সিমলা: ভয়াবহ বৃষ্টিতে ফের বিপর্যস্ত হিমাচল প্রদেশ। বুধবার রাত থেকে এই পাহাড়ি রাজ্যের বিভিন্ন অংশে অতিবৃষ্টিতে হড়পা বান সৃষ্টি হয়েছে এবং একাধিক জায়গায় ধসও নেমেছে। ধসের কবলে পড়ে বৃহস্পতিবার সকালে দুজনের মৃত্যুও হয়েছে। ধস ও বন্যার দাপটে বহু দোকান ও হসতবাড়ির ব্যাপক ক্ষতিও হয়েছে। কুলু জেলায় হড়পা বানে ভেসে গিয়েছে বেশ কয়েকটি দোকান। অতি বৃষ্টির কারণে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬৯টি সংযোগ সড়ক ও একটি জাতীয় সড়কও অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। মান্ডির সুন্দর নগর আবহাওয়া অফিসে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, ১৪১.৮ মিলিমিটার! মৃতদের নিকটাত্মীয়দের প্রত্যেককে ১৫,০০০ টাকা করে এবং ক্ষতিগ্রস্থ দোকানদারদের ৫,০০০ টাকা করে তাৎক্ষণিক সহায়তা দিয়েছে প্রশাসন।
রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের ডিরেক্টর সুদেশ মোক্তা জানিয়েছেন, মৃত দুই বাসিন্দার নাম ৫৫ বছরের চাভেলু দেবী এবং ১৭ বছরের কৃত্তিকা। সম্পর্কে তাঁরা শাশুড়ি ও পুত্রবধু। কৃত্তিকা একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। কুলু জেলার আন্নি মহকুমার খাদেল গ্রামে তাদের বাড়ি ছিল। এদিন সকাল ৯টা নাগাদ ধস নামে। বড় বড় পাথরের নিচে চাপা পড়ে তাঁদের বাড়ি। ভেঙে যায় বাড়ির দেওয়াল, ভিতরে আটকা পড়ে যান তাঁরা। সেই সময় তাঁরা ঘুমোচ্ছিলেন। দ্রুত গ্রামবাসীরাই ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ শুরু করেন। ঘণ্টা দুই পর তাঁদের ধ্বংসস্তূপের তলা থেকে বের করে আনা সম্ভব হয়। স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
ওই ঘটনার আগে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ আন্নি মহকুমারই দেউঠি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মেঘ ভাঙা বৃষ্টির জেরে হড়পা বান সৃষ্টি হয়। যার জেরে অন্তত ১০টি দোকান এবং ৩টি যানবাহন ভেসে গিয়েছে। দেউঠির একটি পুরোনো বাসস্ট্যান্ড এবং একটি পঞ্চায়েত ভবনও ভেসে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই। আন্নির গোগড়া ও দেউঠি গ্রামের অনেক বাড়িতেও বন্যার জল ঢুকে যায়। গোগড়া গ্রামেরও বেশ কিছু বাড়িঘর ও যানবাহনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই জেলা প্রশাসন উদ্ধার কাজে লেগে রয়েছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজস্ব দফতরের আধিকারিকদের ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। এসডিএম নরেশ ভার্মা জানিয়েছেন, তিনি নিজে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শন করছেন। এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে। মৃতদের নিকটাআত্মীয়দের স্বজনদের প্রত্যেককে 15,000 রুপি এবং ক্ষতিগ্রস্থ দশ দোকানদারকে 5,000 টাকা করে তাৎক্ষণিক ত্রাণ দেওয়া হয়েছে।
An old shop structure in #HimachalPradesh‘s Anni was captured on camera getting washed away after a reported cloud burst led to incessant rains.
As per report, over 10 shops were damaged and a few vehicles were also washed away. pic.twitter.com/frQrIH6Rtb— Mir Arshid (@MirArshidHussa5) August 11, 2022
লাহৌল-স্পিতি জেলায়, লাহৌল মহকুমার লোটে এবং তোজিং নালাতেও এদিন আরও একটি হড়পা বানের জেরে বেশ কিছু পাথর পড়ে ৩ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে গিয়েছে। সিমলা জেলার চোপাল মহকুমার দিয়ানদালি নালাতেও হড়বা বান আসে। সেখানে তিনটি গাড়ি ও একটি পিকআপ ভ্যান ভেসে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে মান্ডি জেলার পান্ডোহের কাছে সাত মাইলে এলাকায় ভূমিধসের কারণে ২১ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্পূর্ণরূপে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। বিকল্প রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। এদিন চাম্বা জেলার ভারমৌর মহকুমাতেও মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে বেশ কয়েকটি দোকান ভেসে গিয়েছে।
Subscribe?TELEGRAM: https://t.co/Uw6hADCvaz
Due to heavy rains, some rivers and streams burst their banks in Ani (Kullu), in the Indian state of Himachal Pradesh#Himachal #Uttarakhand #JammuKashmir #हिमाचलप्रदेश #flood #flooding #floods #flashflood #HeavyRains #tormenta pic.twitter.com/tGZCB4h0Zz— BRAVE SPIRIT (@Brave_spirit81) August 11, 2022
আবহাওয়া বিভাগের পক্ষ থেকে আগামী কয়েক দিনে চাম্বা, কাংড়া, মান্ডি, সিমলা, সোলান এবং সিরমাউর জেলায় ভারী বৃষ্টির জন্য সতর্কতা জারি করেছে। এই জেলাগুলির জন্য কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে, বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ। কিন্নর, কুলু, বিলাসপুর, উনা এবং হামিরপুর জেলার জন্য জারি করা হয়েছে হলুদ সতর্কতা। নিম্নচাপ এবং মৌসুমি বায়ুর জোড়া প্রভাবে আগামী ৪-৫ দিনের হিমাচল প্রদেশের নিম্ন ও মধ্য পার্বত্য জেলাগুলিতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।