নয়া দিল্লি: সোমবার (৩ অক্টোবর) মহাষ্টমীর দিনে, ভারতীয় বায়ুসেনায় অন্তর্ভুক্ত হল ‘প্রচণ্ড’, অর্থাৎ, দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত লাইট কমব্যাট হেলিকপ্টারের প্রথম বহর। এই নয়া অন্তর্ভুক্তি উপলক্ষ্যে রাজস্থানের যোধপুরে বায়ুসেনার পক্ষ থেকে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, সিডিএস জেনারেল অনিল চৌহান এবং আইএএফ প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল ভি আর চৌধুরী। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জানান, কার্গিল যুদ্ধের সময়ই ভারতীয় বায়ুসেনার আক্রমণকারী হেলিকপ্টারের প্রয়োজন অনুভব করেছিল। এই অন্তর্ভুক্তিকে তিনি ভারতের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে এক মাইলফলক বলেও দাবি করেছেন।
রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থা হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড বা হ্যাল এই প্রচণ্ড নামে এই এলসিএইচগুলি তৈরি করেছে। ৫.৮ টন ওজনের এই চপারগুলিতে দুটি করে ইঞ্জিন রয়েছে। কপ্টারগুলিতে এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল, ২০ মিমি টারেট গান, রকেট সিস্টেম এবং অন্যান্য অস্ত্র দেওয়া হয়েছে। যোধপুর এয়ার ফোর্স স্টেশনে এর প্রথম বহরটিতে মোট চারটি এলসিএইচ থাকছে। সুউচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে শত্রু ঘাঁটি, ট্যাঙ্ক, বাঙ্কার, ড্রোন এবং শত্রুপক্ষের অন্যান্য সম্পদে আঘাত করার জন্য এলসিএইচগুলি অত্যন্ত কার্যকরি ভূমিকা নেবে বলে আশা করছেন সামরিক কর্মকর্তারা। গত মার্চ মাসে, সরকার ৩,৮৮৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫টি দেশীয় এলসিএইচ ক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছিল।
সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, এদিন প্রচণ্ড বহরের অন্তর্ভুক্তির অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার সময় রাজনাথ সিং বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে আক্রমণকারী হেলিকপ্টারের প্রয়োজন ছিল। ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধের সময় এর প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়েছিল। দুই দশকের গবেষণা ও উন্নয়নের ফল এই এলসিএইচ। ভারতীয় বায়ুসেনায় এর অন্তর্ভুক্তি প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। ”
রুক্ষ ভূখণ্ডে হেলিকপ্টারগুলির সক্ষমতার কথাও আলাদাভাবে তুলে ধরেন রাজনাথ সিং। এই এলসিএইচগুলি বায়ুসেনার পাশপাশি সেনাবাহিনীর জন্যও সমান কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে বলে দাবি করেছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। তিনি বলেন, “শত্রুকে ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের গোলাবারুদ দ্রুত কোনও স্থানে পৌঁছে দিতে সক্ষম এলসিএইচ। এলসিএইচ বিভিন্ন ভূখণ্ডে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর চাহিদা পূরণ করে এবং এটি আমাদের সেনাবাহিনী এবং বিমানবাহিনী, উভয়ের জন্যই একটি আদর্শ প্ল্যাটফর্ম।” দেশীয়ভাবে তৈরি লাইট কমব্যাট হেলিকপ্টারের অন্তর্ভুক্তি আমাদের সক্ষমতা বাড়াবে এবং প্রতিরক্ষা উত্পাদনকে উৎসাহ দেবে। এলসিএইচ অন্তর্ভুক্তির জন্য নবরাত্রিই সেরা সময়।”