকে