চেন্নাই: ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম বিদায় নিলেও, বৃষ্টি ছাড়ছে না তামিলনাড়ুকে। রবিবার থেকে দক্ষিণ তামিলনাড়ুর তিরুনেলভেলি, তুতিকোরিন, টেনকাসি এবং কন্যাকুমারী জেলায় অতি ভারী বৃষ্টিতে বন্যা দেখা দিয়েছে। বৃষ্টিতে ব্যাহত প্রায় গোটা রাজ্যের স্বাভাবিক জীবনযাপন। কতটা বৃষ্টি হয়েছে? এর জন্য একটা উদাহরণই যথেষ্ট। তুতিকোরিন জেলার তিরুচেন্দুরে মাত্র ১৫ ঘন্টায় ৬০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তিরুনেলভেলি জেলার পালায়ামকোট্টাইয়ে ২৬০ মিলিমিটার, কন্যাকুমারীতে ১৭৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সোমবার সকালেও মুষলধারে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এর জন্য, ক্ষতিগ্রস্ত ওইচার জেলায় এদিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। স্কুল, কলেজ, ব্যাঙ্ক, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ থাকবে।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, এদিনও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কমোরিন এলাকায় আবার একটি ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে পারে। এদিকে, অতি বৃষ্টির কারণে, পাপানাসাম, পেরুঞ্জনি এবং পেচুপারাই বাঁধ থেকে জল ছাড়তে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। ফলে, দক্ষিণের অধিকাংশ জেলাই এখন হাঁটুজল বা কোমর-জলের নীচে। জেলাশাসকদের বাঁধগুলিতে জলের যথাযথ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন। ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযানের জন্য তিনি বেশ কয়েকজন মন্ত্রী এবং সিনিয়র আমলাদের মোতায়েন করেছেন। তাদের প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলি পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। জেলাশাসকদের মুখ্যমন্ত্রী উপদ্রুত এলাকাগুলিতে ত্রাণ কেন্দ্র এবং নৌকা প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
তিরুনেলভেলি এবং তুতিকোরিন জেলায় ইতিমধ্য়েই পৌঁছে গিয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দুটি দল। সঙ্গে রয়েছে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলিতে ৪ হাজার পুলিশ সদস্যও মোতায়েন করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের এই দুর্যোগের মধ্যে সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
চলতি মাসের ৩ এবং ৪ তারিখে তামিলনাড়ু এবং অ্দ্র উপকূলের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছিল ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম। সেই ঘূীর্ণিঝড়ের প্রভাবে, প্রবল বৃষ্টিপাতের সম্মুখীন হয়েছিল প্রায় গোটা তামিলনাড়ু। বন্যা দেখা দিয়েছিল রাজধানী চেন্নাই এবং পার্শ্ববর্তী তিনটি জেলায়। প্রচুর গাছ এবং বিদ্যুতের খুঁটি উপরে গিয়েছিল। মৃত্যু হয়েছিল বেশ কয়েকজনের। তারপর দুই সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জনজীবন ফিরে এসেছে মিগজাউমে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলি। এবার দক্ষিণের জেলাগুলি বন্যার কবলে পড়ল। এই বন্যার জেরে তুতিকোরিনগামী বেশ কয়েকটি বিমানকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেকগুলি বাতিলও করতে হয়েছে। তিরুনেলভেলি থেকে আসা বন্দে ভারত ট্রেন-সহ মোট সতেরোটি ট্রেনও আংশিকভাবে বা পুরোপুরি বাতিল করা হয়েছে।