আহমেদাবাদ: জীবনে নানা প্রতিবন্ধকতা ছিল, কিন্তু সবকিছুই উতরে গিয়েছেন তিনি। ২২ বছরের যুবক বারাইয়া হবু চিকিৎসক। ভাবনগরের মেডিক্যাল কলেজে শুরু করেছেন তাঁর ইন্টার্নশিপ। তবে আর বাকি পাঁচজন চিকিৎসকের থেকে তিনি আলাদা। এই ‘আলাদা’ হওয়ার জন্য নানা বাধা, সমালোচনার মুখে পড়েছেন, তবে কোনও কিছুই দমিয়ে রাখতে পারেনি। বিশ্বের সবথেকে কম উচ্চতার চিকিৎসক হতে চলেছেন তিনি।
বাকি পাঁচজনের থেকে আলাদা গণেশ বারাইয়া, কারণ তাঁর উচ্চতা মাত্র ৩ ফিট। ওজন মাত্র ১৮ কেজি। শারীরিক গড়ন আলাদা হওয়ায় তাঁকে ছোটবেলা থেকেই কটাক্ষের শিকার হতে হয়েছে, কিন্তু মনের জোর ভাঙতে পারেননি কেউ। খর্বকায় দেহ হওয়ায় ৭২ শতাংশ অক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই বারাইয়ার স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হওয়ার। এই স্বপ্নপূরণ করতে সাহস জুড়িয়েছে তাঁর মা-ও।
গুজরাটের ভাবনগরের গোরকি গ্রামের বাসিন্দা বারাইয়া। তাঁর পরিবারে বারাইয়াই প্রথম, যে কলেজের গণ্ডি পার করেছে। বারাইয়া বলেন, “ক্লিনিকাল ডিউটির সময় আমি বহুমূল্য অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। সেই সময়ই করোনা সংক্রমণ শুরু হয়েছিল। কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও আমরা কাজ করেছি।”
কী কী প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হয়েছিল বারাইয়াকে? তিনি জানিয়েছেন, ২০১৮ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে ৮৭ শতাংশ নম্বর পেয়েছিলাম, নিটেও ২৩৩ র্যাঙ্ক করি। কিন্তু এমবিবিএস কোর্সেই ভর্তি হতে দেওয়া হচ্ছিল না শারীরিক অক্ষমতার জন্য। বারাইয়া ও আরও দুই শারীরিক অক্ষম পড়ুয়াকে ভর্তিতে বাধা দেওয়া হয়। কিন্তু হাল ছাড়তে নারাজ বারাইয়াও। স্কুলের প্রিন্সিপাল ও ট্রাস্টির সাহায্য নিয়েই আইনী লড়াইয়ে নামেন। মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট অবধি।
শীর্ষ আদালতের তরফে বারাইয়া ও বাকি দুই পড়ুয়ার এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির সপক্ষেই রায় দেওয়া হয়। বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের অধিকার আইনের উল্লেখ করে গুজরাট সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয় এই পড়ুয়াদের ভর্তি নেওয়ার।
আগামিদিনে ডঃ গণেশ বারাইয়া ডার্মাটোলজিতে স্পেশালাইজেশন করতে চান। কোর্স শেষ হলে তিনিই বিশ্বের সবথেকে কম উচ্চতার চিকিৎসক হবেন।